পাহাড়ি পেঁপের কদর শহরে
ফাইল ছবি
নজরুল ইসলাম লাভলু, কাপ্তাই (রাঙামাটি)
প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫ | ২২:৫৮
কাপ্তাইয়ের সুস্বাদু পাহাড়ি পেঁপের কদর দিন দিন বাড়ছে। উপজেলার সাপ্তাহিক হাটগুলোয় প্রচুর পাহাড়ি পেঁপে ওঠে। এসব পেঁপে আসে কাপ্তাই, বিলাইছড়িসহ পাশের পাহাড়ি বিভিন্ন এলাকা থেকে। পরিত্যক্ত পাহাড়ে উৎপাদিত হয় এসব পেঁপে। রাসায়নিক ছাড়া চাষকৃত এসব পেঁপের চাহিদা রয়েছে সারাদেশে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকাররা এসে কাপ্তাইয়ের বিভিন্ন সাপ্তাহিক হাট থেকে পেঁপে কিনে নেন। এখানে কিছুটা সস্তায় পাওয়া যায় পাহাড়ি পেঁপে।
কাপ্তাইয়ের পাহাড়ি এলাকায় উৎপাদিত পেঁপের মধ্যে রেড লেডি জাতটি বেশ জনপ্রিয়। এই জাতের পেঁপে পাহাড়ি অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি উৎপাদন হয়ে থাকে। এ জাতের পেঁপে দেখতে যেমন সুন্দর, আকারেও অনেক বড় হয়ে থাকে। ছোট একেকটি গাছে প্রথম দফায় ৩০-৪০টি পেঁপে ধরে থাকে। পর্যায়ক্রমে ফলন কম হয়। প্রাথমিক অবস্থায় এসব পেঁপে সবুজ রং ধারণ করে। ধীরে ধীরে পাক ধরলে লাল হয়। পাকা অবস্থায় এসব পাহাড়ি পেঁপে দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি খেতেও বেশ সুস্বাদু। এগুলো কাঁচা অবস্থায় রান্না করেও খাওয়া যায়। অনেকের কাছে কাঁচা পেঁপের ভর্তাও বেশ পছন্দের। তাই পাহাড়ি এসব পেঁপের কদর সবচেয়ে বেশি।
প্রতি কেজি পাকা পেঁপে স্থানীয় হাটে ৪০-৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়ে থাকে। ছোটগুলোর দামও একটু কম হয়। কাপ্তাই জেটিঘাটে পেঁপে চাষি সুনিতী মারমা, আথুমং মারমা জানান, পরিত্যক্ত পাহাড়ে পেঁপে চাষ করে বেশ সফলতা পেয়েছেন। কীটনাশক বা রাসায়নিক ছাড়াই তারা পেঁপে গাছের পরিচর্যা করেন। ফরমালিনমুক্ত বলে এগুলো কিনতে সবার আগ্রহ থাকে। বিক্রেতারা জানান, একেকটি গাছে ৩০ থেকে ৪০টি পেঁপে পাওয়া যায়। তবে তারা যে দামে পেঁপে বিক্রি করেন তাতে খুব কমই লাভ হয়। দূর পাহাড় থেকে এসব পেঁপে বাজারে আনতে যাতায়াত খরচ বাড়ে। সেই অনুযায়ী দাম পান না তারা।
চট্টগ্রাম শহর থেকে কাপ্তাইয়ের সাপ্তাহিক হাটে পেঁপে কিনতে আসা মালেক মিয়া, জেবল হক জানান, তারা কাপ্তাই থেকে পাইকারি দরে কিনে শহরে বিক্রি করে থাকেন। পাহাড়ের উৎপাদিত ফলের চাহিদা সবার কাছে একটু বেশিই।
জেবল হক বলেন, ‘পাহাড়ে উৎপাদিত পেঁপে ফরমালিন মুক্ত ও তরতাজা হয়ে থাকে। এসব পেঁপে শহরেও অনেকটা কম দামে বিক্রি করা যায়। তাই শহরে পাহাড়ের পেঁপের চাহিদা বেশি। আমরা সুদূর চট্টগ্রাম শহর থেকে এসে এখান থেকে পেঁপে কিনে সেগুলো বিক্রি করে বেশ লাভ করতে পারি।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. ইমরান আহমেদ বলেন, ‘সাধারণত কাপ্তাইয়ের বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় এসব পেঁপের ভালো ফলন হয়ে থাকে। পেঁপে উৎপাদন হয় জলাবদ্ধতামুক্ত জায়গায়। তাই পাহাড়ে পেঁপের ফলন ভালো হয়ে থাকে। অন্য ফসলের পাশাপাশি একই জমিতে খালি জায়গায় পেঁপে চাষ করার সুবিধা আছে। উপজেলার প্রান্তিক কৃষকদের পাহাড়ি পেঁপে চাষ করার জন্য কৃষি বিভাগ থেকে বিভিন্ন সহযোগিতা করা হয়। কাপ্তাইয়ের পাহাড়ি পেঁপের কদর দেশজুড়ে রয়েছে। এতে করে পেঁপে চাষ করে অনেক কৃষক লাভবান হচ্ছেন।’
- বিষয় :
- পেঁপে