কানাডায় প্রবাসী বাঙালিদের ইফতারে নেই আমেজ

কানাডায় পরিবারের সঙ্গে প্রবাসী বাঙালিদের ইফতার
কানাডা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২০ | ২৩:৩৩
কানাডায় পবিত্র রমজান মাস ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। তবে প্রতিবছরের মতো এ বছরে নেই কোনো আমেজ। কেনাকাটা, নামাজ, মসজিদে তারাবি সব যেন কেমন এলোমেলো হয়ে আছে। বিষণ্নতায় দিন কাটছে প্রবাসী বাঙালিদের। একের পর এক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি আর মৃত্যু যেন আতঙ্কিত করে তুলেছে গোটা বিশ্বকে।
বরফাচ্ছন্ন কানাডার সবগুলো শহর প্রায় আট মাসই বরফে আচ্ছাদিত থাকে। এ বছর রমজান মাসে এর ব্যতিক্রম ঘটেছে। বরফ গলতে শুরু হয়েছে। তবে বৈরী আবহাওয়া না থাকলেও এ বছর করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সব কিছুকে ম্লান করে দিয়েছে।
এ বছর বেশিরভাগ লোকই কোয়ারেন্টাইনে থাকার ফলে দিন শেষে পরিবারের সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে ইফতারের আয়োজন করেছে। বাংলাদেশের মত কানাডাতেও বাঙালিরা ছোলা-মুড়ি মেখে মুয়াজ্জিনের আজানের ধ্বনির অপেক্ষায় থাকে। কানাডায় বাংলাদেশি হোটেলগুলোতেও বেচাকেনা চলছে তবে তা গত বছরের তুলনায় খুবই কম। আগের সেই জমজমাট ইফতারির কেনাবেচা চোখে পড়ছে না। বাঙালি রেস্টুরেন্টগুলো নিচ্ছে ডেলিভারি অর্ডার।
ক্যালগেরিতে ইসলামিক সোসাইটি অব ক্যালগেরি কোভিড-১৯ এর এই সময়ে শনিবার ও মঙ্গলবার কিছু সংখ্যক পরিবারকে ইফতারি ডেলিভারি দেওয়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
কানাডার ক্যালগেরিতে বিএমআইসিসির নিজস্ব একটি মসজিদও রয়েছে। প্রতি বছরের মতো প্রবাসী বাঙালিরা মসজিদটিতে এবার আর আয়োজন করেনি ইফতারের। নারী-পুরুষের পদচারণায় হবে না ইফতার আর তারাবি নামাজ।
প্রবাস জীবনে যান্ত্রিকতাময় দিনগুলোতে ইফতার আর তারাবি নামাজ শেষে এই সময়টাতে প্রবাসী বাঙালিরা মিলিত হতো একে অপরের সঙ্গে। পরিণত হতো মিলনমেলার। এশিয়ান এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশে সবাই মিলে যখন ইফতার করতো তখন যেন মনে হতো একখণ্ড বাংলাদেশ। গত বছরের স্মৃতিই এবার সবাই রোমন্থন করবে।
কানাডার ক্যালগেরিতে বসবাসরত প্রবাসী প্রকৌশলী মোহাম্মদ কাদির বলেন, জীবনে এই প্রথম এই মাসটিতে আমরা প্রবাসী বাঙালিরা সবাই মিলে ইফতার করতে পারছি না। পবিত্র এই মাসে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সবাইকে কবুল করুন।
ক্যালগেরির আবদুল্লা রফিক বলেন, রমজান মাস এমন একটা মাস, যে মাসে গুনাহ মাফ হয়। আর ইফতারির আগে দোয়া কবুল হয়। আল্লাহ আমাদের এই মহামারীর থেকে মুক্তি দেবেন-পবিত্র এই মাসে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে এটাই আমাদের প্রার্থনা।
সিয়াম সাধনার এই মাসে সংযম আর আত্মশুদ্ধির মধ্য দিয়ে যাবতীয় ভোগবিলাস, অন্যায়, অপরাধ, হিংসা, বিদ্বেষ, সংঘাত পরিহার করে ব্যক্তিগত ও সমাজ জীবনে বয়ে নিয়ে আসবে শান্তির বার্তা- করোনা ভাইরাস থেকে সমগ্র জাতি মুক্তি পাবে-ক্যালগেরিতে বসবাসরত প্রবাসী বাঙালিদের এমনটাই প্রত্যাশা।