
ওএমএসের সব চাল কিনে নিলেন আ. লীগ নেতা বাবু
প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২৩ । ২২:৪৫ | আপডেট: ২৪ মার্চ ২৩ । ২২:৪৫
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

আব্দুল করিম বাবু। ছবি-সংগৃহীত
গরিবদের মধ্যে বিক্রির সুযোগ না দিয়ে ওএমএস ট্রাকের সব চাল কিনে নিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ও সিটি করপোরেশনের ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর (প্যানেল মেয়র-১) আব্দুল করিম বাবু।
গত মঙ্গলবার এ কাণ্ড ঘটান তিনি। গরিবের অধিকার ক্ষুণ্ন করায় কাউন্সিলর বাবু ও চাল বিক্রির সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করেছেন নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম জহির।
চাল কেনার কথা স্বীকার করে আব্দুল করিম জানিয়েছেন, চাল কিনে তিনি দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ করেছেন। কাউন্সিলরের ভাষ্য, এলাকার অনেকে চাল কিনতে এলেও, টাকা ছিল না। দুই, চার, ২০ জনকে টাকা দিলে বাকিরা মনঃক্ষুণ্ন হবে ভেবে পুরো চাল কিনে সবার মধ্যে বিতরণ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘পুরো ট্রাকের চালের দাম হয় ৫৪ হাজার টাকা। আমি কি এ চাল নিজে খাওয়ার লোক? আমি প্রতিদিন ৫৪ হাজার টাকার বেশি দান করি। এ জন্য বারবার মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে কাউন্সিলর বানান। গরিবের খাবার গরিবই নিয়েছে, আমি শুধু টাকা দিয়েছি। এটা কি আমার অপরাধ?’
স্থানীয়রা জানান, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ অনুসারী আব্দুল করিম। তিনি নারায়ণগঞ্জের ডিশ ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করায় ‘ডিশবাবু’ নামে পরিচিত। গত মঙ্গলবার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের পাইকপাড়ায় কাউন্সিলর বাবুর কার্যালয়ের সামনে বাবা আক্তার হোসেন বাবুলের সঙ্গে ওএমএসের চাল বিক্রি করতে ট্রাক নিয়ে যান নির্ধারিত ডিলার সাদ্দাম হোসেন। আক্তার হোসেন জানান, ছেলের পক্ষে চাল বিক্রি তদারকি করছিলাম। কার্যালয়ের সামনে পৌঁছলে ওই দিনের পুরো ট্রাক (দুই টন) চাল কিনে রেখে দেন কাউন্সিলর। তিনি নিলে আসলে কিছু করার থাকে না। চালগুলো আদর্শ বালিকা স্কুল অ্যান্ড কলেজে রাখেন কাউন্সিলর।
স্থানীয়রা জানান, ওইদিন কেউ জানতেন না, ওএমএসের চাল আসবে। কারণ চাল আসার আগে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয়। মঙ্গলবার এর কিছুই করা হয়নি। পাইকপাড়া জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন মো. শাহীন বলেন, ‘অন্যান্য দিন জানানো হলেও মঙ্গলবার কাউন্সিলর কার্যালয় থেকে ট্রাক আসার কথা জানানো হয়নি।’
আদর্শ বালিকা স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবু। প্রতিষ্ঠানের ভেতরে নিজের তত্ত্বাবধানে দুটি কক্ষ রেখেছেন তিনি। তবে বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় বুধবার রাতেই চালগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
কলেজ অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান বলেন, ‘প্রতি বছরই এখানে চাল রাখেন কাউন্সিলর। পরে তা প্যাকেট করে ঈদ উপলক্ষে মানুষের মধ্যে বিতরণ করেন। গত মঙ্গলবার তিনি অর্ধশতাধিক বস্তা চাল রাখেন।’
নারায়ণগঞ্জ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আসমা উল হোসনা বলেন, ‘চাল কাউন্সিলরের তত্ত্বাবধানে বিক্রির কথা। সেটি না করে রেখে দেওয়া অপরাধ। তদন্ত করে এমন কিছু পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ একই কথা বলেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com