সাংবাদিক হত্যা মামলার প্রধান আসামি হলেন জেলা আ. লীগের সদস্য

প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারি ২৩ । ১৫:০৫ | আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২৩ । ১৫:১৫

সিরাজগঞ্জ ও শাহজাদপুর প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মিরুভ ছবি: সমকাল

সাংবাদিক শিমুল হত্যা মামলার প্রধান আসামি ও সাবেক মেয়র হালিমুল হক মিরু সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য হয়েছেন। এতে ক্ষুব্ধ শিমুলের পরিবার ও গণমাধ্যমকর্মীরা। 

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন প্রক্রিয়া বিলম্ব হওয়ায় বিচার প্রক্রিয়া ছয় বছর ধরে ঝুলে রয়েছে। এরই মধ্যে কমিটিতে পদ পাওয়ায় নিহত সাংবাদিক শিমুলের স্ত্রী বেগম নুরুন্নাহারসহ তার স্বজনরা উদ্বেগ জানিয়েছেন। 

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি (রোববার) সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট কেএম হাসান আলীকে

সভাপতি ও আব্দুস সামাদ তালুকদারকে সাধারণ সম্পাদক করে আগামী তিন বছরের জন্য ৭১ সদস্যের এ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। কমিটিতে সদস্য পদ পেয়েছেন সাবেক মেয়র হালিমুল হক মিরু। 

এর আগে, ২০২২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি কেএম হোসেন আলী হাসানকে সভাপতি ও আব্দুস সামাদ তালুকদারকে সাধারণ সম্পাদক আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। পরে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কার্য নির্বাহী খসরা কমিটি অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রে পাঠান। কমিটিতে মিরু সদস্য পদ পাওয়ায় বিস্মিত হন গণমাধ্যমকর্মীরা। 

অভিযোগ উঠেছে, সাংবাদিক শিমুল হত্যার মামলা থেকে রক্ষা করতে জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের তদবিরে মিরুকে কমিটিতে পদায়ন করা হয়েছে।

২০০৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি শাহজাদপুরে আওয়ামী লীগের দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় মেয়র মিরুর ছোড়া গুলিতে আহত হন সাংবাদিক শিমুল। আহত অবস্থান তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে পরের দিন ঢাকায় নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। মিরু সেসময় শাহাজাদপুর পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। 

শিমুল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারের পর পরই কেন্দ্র থেকে মিরুকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। মেয়র পদ থেকেও তাকে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

শাহজাদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি বিমল কুমার কুণ্ডু বলেন, ‘গত ছয় বছরেও হত্যা মামলার কার্যক্রম এগোয়নি। এর মধ্যে মামলার প্রধান আসামি মিরু জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হওয়ায় আমরা মর্মাহত।’ 

নিহত সাংবাদিক শিমুলের স্ত্রী বেগম নুরুন্নাহার বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের ছয় বছরে বিচার না পেয়ে আমরা হতাশ। মিরুসহ আসামিরা জামিনে মুক্ত হয়ে মামলায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন। আবার প্রধান আসামি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হয়েছেন। এতে প্রভাব আরও বাড়বে।’

এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট কেএম হোসেন আলী হাসান মঙ্গলবার দুপুরে সমকালকে বলেন, ‘সাংবাদিক শিমুল হত্যাকাণ্ডের মামলায় মিরু আসামি হলেও বিচার প্রক্রিয়া এখনও শেষ হয়নি বা তিনি দোষী সাব্যস্ত হননি। ছয় বছর আগে তাকে কেন্দ্র থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হলেও স্থায়ী বহিষ্কারও হয়নি। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অভিযুক্ত না হলে তিনি পদ পাবেন না

এ কোনো বিধানও নেই। তাই কার্য নির্বাহী কমিটির খসরা তালিকায় তাকে সদস্য করে কেন্দ্রে পাঠানো হয়। বিচারে অভিযুক্ত হলে তাকে বাদ দেওয়া হবে।’

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com