
আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বক্তারা
গণহত্যার স্বীকৃতি পেতে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা প্রয়োজন
প্রকাশ: ২৩ মে ২৩ । ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

বাংলাদেশে গণহত্যার স্বীকৃতি বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বক্তারা বলেছেন, গণহত্যার ঘটনায় বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি পেতে হলে অনেক রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা প্রয়োজন। এ জন্য রাজনীতিবিদদের এগিয়ে আসতে হবে এবং কাজ করতে হবে।
প্রতিনিধি দলটি আগামী ২৭ মে পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করবে। তাঁরা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার শিকার ব্যক্তি, তাঁদের আত্মীয়স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষাৎকার নেবেন, পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, গণকবর ও গণহত্যার স্থান পরিদর্শন করবেন।
সম্মেলনে ইউরোপের প্রতিনিধি দলের প্রধান নেদারল্যান্ডসের সাবেক সংসদ সদস্য ও মানবাধিকারকর্মী হ্যারি ভ্যান বোমেল বলেন, গণহত্যা বিশ্ব ইতিহাসের একটি অংশ। প্রকৃত ইতিহাস মানুষের কাছে জানাতে হলে ঘটনাটিকে বিশ্বব্যাপী সংরক্ষণ করতে হবে। এটি সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতির প্রয়োজন রয়েছে।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর নেদারল্যান্ডস বাংলাদেশি ৫০০ শিশুকে দত্তক নিয়েছিল। তাদের নিজস্ব কোনো স্বীকৃতি ও পরিচয় ছিল না। এটিকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি অর্জনের জন্য মানবাধিকার সংস্থাগুলো কাজ করছে। এতে সময় লাগতে পারে। তবে এটি স্বীকৃতি পাবে। কারণ আর্মেনিয়ান গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অনেক পর স্বীকৃতি পেয়েছিল। ১৯৭১ সালে প্রথম গণহত্যার শিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রথম স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তিনি আহ্বান করেন।
ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল গণহত্যার মূল কেন্দ্র। পৃথিবীর ইতিহাসে অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের নৃশংস গণহত্যার নজির নেই। দেশের স্বাধীনতাবিরোধীরা এই গণহত্যায় সহযোগিতা করেছিল। এর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির প্রয়োজন রয়েছে।
যুক্তরাজ্যের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ক্রিস ব্ল্যাকবার্ন বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বলিষ্ঠ ভূমিকার কারণে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্রদের টার্গেট করে হত্যা করা হয়। বাংলাদেশ গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির যোগ্যতা রাখে।
ঢাবির সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক হাফিজুর রহমান কার্জন বলেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে এবং পূর্বপরিকল্পনায় একাত্তরে হত্যাযজ্ঞ চালায়। ফলে যুদ্ধে ত্রিশ লাখ বাঙালি হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ ঘটনাকে খুব একটা পাত্তা দেয়নি। ফলে যুদ্ধের এত বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত আমাদের কোনো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নেই।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন নেদারল্যান্ডস ইবিএফের সভাপতি বিকাশ চৌধুরী বড়ুয়া, সহসভাপতি আনসার আহমেদ উল্লাহ, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক, লে. কর্নেল (অব.) সাজ্জাদ জহির, নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডাম ভ্রিজে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অ্যান্থনি হলসল্যাগ, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক হারুন হাবীব, আমরা একাত্তরের প্রধান সমন্বয়ক প্রকৌশলী হিলাল ফয়েজী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব জামান প্রমুখ।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com