
পুরান ঢাকায় বাসার ভেতর তরুণীকে শ্বাসরোধে হত্যা
প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২৩ । ২১:৫৭ | আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২৩ । ২১:৫৭
সমকাল প্রতিবেদক

পুরান ঢাকার বংশালে বাসার ভেতর সোনিয়া আক্তার (২৪) নামে এক তরুণীকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড হাসপাতাল) মর্গে পাঠায় পুলিশ। তবে হত্যার কারণ সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।
বংশাল থানার ওসি মজিবুর রহমান সমকালকে বলেন, কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে মৃতের পরিবারের সদস্যদের আচরণ রহস্যজনক ও বক্তব্য অসংলগ্ন মনে হয়েছে। এ কারণে ঘটনাটি নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। হত্যার সম্ভাব্য সবগুলো কারণ মাথায় রেখেই তদন্ত চলছে। বিভিন্ন কারণে বাবাসহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মেয়েটির সম্পর্ক ভালো ছিল না।
পুলিশ ও স্বজনের সূত্রে জানা যায়, বংশালের আবুল খয়রাত সড়কের ১৩ নম্বর ভবনের পঞ্চম তলায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন সোনিয়া। তিনি টেইলার্সে সেলাইয়ের কাজ করতেন। পাশাপাশি বাসায় প্যাকেজিংয়ের কাজও করতেন। তাঁর বাবা শাহজাহান মিয়া ভ্যানে পেঁয়াজ-রসুন বিক্রি করেন। বৃহস্পতিবার সকালে মেয়েটির বাবা-মা-ভাই-বোন সবাই নিজের কাজে যান। বাসায় একা ছিলেন সোনিয়া।
তাঁর ভাই আদনান সাকিলের ভাষ্য অনুযায়ী, দুপুরে বাসায় ফিরে তিনি ঘরের ভেতর বোনের হাত-পা-মুখ বাঁধা লাশ দেখতে পান। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় মৃতের মা জুলেখা বেগম বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছেন।
পুলিশ জানায়, প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে সাত-আট মাস আগে কেরানীগঞ্জের মশিউর রহমানের সঙ্গে বিয়ে হয় সোনিয়ার। তবে তিনি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে শ্বশুরবাড়িতে যাননি। এই বিয়েতে মত ছিল না তাঁর পরিবারের। বিশেষ করে বাবা শাহজাহান খুবই ক্ষুব্ধ ছিলেন। তিনি জামাতাকে কিছুতেই সহ্য করতে পারেন না। পাশাপাশি কিছুদিন আগে সোনিয়ার এক ভাই মারা যান। তখন সোনিয়া অন্যত্র ছিলেন এবং কোনো কারণে লাশ দেখতে আসেননি। এ নিয়েও তার ওপর রেগে ছিলেন বাবা।
তদন্তসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, মেয়ের লাশ পাওয়ার পর বাবাসহ পরিবারের সদস্যদের ভূমিকা ছিল রহস্যজনক। লাশ ঘরে রেখে তারা সবাই বের হয়ে কোথাও যাচ্ছিলেন। পরে প্রতিবেশীরা তাদের আটকান। আবার থানায় যাওয়ার আগে জামা বদলান শাহজাহান। ওই পরিস্থিতিতে এমন করাটা অস্বাভাবিক মনে হয়েছে। তাদের বাসায় মনির নামে একজন সাবলেট থাকেন। প্রথমদিকে তার ওপর দোষ বর্তানোর একটা চেষ্টা ছিল। তবে পরে দেখা গেল, তিনি ঘটনার সময় বাসায় ছিলেন না। এ ছাড়া বাসার ভেতর কিছু জিনিসপত্র এলোমেলো করা ছিল। ঘটনাটিকে চুরি-ডাকাতির দিকে ইঙ্গিত দিতে চেয়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু তেমন কিছুই চুরি হয়নি। মেয়েটিকে ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির চেষ্টাও করা হয়নি। সবমিলিয়ে অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলছে না। এ ব্যাপারে পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com