যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল কার্যালয়ে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়েছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার অমর একুশের এই গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানটিতে বাংলাদেশি-আমেরিকান নাগরিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক, নতুন প্রজন্ম ও কমিউনিটি সদস্যসহ বিপুল সংখ্যক লোক উপস্থিত ছিলেন।

একুশের প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ১ মিনিটে কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম কনস্যুলেটের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়ে কনুস্যলেটে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। এর পর শহীদ মিনারে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, বাণিজ্যিক ও কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে পর্যায়ক্রমে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। ৫২’র ভাষা শহিদদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। অনুষ্ঠানে মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

কনসাল জেনারেল ড. ইসলাম তার বক্তব্যে ৫২’র মহান ভাষা শহিদদের স্মৃতির প্রতি ও ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াইসহ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সব সংগ্রামের নেতৃত্বদানকারী সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ নামক এক স্বাধীন স্বার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল এবং তিনিই প্রথম বারের মতো জাতিসংঘে সাধারণ পরিষদে বাংলায় ভাষণ দিয়ে বিশ্ববাসীর সঙ্গে বাংলাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করে, যা জাতি হিসেবে আমাদেরকে গৌরবান্বিত করেছে। তিনি নিউইয়র্ক শহরে একটি স্থায়ী শহিদ মিনার স্থাপনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন এবং পরবর্তী প্রজন্মকে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চায় উদ্বুদ্ধ হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস, ঐতিহ্য, ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে আরো সুন্দর ও সার্থকভাবে ফুটিয়ে তোলার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে ৫২’র সব ভাষা শহীদ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সব শহীদ সদস্য, ৭১-এর স্ শহীদ, শহীদ বুদ্ধিজীবী এবং শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।