- প্রবাস
- হতাশাগ্রস্ত প্রবাসীদের বাড়ছে হৃদরোগের ঝুঁকি
হতাশাগ্রস্ত প্রবাসীদের বাড়ছে হৃদরোগের ঝুঁকি

করোনাভাইরাসের প্রভাবে ভালো নেই অর্থনীতির চালিকাশক্তি সচল রাখার অন্যতম কারিগর রেমিট্যান্স যোদ্ধারা। দেশে দেশে লকডাউনের কারণে থমকে গেছে তাদের আয়-রোজগারের পথ। বিশেষ করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ফ্রি ভিসায় ( নিজের তত্বাবধানে) কর্মরত প্রবাসীদের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক।
চলতি রমজান তাদের কাছে এক অপরিচিত সময়। একদিকে কর্মহীনতার চাপ জেঁকে বসেছে অন্যদিকে বাসা ভাড়া, খাবার খরচ জোগাড়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
আয়ের পথ বন্ধ থাকায় অনেকে রমজানে পরিবারের জন্য ন্যূনতম খরচও পাঠাতে ব্যর্থ হয়েছেন। আসন্ন ঈদ তাদের কেমন হবে এই ভাবনায় দিন পার করছেন অসংখ্য প্রবাসী বাংলাদেশি। একদিকে পরিবার অন্যদিকে নিজের কর্মহীন জীবন ঘিরে দুশ্চিন্তার পাহাড় জমে যাচ্ছে একেকজন প্রবাসীর মস্তিকে। এতে করে বাড়ছে তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি।
গত মার্চ ও এপ্রিল মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অন্তত ২০ জন প্রবাসী মারা গেছেন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। এদের বেশিরভাগ চট্টগ্রামের রাউজান, হাটহাজারী ও ফটিকছড়ির বাসিন্দা।
চিকিৎসকদের মতে, মাত্রাতিরিক্ত দুশ্চিন্তার কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান প্রবাসীরা। বিশেষ করে ভিসার মেয়াদ শেষে নবায়নের চিন্তা, ভালো কর্মসংস্থান না পাওয়া, মাস শেষে ঠিক মত বেতন না পাওয়াসহ পারিবারিক নানা দুশ্চিন্তা তাদের মৃত্যুর কারণ হতে পারে। এসবের সঙ্গে চলমান করোনা পরিস্থিতিতে ভয়-আতঙ্ক যোগ হয়ে হৃদরোগে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়াচ্ছে অনেক গুণ।
চিকিৎসকরা বলছেন, প্রবাসীদের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। কারণ তারা দেশ থেকে অনেক দূরে থাকে, তাদের মধ্যে সারাক্ষণ দেশের পরিবার পরিজনের জন্যে চিন্তা কাজ করে। আর্থিক অস্বচ্ছলতাও এর জন্যে দায়ী।
কিছু গাইডলাইন অনুসরণ করলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমতে পারে বলে একাধিক চিকিৎসক সমকালকে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রবাসীদের পাশে থাকতে হবে পরিবারের সদস্যদের। মানসিক শক্তি বৃদ্ধিতে প্রবাসীদের চাপ মুক্ত করার চেষ্টা করতে হবে। এছাড়া হৃদরোগ ও মৃত্যু ঝুঁকি কমাতে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন, অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার বাদ দেওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম ও বিনোদনের ব্যবস্থা করা, ব্লাড প্রেসার ও ডায়বেটিস চেক করাসহ প্রবাসীদের সচেতন করতে কমিউনিটি সংগঠনগুলোর উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন। সপ্তাহে বা মাসে অন্তত একটি করে হলেও সচেতনতামূলক সেমিনার, প্রশ্ন-উত্তর পর্ব করলেও প্রবাসীদের হৃদরোগের ঝুঁকি কিছুটা কমে আসতে পারে।
মন্তব্য করুন