ঢাকা মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫

প্রাণ পাচ্ছে সেসব খেজুর গাছ

প্রাণ পাচ্ছে সেসব খেজুর গাছ

চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়ক-দ্বীপে রোপণ করা আধমরা খেজুর গাছের পরিচর্যা করছেন ‘মানুষ যে’ সংগঠনের সদস্যরা সমকাল

 রাউজান (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা

প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫ | ২২:৫৯

চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কের রাউজান অংশের সড়ক-দ্বীপে রোপণ করা বিদেশি জাতের খেজুর গাছের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছে ‘মানুষ যে’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ২ জানুয়ারি সকালে সংগঠনের ৪০ জন সদস্য পানির সংকটে মৃত্যুর ঝুঁকিতে থাকা প্রায় ৬০০ খেজুর গাছ পরিচর্যার কাজ শুরু করেছেন। 
জানা য়ায়, ২০২২ সালের এপ্রিলে রাউজান অংশের সড়ক-দ্বীপে তৎকালীন সংসদ সদস্যের অর্থায়নে রোপণ করা হয় বিদেশি জাতের খেজুর গাছগুলো। গাছ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নেয় রাউজান পৌরসভার সাবেক মেয়র। পৌরসভার অর্থায়নে গত দুই বছর পানি ও সার দেওয়ার মাধ্যমে পরিচর্যা করে পৌর কর্তৃপক্ষ। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে পৌরসভার মেয়র আত্মগোপনে চলে যান। অপরদিকে সাবেক সংসদ সদস্য কারাগারে আছেন। এ পরিস্থিতিতে অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে ছয় শতাধিক খেজুর গাছ। পানি সংকটে গাছগুলো মৃত্যুর পথে ছিল। গাছের ডালপালা শুকিয়ে যায়, গোড়ালির মাটিতে ফাটল ধরে। সংকটময় সময়ে খেজুর গাছগুলো বাঁচাতে দায়িত্ব নিতে চায়নি পৌর কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা কৃষি বিভাগ।
গত ১ ডিসেম্বর ‘পানির অভাবে মরছে সড়কের খেজুর গাছ’ শিরোনামে দৈনিক সমকালে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ এক সপ্তাহ পানি দিয়েছিল খেজুর গাছে। কিন্তু পরে অদৃশ্য কারণে গাছে পানি দেওয়া বন্ধ করে দেয় তারা। এ অবস্থায় আবারও গাছগুলো মরে যাওয়ার উপক্রম হয়। তখন গাছগুলো বাঁচাতে দায়িত্ব নিতে চেয়ে পৌরসভা কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করে ‘মানুষ যে’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। গত ১ জানুয়ারি করা আবেদন গ্রহণ করে সংগঠনটিকে পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণের অনুমতি দেয় পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। অনুমতি পেয়ে সংগঠনটির ৪০ জন সদস্য গত ২ জানুয়ারি গাছগুলোর পরিচর্যা শুরু করেন। প্রথম দাপে খেজুর গাছগুলো ডালপালা কাটা, আগাছা পরিষ্কার ও গাছের গোড়ালিতে মাটি-সার দেওয়ার উপযোগী করা হয়। পরে নিয়মিত পানি দেওয়া হয়।
‘মানুষ যে’ নামের সংগঠনটির শীর্ষ কর্মকর্তা নাহিদ ইসলাম সমকালকে বলেন, ‘হালদা সেতু থেকে রাবার বাগান পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার সড়ক-দ্বীপে ছয় শতাধিক খেজুর গাছ রয়েছে। কিছু গাছ পানি ও পরিচর্যার অভাবে মরে গেছে। কেউ আন্তরিকভাবে গাছগুলো বাঁচানোর জন্য এগিয়ে আসছে না। আমাদের সংগঠনের মাধ্যমে বিনা পারিশ্রমিকে ৪০ জন তরুণ গাছগুলো বাঁচাতে এগিয়ে এসেছে। আমরা সারাবছর গাছগুলোর পরিচর্যা ও রক্ষাণাবেক্ষণ করব।’ তিনি সার প্রয়োগে উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতা কামনা করেন।
রাউজান পৌরসভার প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিদুয়ানুল ইসলাম বলেন, ‘সড়ক-দ্বীপে রোপণ করা বিদেশি জাতের খেজুর গাছগুলো বাঁচিয়ে রাখা দরকার। বর্তমানে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় পানি ও অন্যান্য পরিচর্যার অভাবে গাছগুলো মৃত্যুর পথে। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গাছগুলোর দায়িত্ব নিতে আমার কাছে একটি লিখিত আবেদন করেছে। আমি আনন্দের সঙ্গে আবেদনটি গ্রহণ করে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অনুমতি দিয়েছি। আশা করি, খেজুর গাছগুলো প্রাণ ফিরে পাবে।’
 

আরও পড়ুন

×