বরিশাল সিটি নির্বাচন

আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী জাপা নাকি ইসলামী আন্দোলন

প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২৩ । ০০:০০ | আপডেট: ২৬ মার্চ ২৩ । ০৫:৩১ | প্রিন্ট সংস্করণ

পুলক চ্যাটার্জি, বরিশাল

বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হবে কোন দল, তা নিয়ে ভোটারদের মধ্যে চলছে আলোচনা। আওয়ামী লীগের প্রার্থী কে হবেন, তা এখনও নিশ্চিত নয়। নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। বড় দুই দলের বাইরে বরিশালে জাতীয় পার্টি এবং চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নিজস্ব ভোট ব্যাংক আছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) শ্রমজীবীদের অধিকার ও নানা সামাজিক আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকায় তাদেরও একটি ভোট ব্যাংক সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলে আওয়ামী লীগের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারে জাতীয় পার্টি কিংবা ইসলামী আন্দোলন। বাসদও হতে পারে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যে পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন হবে, তার একটি বরিশাল। নির্বাচন কমিশন আগামী মে বা জুনের মধ্যে বিসিসি নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছে।

নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গাজী নইমুল ইসলাম লিটু সমকালকে বলেছেন, এখন পর্যন্ত বর্তমান মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহই মেয়র পদে দলের একক প্রার্থী। তবে মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহামুদুল হক খান মামুনও মেয়র পদে মনোনয়ন চাইবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। এ ছাড়াও মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর চাচা আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতও মনোনয়ন চাইবেন বলে জানিয়েছেন।

বিসিসির পঞ্চম নির্বাচনকে সামনে রেখে অনেক আগেই মাঠে নেমেছে জাতীয় পার্টি। ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বরিশাল মহানগর জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপসকে মেয়র পদে আগাম মনোনয়ন দিয়েছেন। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর ইকবাল হোসেন তাপস বরিশাল মহানগর জাতীয় পার্টিকে ঢেলে সাজানোর কাজে মাঠে নামেন এবং এখনও তা অব্যাহত রেখেছেন।

ভোটের রাজনীতিতে স্থানীয়ভাবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গুরুত্ব বেড়েছে। বিএনপির অনুপস্থিতিতে সিটি নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হবেন বলে দলটির নেতারা মনে করেন।

সিটি নির্বাচন প্রশ্নে ইসলামী আন্দোলনের বরিশাল মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা জাকারিয়া হামিদি সমকালকে বলেন, ‘এখন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি, নিরপেক্ষ নির্বাচনের সম্ভাবনা দেখলে যোগ্য প্রার্থী দেব। আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর প্রার্থীর নাম ঘোষণা করব।’ তবে ইসলামী আন্দোলনের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, বিসিসি নির্বাচনে হাতপাখার প্রার্থী হবেন দলটির বরিশাল জেলা শাখার সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় ছাত্র ও যুববিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ এসাহাক মুহাম্মদ আবুল খায়ের। নিজস্ব ভোট ব্যাংক এবং নির্বাচনী রাজনীতির সব হিসাবনিকাশ মিলিয়ে হাতপাখার প্রার্থী জয়ী হওয়ার মতো অবস্থানে আছেন বলে মনে করেন ওই নেতারা।

গত সিটি নির্বাচনে বাসদের মেয়র প্রার্থী ছিলেন দলটির বরিশাল জেলা সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী। এবার সিটি নির্বাচনেও তিনি বাসদের প্রার্থী হবেন বলে জানিয়েছেন। রাজনীতি সচেতন মহলের মতে, নগরীর নানা নাগরিক সমস্যা সমাধানে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন মনীষা চক্রবর্তী। শ্রমজীবীদের অধিকার আদায়েও সোচ্চার তিনি। সিটি নির্বাচনে তিনি শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারেন।

মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর মনে করেন, বিএনপি নির্বাচনে না এলে এর তেমন প্রভাব পড়বে না। বরিশাল নগরে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণাঞ্চলে অভাবনীয় উন্নয়ন করেছেন। মানুষ এখন উন্নয়নের পক্ষে। সিটি নির্বাচনে নগরবাসী বিপুল ভোটে আওয়ামী লীগকেই বিজয়ী করবে।

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com