বৃহত্তর টরন্টোতে বসবাসকারী বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের প্রাক্তন সদস্যরা তাঁদের প্রাণের সংগঠনের ৭০ বছর উদযাপন করেন। গতকাল রোববার টরন্টোর ৯ ডজ রোডের রয়েল কানাডিয়ান লিজিয়ন হলে এ আয়োজন করা হয়। ‘গৌরবের ৭০ বছর’ শিরোনামে এই অনুষ্ঠানে সংগঠনের শতাধিক সদস্য এক অনাবিল আনন্দ উৎসবে মেতে উঠেন। কবিতা আবৃত্তি, সংগীত পরিবেশন, স্মৃতিচারণ এবং প্রাক্তন সদস্যদের মতবিনিময়ের মধ্যে দিয়ে প্রায় চার ঘণ্টার এক উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠানে এক প্রাণের স্পন্দন ধ্বনিত হয়। 

বক্তারা বলেন, ১৯৫২ সালে যাত্রা শুরু করা বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রগতিশীল, বিজ্ঞানমনস্ক এবং অসাম্প্রদায়িক দেশ গঠনে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের অবদান বাংলাদেশের ইতিহাসে সব সময় উজ্জ্বল অক্ষরে লেখা থাকবে। দেশের বিভিন্ন ক্রান্তিকালে এই সংগঠন সব সময় অগ্রণী এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এই সংগঠনের সদস্যদের মধ্যে যে সম্প্রীতির দৃঢ় বন্ধন লক্ষ্য করা যায়, তা বাংলাদেশের অন্য কোন ছাত্র সংগঠনের মধ্যে কখনও লক্ষ্য করা যায় না। যার ফলে প্রবাসে থেকেও এত অধিক সংখ্যক সদস্যের সমাবেশ ও মিলন মেলা সবার নজর কাড়ে। অনুষ্ঠানে ছাত্র ইউনিয়নের প্রাক্তন সদস্যরা প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন, তারা আজীবন সুন্দর সমাজ এবং মানুষের মঙ্গলের জন্য কাজ করে যাবেন। 

 ‘গৌরবের ৭০ বছর’ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক নেতা এবং গৌরবের ৭০ বছর অনুষ্ঠানের সমন্বয়ক মাহাবুব আজাদ। এ অনুষ্ঠানে ছাত্র রাজনৈতিক জীবনের স্মৃতিচারণ করেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও মুক্তিযোদ্ধা ডঃ আজিজুল হক, মাসুক মিয়া, প্রাক্তন ছাত্র ইউনিয়ন নেতা দেলওয়ার এলাহী, মনোরঞ্জন তালুকদার, আকরাম সাইয়েদ হেলাল এবং কানাডা উদীচীর সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্র ইউনিয়নের প্রাক্তন নেতা মিনারা বেগম। এ ছাড়া এ অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক উদ্যোগ কানাডার আহ্বায়ক বিদ্যুৎ রঞ্জন দে, বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী আলেয়া শরাফী, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক উদ্যোগ কানাডার আহ্বায়ক মাহবুব আলম, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের প্রাক্তন নেতা মনিরুজ্জামান রাজু, টরন্টো ফিল্ম ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মনিস রফিক এবং বাংলা সাহিত্যের স্বনামধন্য কবি আসাদ চৌধুরী। 

অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের প্রাক্তন সভাপতি, আন্তজার্তিক স্টুডেন্ট ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত সহ সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ দুজা। আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত দর্শক, আগত অতিথি, বক্তা, শিল্পী এবং আয়োজন কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ইউনিয়ন নেতা আজফার সৈয়দ ফেরদৌস।  

শারমিন শরীফ শর্মী এবং সোলায়মান তালুত রবিনের সঞ্চালনায় ‘গৌরবের ৭০ বছর’ অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন জয় দাশ, মৈত্রেয়ী দেবী, মমতাজ মমতা, সুভাষ দাশ, এবং শাজাহান কামাল। অনুষ্ঠানের সবশেষে সমবেতভাবে কানাডা এবং বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়।