- প্রবাস
- সাইকেলে ভারত থেকে বাংলাদেশে অক্ষয়, জানালেন শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা
সাইকেলে ভারত থেকে বাংলাদেশে অক্ষয়, জানালেন শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা

বাংলাদেশ ভ্রমণকারী ভারতীয় তরুণ অক্ষয় ভগত- সমকাল
মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন সাইকেল চালিয়ে বাংলাদেশ ভ্রমণকারী তরুণ অক্ষয় ভগত। আজ একুশে ফেব্রুয়ারি দুপুর সাড়ে ১২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভারত এবং বাংলাদেশের পতাকা টাঙানো সাইকেল নিয়ে উপস্থিত হন তিনি। এর পর শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে সফর সমাপ্তি টানেন।
তিনি সাইকেল চালিয়ে বিশ্বের নানা দেশ ভ্রমণ করেছেন এবং দীর্ঘ সাইকেল সফরের জন্য গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডে নামও লিখিয়েছেন।
অক্ষয় ভগত বলেন, ‘আমার এবারের যাত্রার লক্ষ্য হচ্ছে পরিবেশ রক্ষার বার্তা দেওয়া। বিশ্ব এখন জলবায়ুসহ নানা পরিবেশগত হুমকির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে মানুষের মধ্যে যেন সচেতনতা আসে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ভ্রমণের আরেক দিক হলো এ দু-দেশের ভাষা, সংস্কৃতি এক। দুই দেশের ঐক্য যেন বজায় থাকে। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনে আমার এই যাত্রা। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের মাধ্যমে আমি আমার এই বাংলাদেশ যাত্রা শেষ করলাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত ১৮ ডিসেম্বর আমি বাংলাদেশে পা রাখি। এ কয়েকদিনে আমি মোটামুটি অনেকগুলো জেলা ঘুরেছি। বেনাপোল, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, মুজিবনগর, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, পাবনা, নাটোর, রাজশাহীসহ অনেক জায়গায় ভ্রমণ করেছি।’
২০১৮ সালের ৫ মার্চ বাড়ি থেকে বের হয়ে ৪০১ দিনে সারা ভারতবর্ষ ভ্রমণ করেন অক্ষয়। পেরিয়েছেন প্রায় ২৮ হাজার কিলোমিটার পথ। এ বিষয়ে এই তরুণ বলেন, ‘পুরো সফরে আমার বাহন ছিল সাইকেল। এরপর বাড়ি ফিরে পুনরায় যাত্রা শুরু করি এবং লাদাখের দুর্গম পার্বত্যাঞ্চলে উম লিং লা পাসে বিশ্বের প্রথম নাগরিক হিসেবে সাইকেল নিয়ে পৌঁছায়।’
বিশ্ব ভ্রমণের কথা জানিয়ে ভগত বলেন, ‘এরপর আমি বেরিয়ে পড়ি চাঁদের পাহাড়ের জার্নির উদ্দেশ্যে। চলে যাই আফ্রিকার কেনিয়ায়। সেখানে আমি কেনিয়া, উগান্ডা, রাবান্ডা, তানজানিয়া চারটা দেশ ভ্রমণ করি। ওখানে থাকাকালীন আমার বাড়িতে আমার দিদি মারা যায়। তখন আমি আফ্রিকা থেকে ফিরে আসি। তারপর আমি আবার আমার জার্নি শুরু করি। জার্নি এখনও চলছে।’
অক্ষয় ভগতের বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলার বাগমুন্ডি থানার বুড়দা গ্রামে। প্রথম থেকেই অভাবের সংসার অক্ষয়দের। তার বাবা হোটেলে কাজ করেন। মাধ্যমিকের পরে পড়াশোনায় পাঠ চুকিয়েছেন। একটা সময়ে খবরের কাগজ বিক্রি করেছেন। বাজারে বাজারে ঘুরে ঝালমুড়ি বিক্রি করেছেন।
২০১৮ সালের ৫ মার্চ একটি সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন অক্ষয়। সঙ্গে একটি স্মার্ট ফোন, ভারতের ম্যাপ, আর অল্প নগদ টাকা। যাত্রা শুরু হয়েছিল বাঘমুণ্ডির লহরিয়া শিবমন্দির থেকে। তার সে সাইকেল যাত্রার লক্ষ্য ছিলো বাল্যবিবাহ বন্ধ করা। সে-সময় তার ভারতবর্ষ সফর করতে ১ বছর ১ মাস ৬ দিন সময় লাগে। এর মধ্য দিয়ে সর্বোচ্চ সাইকেল চালানোর জন্য ২০১৯ সালের ২৬ জানুয়ারি গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের নিজের নাম রেকর্ড করে নেন অক্ষয় ভগত।
মন্তব্য করুন