জেলেপল্লির শিশুদের স্বপ্ন দেখান যাঁরা

প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২৩ । ০০:০০ | আপডেট: ১৯ মার্চ ২৩ । ১১:২০ | প্রিন্ট সংস্করণ

সামিয়া রহমান

জেলেপল্লির শিশুদের মাঝে আলো ছড়ানো তরুণ স্বেচ্ছাসেবকরা

সালটা ২০১৮। অদম্য দুই তরুণ রুবেল ও সজীবের হাত ধরে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় হাতেখড়ি ফাউন্ডেশনের যাত্রা শুরু। সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন তরুণ-তরুণী। নদীর তীরে বেড়াতে গিয়ে রুবেল দেখতে পান জেলেপল্লির পিছিয়ে পড়া শিশুদের। জেলেপল্লির শিশুরা মাছ ধরছে। বিদ্যালয়ে না গিয়ে জড়িয়ে পড়েছে শিশুশ্রমে। যোগাযোগব্যবস্থা বেহালসহ নানা সুযোগ-সুবিধার অভাবে বলেশ্বর নদ-তীরবর্তী এলাকার প্রায় ৫০ শতাংশ জেলেশিশুই শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। এরপর তাদের নিয়ে ভাবলেন এবং তাদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে কাজ শুরু করেন। বর্তমানে শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে সংগঠনটি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সংগঠনটি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর শিশুদের শিক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ, বৈষম্য দূরীকরণ, নিজস্ব সংস্কৃতি বিকাশসহ জেলেশিশুদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। বাল্যবিয়ে রোধ, ইভটিজিং প্রতিরোধে সচেতনতামূলক প্রচারণা ও বিনামূল্যে রক্তদানেও কাজ করছে সংগঠনটি। এ ছাড়া তাদের বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে–
বিজ্ঞানমেলা: স্কুলের শিশুদের নিয়ে আয়োজন করে বিজ্ঞানমেলা।

ফ্রাইডে স্কুল: নদী-তীরবর্তী ও ঝরে পড়া শিশুদের বিদ্যালয়মুখী করতে হাতেখড়ি বিনামূল্যে ফ্রাইডে স্কুলে পাঠদান করে প্রতি শুক্রবার।
উপকূল পাঠাগার : উপকূলীয় ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থাপন করেছে উপকূল পাঠাগার। এসব পাঠাগারে প্রাতিষ্ঠানিক বই পড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন গল্প, ছড়া-কবিতার বইও পড়ার সুযোগ পায়।

বৃক্ষরোপণ: উপকূলীয় অঞ্চলের বেশিরভাগ গ্রাম নদী-তীরবর্তী। বন্যা-জলোচ্ছ্বাসে নদীপাড়ের বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। নদীভাঙন, বেড়িবাঁধ ভাঙন ও জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করতে প্রায় তিন হাজার গাছের চারা রোপণ করে সংগঠনটি।

এক টাকার মিনি মার্কেট: আর্থিকভাবে অসচ্ছল পরিবারের শিশুদের জন্য আয়োজন করে এক টাকার মিনি মার্কেট। এই মার্কেট থেকে এক টাকার বিনিময়ে শিশুরা পায় খাতা, কলম, টিফিন বক্স, পানির বোতল, ছবি আঁকার খাতা, রং পেন্সিল, রাবার, কাঠ পেন্সিল ইত্যাদি শিক্ষা উপকরণ। এ ছাড়াও রয়েছে তাদের বেশ কিছু সামাজিক কার্যক্রম। সামাজিক কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড ২০২০ অর্জন করে সংগঠনটি। এ ছাড়া তাদের ঝুলিতে আছে ইন্সপায়ারিং উইমেন ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড-২০২২। আগামীর পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে রুবেল মিয়া বলেন, ‘হাতেখড়ির যাত্রা খুব একটা সুগম ছিল না। শত প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও দুর্গম এলাকার জেলেশিশুর মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমরা চাই, পিছিয়ে পড়া এসব শিশুর জন্য একটা বিদ্যালয় হোক। যাতে অন্যান্য সম্প্রদায়ের মতো এগিয়ে যাবে জেলেপল্লির কোমলমতি শিশুরাও।’ n

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com