
সাততলা থেকে পড়ে প্যানেল মেয়রের স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু
প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২৩ । ২১:২৩ | আপডেট: ০৫ মার্চ ২৩ । ২১:২৩
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রতীকী ছবি
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের তিন নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র শাহজালাল বাদলের প্রথম স্ত্রী সাদিয়া আক্তার নিঝু সাততলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে মারা গেছেন। রোববার দুপুরে নগরীর প্রাণকেন্দ্র চাষাঢ়া বালুরমাঠ এলাকায় অবস্থিত রাজু প্যালেস ভবনে এ ঘটনা ঘটে। গত বছর নিঝু তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে একটি সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন।
নিহতের মা ঝর্না হায়দার বলেছেন, ‘আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না। আসলে কী হয়েছে পুলিশ তা তদন্ত করে বের করুক।’ পুলিশ বলছে, এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কাউন্সিলর বাদল সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনের ভাতিজা।
ভবনটির নিচতলায় অবস্থিত মেলা ফুড জোন নামের রেস্তোরাঁর মালিক মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভবনের পেছনের দিকে ভারী কিছু পড়ে যাওয়ার শব্দ পেয়ে সেখানে গেলে সাদিয়া নিঝুকে পড়ে থাকতে দেখি। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়।’
নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, ‘দুপুর পৌনে ১টার দিকে হাসপাতালে ওই নারীকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। তাঁর মরদেহ বর্তমানে মর্গে আছে। পুলিশে খবর দেওয়া হয়েছে।’
নিহত সাদিয়া নিঝুমের মা ঝর্না হায়দার জানান, ‘নিঝু ডাক্তারের পরামর্শে ডায়েট কন্ট্রোল করত ও প্রতিদিন দুপুরে ছাদে গিয়ে হাঁটাহাঁটি করত। রোববার দুপুরের দিকে (নিঝু) আমার সঙ্গে কথাবার্তা বলে ছাদে হাঁটতে যায়। আর আমি ওই ভবনের তৃতীয় তলায় আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিঝু বিউটি পার্লারে যাই। কিছুক্ষণ পর হৈচৈয়ের শব্দ পেয়ে নিচে এসে দেখি নিঝু রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।’
২০১১ সালে সাদিয়া নিঝুকে বিয়ে করেন কাউন্সিলর বাদল। তাঁদের ঘরে একটি ১১ বছরের ছেলে রয়েছে। তার নাম আনুশ আশরাফ। দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকেই নিঝু তাঁর মায়ের সঙ্গে বালুর মাঠের ছয়তলার বাসায় থাকতেন।
গত বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি নিঝুর স্বামী বাদল তাঁদের সংসার ও ছেলের ভরণপোষণ দেন না বলে অভিযোগ তুলে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। ওই সময় তিনি বলেন, বাদল আরেকটি বিয়ে করার পর থেকেই তাঁর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছেন। একদিন রাতে ছেলেসহ তাঁকে ঘর থেকে বের করে দেন। পরে তাঁরা বাবার বাড়ি চলে আসেন।
এ সম্পর্কে স্বামী শাহজালাল বাদল টেলিফোনে বলেন, ‘আমাদের মধ্যে বর্তমানে কোনো মনোমালিন্য নেই। বছরের বেশীর ভাগ সময় সে আমার কাছেই থাকে। আমার ছেলে অনুশ ক্যামব্রিয়ান স্কুলে পড়ে । তাই স্কুল কাছাকাছি হওয়ায় সে তার মায়ের সাথে বসবাস করছে।’
নিহতের ফুপাতো ভাই সোহেল জানান, তাঁদের কোনো শত্রু নেই। এটি নিছক দুর্ঘটনা নাকি হত্যা– পুলিশ তদন্ত করে তা খুঁজে বের করবে। স্বামী বাদলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক বর্তমানে ভালো। বাদল কয়েকদিন পরপরই ছেলেকে দেখতে এই বাসায় আসত।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com