পাকিস্তানের বাংলাদেশ হাইকমিশনে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাব গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে। বুধবার পাকিস্তানের বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) খাদীজা আক্তার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি এ তথ্য জানানো হয়। 

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অনুষ্ঠানের শুরুতে হাইকমিশনের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা কালো ব্যাজ ধারণ করেন। সকলের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার রুহুল আলম সিদ্দিকী। 

দিবসটি উপলক্ষে ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের লক্ষ্যে দূতালয় প্রাঙ্গণে একটি অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। হাইকমিশনার সব কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং শিশুদের সঙ্গে নিয়ে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এসময় সকলে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ গানটি গান। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। 

এরপর হাইকমিশনারের সভাপতিত্বে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে আলোচনা পর্ব শুরু হয়।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। হাইকমিশনার রুহুল আলম সিদ্দিকী তার বক্তব্যে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে মাতৃভাষা বাংলার অধিকার প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ভাষা শহীদদের মহান আত্মত্যাগকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি। 

তিনি বলেন, আমাদের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম ও এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। এই ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, ভাষা ভিত্তিক একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থা গঠনের ভিত রচিত হয়েছিল। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার, শফিউদ্দিনসহ আরও অনেকের আত্মত্যাগের বিনিময়ে তা চূড়ান্ত রূপ পায়।

হাইকমিশনার ভাষা আন্দোলন এবং স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে যার যার অবস্থানে থেকে একযোগে কাজ করে জাতির পিতার স্বপ্নের প্রগতিশীল, প্রযুক্তিভিত্তিক, জ্ঞান নির্ভর, অসাম্প্রদায়িক সমৃদ্ধ ও আত্মমর্যাদাশীল ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠা করার জন্য সকলকে আহ্বান জানান। 

আলোচনা পর্বে অন্যান্য কর্মকর্তারা ভাষা আন্দোলনে ভাষা শহীদ ও ভাষা সৈনিকদের গৌরবোজ্জ্বল অবদানের কথা ও দিনটিকে ইউনেস্কো কর্তৃক আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দানের বিষয়ে আলোচনা ও এর তাৎপর্য তুলে ধরেন।

সন্ধ্যায় শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্য ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়। এরপর শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।