
ফরিদপুরে ভুল অস্ত্রোপচারে নারীর জরায়ু কেটে ফেলার অভিযোগ
প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২৩ । ০৪:০৬ | আপডেট: ২৯ মার্চ ২৩ । ১০:১০
ফরিদপুর অফিস
-samakal-642364d203bfd.jpg)
ফাইল ছবি
ফরিদপুরে আবারও ভুল অস্ত্রোপচারের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বেসরকারি ‘মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের’ বিরুদ্ধে। ভুল অস্ত্রোপচারে নবজাতকের মায়ের জরায়ু কাটা পড়ায় যন্ত্রণায় চিৎকার করছেন ওই নারী। হাসপাতালটির তৃতীয় তলার ৩০৭ নম্বর কেবিনে ভর্তি রয়েছেন রিক্তা (২২)।
রিক্তা ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের মোহনমিয়া নতুন হাট এলাকার মো. রুবেল মোল্লার স্ত্রী।
জানা যায়, শুক্রবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় প্রসব ব্যাথা নিয়ে ফরিদপুর শহরের বেসরকারি হাসপাতাল ‘মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে’ ভর্তি হন রিক্তা। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তড়িঘড়ি করে অস্ত্রোপচার করানোর জন্য হাসপাতালটির অস্ত্রোপচার কক্ষে (ওটি) নেওয়া হয়। এসময় ওই গর্ভবতী নারীর জরায়ু কেটে ফেলা হয়। পরে পেটের সন্তান বের করতে পারলেও ওই নারীর রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় রোগীর স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে হাসপাতাল প্রাঙ্গণ।
রিক্তার শ্বশুর মো. রফিক মোল্লা অভিযোগ করে বলেন, ‘শুক্রবার আমার ছেলের বউয়ের প্রসববেদনা উঠলে শহরের মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালটিতে নিয়ে আসি। ওইদিন সন্ধ্যায় আমার ছেলের বউকে নার্স ও আয়ারা নেয় ওটিতে। কিছুক্ষণ পর এসে বলে রোগীর অবস্থা ভালো না। জরুরি অস্ত্রোপচার করতে হবে। ৩০ মিনিট পরে বলে বাচ্চা এবং মা দুজনের অবস্থাই খারাপ। বাচ্চা বাঁচলেও মা বাঁচবে না এবং মাকে বাঁচালে বাচ্চা বাঁচবে না। তখন মহাবিপদে পড়ে যাই আমরা। এরপর নার্স এসে বলেন পেট কেটে বাচ্চা বের করলে কারোরই সমস্যা হবে না; জরুরি রক্ত লাগবে এবং অনাপত্তিপত্রে সই করেন। কতক্ষণ পরে আমাদের জানানো হয় পুরো জরায়ু কেটে ফেলা হয়েছে।’
রিক্তার শ্বশুর বলেন, ‘আমাদের ধারণা ইফতারের সময়ে চিকিৎসক না থাকায় নার্স এবং আয়া মিলে অস্ত্রোপচার করানোয় আমার ছেলের বউয়ের সারাজীবনের সর্বনাশ হয়ে গেছে।’
তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, চিকিৎসকই এ অস্ত্রোপচার করেছেন। নার্স কিংবা আয়া নয়।
শ্বশুর রফিক মোল্লা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছে ডা. কল্যাণ কুমার সাহা ও ডা. মো. জাহাঙ্গীর এ অস্ত্রোপচার করেছেন। আমরা এর সঙ্গে জড়িতদের বিচার চাই।’
এ ব্যাপারে বক্তব্য নিতে ডা. কল্যাণ কুমার সাহা ও ডা. মো. জাহাঙ্গীরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
দেড় বছর আগে রফিক মোল্লার ছেলে রুবেল মোল্লার সঙ্গে বিয়ে হয় রিক্তার। স্বামী রুবেল কৃষি কাজ করেন। প্রথম সন্তানের জন্ম দিয়ে মা হতে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন রিক্তা। এ পর্যন্ত চার ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে। তার শরীরে আরও রক্ত দেওয়া লাগবে বলে জানা গেছে।
ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দীকুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও ফোন রিসিভ না করায় তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
তবে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. শাহ মোহাম্মাদ বদরুদ্দোজা বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের জানা নেই। ওই পরিবার আমাদের লিখিত অভিযোগ দিলে বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব। সিভিল সার্জন স্যার ঢাকায় একটি প্রশিক্ষণে আছেন। স্যার ঢাকা থেকে আসলে বিষয়টি আমি স্যারকে জানাব।’
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com