অধ্যক্ষের অব্যবস্থাপনায় কলেজে নানা সংকট

প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২৩ । ০০:০০ | আপডেট: ১৬ মার্চ ২৩ । ১১:১৯ | প্রিন্ট সংস্করণ

মাদারগঞ্জ (জামালপুর) সংবাদদাতা

মাদারগঞ্জ এ এইচ জেড সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ড. আবদুল বাতেন নিয়মিত অফিস করেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। তাঁর অব্যবস্থাপনার কারণে কলেজে নানা সংকট চলছে। ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার স্বাভাবিক কার্যক্রম। এসব অভিযোগ করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, কলেজে শিক্ষকের পদ সংখ্যা ৩০। এর মধ্যে ১২টি পদ দীর্ঘদিন ধরে ফাঁকা। অধ্যক্ষের অনুগত দপ্তরি ফয়জুর পালন করছেন হিসাব শাখার দায়িত্ব। এতে জবাবদিহি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অধ্যক্ষের অডিট প্রতিবেদন ও আয়-ব্যয় বিবরণী একাডেমিক কাউন্সিলে পাস করানোর বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। এ নিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাঁদের ভাষ্য, এক সময় উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের নির্দিষ্ট সংখ্যক শিক্ষার্থীকে একজন শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে রাখা হতো। এতে পরীক্ষার ফল হতো ভালো। কিন্তু কয়েক বছর ধরে কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম ভেঙে পড়ছে। তদারকি না থাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুপস্থিতির প্রবণতা বেড়ে গেছে।

অভিযোগের সত্যতা মিলেছে কলেজের দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আলফাজ হোসেনের বক্তব্যে। তিনি জানান, কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে বর্তমানে কলেজের স্নাতক ও পাস কোর্সের (ডিগ্রি) পাঠদান হয় না। আর্থিক খাতেও নেই স্বচ্ছতা। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, গত বছর ১৫ আগস্টের অনুষ্ঠানের ব্যয় বাবদ ১৫-২০ হাজার টাকা উত্তোলন করেন অধ্যক্ষ। কিন্তু অনুষ্ঠানে উপস্থিত ৪৫ শিক্ষার্থীর মধ্যে কোনো খাবার বিতরণ করা হয়নি। গত ২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষেও ঘটে একই ধরনের ঘটনা।

কলেজের অধিকাংশ বিল-ভাউচারে অসংগতি রয়েছে বলে দাবি করেন শিক্ষক আলফাজ হোসেন। তাঁর ভাষ্য, প্রতি বছর সরকারি অনুদান বাবদ ১৫ লাখ টাকা কোন খাতে ব্যয় হচ্ছে জানেন না কেউ। এমনকি আয়-ব্যয় অডিট সম্পর্কেও জানেন না তাঁরা। এ সবই হয় অধ্যক্ষের ইচ্ছায়।  

কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক এহসানুল হক আরজু জানান, কলেজটিতে নানা সংকট চলছে। লাইব্রেরি থাকলেও নেই চর্চার পরিবেশ। শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো আবাসনের ব্যবস্থা নেই। মানসম্মত খাবারের কোনো ক্যান্টিন নেই। ছাত্র সংসদের ভবনও জরাজীর্ণ। ছাত্র সংসদ নির্বাচন কবে হয়েছে তাও জানে না কেউ।

শিক্ষার্থীদের দাবি, শিক্ষক সংকটের কারণে কলেজে নিয়মিত ক্লাস হয় না। সপ্তাহে তিন বা চার দিন ক্লাস হয়। দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী শামীম আহাম্মেদ বলেন, ‘কলেজে কম্পিউটার ল্যাব আছে; কিন্তু ব্যবহারিক ক্লাস হয় না।’  

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একমত পোষণ করেন শিক্ষকরাও। তাঁদের ভাষ্য, জেলা শহর থেকে কলেজের দূরত্ব প্রায় ৩০ কিলোমিটার। কিন্তু আবাসন ব্যবস্থা না থাকায় এখানে আসতে চান না অনেক শিক্ষক।

অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ আবদুল বাতেন বলেন, কলেজের কোনো অর্থ ব্যয়ে অস্বচ্ছতা নেই। শিক্ষার্থীদের আবাসনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘হোস্টেল চালু করতে হলে নতুন ভবন নির্মাণ করতে হবে। শিক্ষকদের জন্যও অবাসন ব্যবস্থা নেই। কলেজের এসব অবকাঠামো নির্মাণকাজের দায়িত্ব আমার না, এর জন্য ফ্যাসিলিটিজ বিভাগ রয়েছে।’

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com