
গবেষণা
নারীর গড় আয়ু বেশি যে কারণে
প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২৩ । ১২:৪৮ | আপডেট: ৩০ মার্চ ২৩ । ১২:৫৬
অনলাইন ডেস্ক

‘মেয়েরা হলো কৈ মাছের প্রাণ’ এমন প্রবাদ প্রায় শোনা যায়। কিন্তু এই প্রবাদ কি শুধু লোকমুখেই প্রচলিত, না কি এর পেছনে কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা রয়েছে? গবেষণা বলছে, মহিলাদের চেয়ে পুরুষরা বেশি শারীরিক কসরত করতে পারলেও, পুরুষদের গড় আয়ু কিন্তু মহিলাদের চেয়ে বেশি নয়।
হার্ভার্ড মেডিক্যাল কলেজের এক দল বিজ্ঞানী তাদের গবেষণাপত্রে সম্প্রতি এমন তথ্য তুলে ধরেছেন। নারী ও পুরুষের শারীরিক কিছু বৈশিষ্ট এবং সামাজিক কারণ উল্লেখ করে কেন পুরুষের চেয়ে নারীর গড় আয়ু বেশি তা তুলে ধরা হয়েছে গবেষণায়।
জিনতত্ত্ব
গবেষকদের বক্তব্য, জিনগত কারণে একেবারে ভ্রূণ অবস্থা থেকেই নাকি এমন বিভাজন তৈরি হয়ে যায়। যদিও দু’টি ভ্রূণের ক্ষেত্রেই ২৩ জোড়া ক্রোমোজ়োমের উপস্থিতি থাকে। কিন্তু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ২২ জোড়া ক্রোমোজ়োম এক রকম হলেও শেষ একটি জোড়া কিন্তু আলাদা। ছেলেদের ক্ষেত্রে যা ‘XY’ এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে ‘XX’। গবেষণায় দেখা গেছে এই ‘Y’ ক্রোমোজ়োমটিই আসলে বিভিন্ন রোগের ধারক এবং বাহক। তাই পুরুষদের রোগভোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই বেশি।
হরমোন
পুরুষদের শরীরে থাকা টেস্টোস্টেরন হরমোনটি দীর্ঘ দিন ধরে হৃদ্যন্ত্রের পেশিতে এসে জমা হতে থাকে। যা বয়সকালে হার্টের নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। অন্য দিকে, মেয়েদের শরীরে থাকা ইস্ট্রোজেন হরমোনটি হার্টের জন্য মহৌষধের মতো কাজ করে। তাই মেয়েদের মধ্যে হার্ট সংক্রান্ত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম।
জননতন্ত্র
পুরুষ ও মহিলাদের জননেন্দ্রীয়ও এজন্য অনেকাংশে দায়ী। পুরুষদের শরীরে থাকা প্রস্টেট গ্ল্যান্ডটি নানা ধরনের রোগের জন্ম দেয়। সেই দিক থেকে দেখতে গেলে মহিলাদেরও স্তন, জরায়ুও সুরক্ষিত নয়। কিন্তু সমীক্ষা বলছে, এ ক্ষেত্রে পুরুষদের জননেন্দ্রীয়ের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি।
বিপাকহার
মেয়েদের দীর্ঘায়ু লাভের অন্যতম একটি কারণ হলো বিপাকহার। গঠনগত কারণেই মেয়েদের শরীরে ‘ভালো’ কোলেস্টরলের পরিমাণ পুরুষদের তুলনায় বেশি। যা হার্ট ভালো রাখার জন্য অনেক অংশে দায়ী। একটা বয়সের পর ঋতুচক্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর, মহিলাদের শরীরে মেদ জমতে দেখা যায়। কিন্তু তার আগে পর্যন্ত স্থূলত্ব নিয়ে মেয়েদের তেমন সমস্যা হয় না। এর প্রভাব পড়ে বিপাকহারের উপর।
সামাজিক কারণ
পুরুষরা একসঙ্গে অনেকটা ভার বহন করতে পারলেও সারা দিন ঘর এবং বাইরে নানা ধরনের কাজ করেন মহিলারা। তাই শারীরিক কসরত বেশি হয় তাদেরই। এছাড়া মেয়েদের শরীর সন্তান ধারণের জন্য উপযুক্ত।
তাই এ কথা বলাই যায় পুরুষদের তুলনায় মেয়েরা অনেক বেশি কষ্টসহিষ্ণু। সূত্র: আনন্দবাজার
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com