
সন্তানকে পড়াশোনায় মনোযোগী করতে যা করবেন
প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২৩ । ১২:২৯ | আপডেট: ১৫ মার্চ ২৩ । ১২:৩৮
অনলাইন ডেস্ক

অনেকে শিশুই পড়াশোনায় অমনোযোগী। তাদের নিয়ে বাবা-মায়েরা প্রায়ই দুশ্চিন্তায় ভোগেন। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুর বয়স কত, তার উপরে নির্ভর করবে তার মনোযোগ। ৪-৫ বছরের শিশুর ও ৮-১০ বছরের শিশুর মনোযোগ এক হবে না। মনোযোগ বাড়াতে হবে অভ্যাসের মাধ্যমে। তাদের মতে, ছোট থেকে কিছু অভ্যাস তৈরি করে দিলে অমনোযোগিতা অনেকটাই কমানো যায়।
শিশুদের পড়ালেখার প্রতি মনোযোগের সমস্যা কাটাতে কয়েকটি বিষয়ের উপর জোর দিতে পারেন। যেমন-
ঘাম ঝরুক: প্রতিদিন অন্তত এক ঘণ্টা ছোটাছুটি করে খেলার জন্য বরাদ্দ করতে হবে। এতে ঘাম ঝরবে। ফলে শরীরে এনডরফিন বেশি পরিমাণে নিঃসৃত হতে থাকে। এর পরেই বাচ্চাকে পড়াতে বসালে প্রথম ঘণ্টাখানেকের পড়ায় তার পুরো মনোযোগ থাকবে।
ইনডোর গেমস: এখন প্রচুর ইনডোর গেমস বই পাওয়া যায়, যা বাচ্চার কগনিটিভ স্কিল বাড়ায়। যেমন- নানা ধরনের অ্যাকটিভিটি বুক, বিল্ডিং ব্লকস, পাজ়লস ইত্যাদি। স্মার্টফোনের বদলে এই ধরনের খেলা বা বই শিশুর হাতে তুলে দিলে মনোযোগের সমস্যা অনেকটাই কমে। সন্ধ্যাবেলা পড়ার মাঝে একটু বিরতি নিয়ে কিছুটা পাজ়ল মেলাতে বললে বা বিল্ডিং ব্লকস নিয়ে খেললে তাদের একঘেয়েমিও কাটে।
মিউজ়িকে মন বসে : ছোট থেকে শিশুকে মিউজ়িক ইনস্ট্রুমেন্টে তালিম দিতে পারেন। বিদেশে অনেক জায়গায় আড়াই বছর বয়স থেকে পিয়ানো শেখানো হয়। অতটা সম্ভব না হলে তবলা, মাউথ অর্গ্যান, সিন্থেসাইজ়ার— যে কোনও একটি বাজনা শেখাতে পারেন। নোট ধরে সুর তোলার মধ্য দিয়ে মনোযোগের লেভেল অনেকটাই বাড়ে।
গল্প বলা : শোওয়ার আগে কিছুটা সময় শিশুকে গল্প বলুন। অভিনয় করে গল্প বললে তারা আগ্রহী হবে। গল্পের মাঝেই শিশুকে প্রশ্ন করার সুযোগ দিতে হবে। এতে তার ধৈর্য ধরে শোনার প্রবণতাও তৈরি হয়। মনোযোগ বাড়াতে গল্প শোনানোর ভূমিকা বিরাট। সে গল্প শুনছে কি না, তা বুঝতে আপনিও পরে গল্পের মধ্য থেকে প্রশ্ন করে যাচাই করে নিতে পারেন।
ছোট ছোট নির্দেশ : লেখার সময়ে শিশুকে ছোট ছোট নির্দেশ দিন। প্রথমে তিনটে দিয়ে শুরু করুন— যেমন ছবি আঁকার ক্ষেত্রে ‘পয়েন্টগুলোকে জুড়ে দাও, রং দিয়ে আউটলাইন টানো, ভিতরটা রং করো।’ আস্তে আস্তে নির্দেশের সংখ্যা বাড়াতে থাকুন। বাড়িতে নির্দেশ মতো ঠিকঠাক কাজ করার অভ্যাস গড়ে তুললে স্কুলেও শিক্ষকদের নির্দেশ মানার ক্ষেত্রে সমস্যা হবে না।
অংক শেখানো: এক গবেষণা বলছে, দিনে অন্তত দশটা নানা ধরনের অংক যদি শিশু করতে পারে তাহলে অজানা কিছু সমাধানের ক্ষেত্রে তার মনোযোগ অনেকটা বেড়ে যাবে। পরবর্তী জীবনেও বিভিন্ন সমস্যা মোকাবিলার ক্ষেত্রে সে অন্যদের তুলনায় একটু বেশিই এগিয়ে থাকবে। আবার কোনও শিশুর যদি অঙ্কেই আতঙ্ক থাকে তাহলে পড়তে বসে প্রথমে অঙ্ক করে, পরে তার প্রিয় কোনো বিষয় পড়াতে পারেন।
খেলার ছলে: সব সময় পড়তে বসিয়ে বা আঁকতে বসিয়ে মনোযোগ বাড়ানো যায় না। সে ক্ষেত্রে ছোট ছোট খেলা খেলতে পারেন।
মা-বাবার দায়িত্ব
শিশুর সঙ্গে কথা বলুন। তার কথা মন দিয়ে শুনুন। মা-বাবা ধীরস্থির হয়ে, মন দিয়ে শিশুর কথা শুনলে স্বভাবতই তার অতিরিক্ত ছটফটে ভাব কমে আসবে। শিশুর হোমওয়ার্ক তাকেই করতে দিন।
সন্তানের বয়স বারো- চৌদ্দ বছর হলে তার পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে শুরু করুন। পড়ানোর সময়ে টাইমার ব্যবহার করতে পারেন। প্রতিটি টাস্কের সময় বেঁধে দিন। সময়ের মধ্যে তা শেষ করার অভ্যাস হলে পরীক্ষায় সুবিধে হবে।
শিশুদের সামনে টেনশন করবেন না, আতঙ্কে ভুগবেন না। তার সামনে অন্তত মনের ভাব চেপে স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করুন। না হলে শিশুর মধ্যেও এক ধরনের অস্থিরতা জন্ম নেবে।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com