ইভিএম ছিনতাইকারী নির্মলেন্দু লাপাত্তা

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২৩ । ০০:০০ | আপডেট: ১৮ মার্চ ২৩ । ০১:৫৮ | প্রিন্ট সংস্করণ

চট্টগ্রাম ব্যুরো ও বোয়ালখালী প্রতিনিধি

বোয়ালখালীর শ্রীপুর খড়নদ্বীপ ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক নির্মলেন্দু দে সুমন। পদ খুব বড় না হলেও ভোটকেন্দ্র থেকে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ইভিএম ছিনতাই করে তিনি এখন আলোচিত এক নাম। এর আগে দেশের মানুষ ভোটকেন্দ্র থেকে ব্যালট বাক্স ছিনতাই হতে দেখেছে। কিন্তু ইভিএম ছিনতাইয়ের ঘটনা এবারই প্রথম। গত বৃহস্পতিবার বোয়ালখালীর উপজেলা নির্বাচনের সময় নৌকা মার্কার প্রার্থীর পক্ষে জ্যৈষ্ঠপুরা রমণীমোহন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এই কাণ্ড ঘটান নির্মলেন্দু। এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই বোয়ালখালী থানায় নির্মলেন্দুর বিরুদ্ধে মামলা করেন কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকারী প্রিসাইডিং অফিসার সজল দাশ। তবে এর মধ্যেই এলাকা ছেড়ে হাওয়া হয়ে গেছেন নির্মলেন্দু।

স্থানীয়রা জানান, শ্রীপুর খড়নদ্বীপ ইউপির চেয়ারম্যান মোকাররম হোসেনের আশ্রয়ে এলাকায় প্রভাব খাটান নির্মলেন্দু। তাঁর যাবতীয় কাজে প্রশ্রয় দেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রতন চৌধুরী। এ দু’জনের তদবিরেই সম্প্রতি ইউনিয়ন যুবলীগের কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়েছেন তিনি। দুই সন্তানের জনক নির্মলেন্দু বেশ কয়েক বছর বিদেশে ছিলেন। সেখান থেকে কয়েক বছর আগে এসে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে পেয়ে যান গুরুত্বপূর্ণ পদ। তাঁর ছোট ভাইও বিদেশে থাকেন। ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তাঁরা। নির্মলেন্দুর বাবার নাম গোরাঙ্গ দে। তিনি মারা যাওয়ার পর পৈতৃক সূত্রে পাওয়া জমি দেখাশোনা করেন নির্মলেন্দু। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি ব্যবসা করেন বলেও এলাকায় প্রচার করেছেন।

ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন বলেন, নির্মলেন্দুর সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতা নেই। যতটুকু জেনেছি, তিনি গাড়ির পার্টসের ব্যবসা করেন। বিদেশ থেকে আসার পর কার তদবিরে নির্মলেন্দুকে কমিটিতে যুক্ত করা হয়েছে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যাঁরা কমিটিতে আছেন তাঁরা কোনো না কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তির আশ্রয়ে থাকেন। নির্মলেন্দুও এর ব্যতিক্রম নন।

বোয়ালখালী থানার ওসি আবদুর রাজ্জাক বলেন, ইভিএম ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা রতন চৌধুরীকে আটক করা হলেও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়। নির্মলেন্দু ইভিএম নিয়ে গেলেও সেটি উদ্ধার করে রতন চৌধুরী কেন্দ্রে নিয়ে আসেন। আমরা এখন নির্মলেন্দুকে খুঁজছি; সে পলাতক।

এলাকাবাসী বলছে, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোকাররম হোসেনের আশ্রয়েই প্রভাব খাটাতেন নির্মলেন্দু। এখনও তিনি চেয়ারম্যানের আশ্রয়েই আছেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মোকাররম হোসেন বলেন, ‘নির্মলেন্দুকে আমি চিনি। সে আমার লোক নয়। তবে সে যে কাজ করেছে তা ঠিক হয়নি। না বুঝে বড় অপরাধ করেছে সে। এভাবে ইভিএম আনা ঠিক হয়নি তার।’

নির্মলেন্দুকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ আছে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি রতন চৌধুরীর বিরুদ্ধেও। তিনিও অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নির্মলেন্দুকে কখনও আশ্রয়-প্রশ্রয় দেইনি আমি। ভোটের দিন সে না বুঝে ইভিএম নিয়ে এসেছে। ভোটকেন্দ্রে আসা নারীদের মেশিন সম্পর্কে ধারণা দিতে সে এই কাজ করেছে। তবে এটা তাঁর ভুল।




© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com