- প্রবাস
- গাজীপুর সিটি ভোটে সমস্যার নাম ইভিএম
গাজীপুর সিটি ভোটে সমস্যার নাম ইভিএম

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ৭৭ নম্বর কাশিমপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে নারী ভোটারদের দীর্ঘ সারি। ছবি: সমকাল
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট নিয়ে যেসব উদ্বেগ উৎকণ্ঠা ছিল, তেমন কিছুই চোখে পড়ছে না। তবে সকাল থেকেই ইভিএমের কারণে বহু কেন্দ্রে ভোটগ্রহণে ধীরগতি দেখা গেছে। কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ সারি রয়েছে, কিন্তু ভোট নিতে দেরি হচ্ছে।
৫ নম্বর ওয়ার্ডের ৭৭ নম্বর কাশিমপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ছয়টি বুথেই ভোটারদের দীর্ঘ সারি। ভোটারদের ইভিএম বুঝতে সমস্যা হওয়ায় ভোটগ্রহণে দেরি হয়ে যাচ্ছে। কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা এ এ এম মো. মুস্তাকিম বলেন, ‘রীতিমতো পাগল হয়ে যাচ্ছি। এখানে ছয়টি বুথ। কোনো ভোটই আট দশ মিনিটের কমে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সমস্যা দেখা দিলে এক বুথে যাচ্ছি, আবার অন্য বুথে সমস্যা দেখা দিচ্ছে তো সেখানে দৌড়াচ্ছি। এভাবে বিকেল ৪টার মধ্যে পুরো ভোটগ্রহণ শেষ করতে পারা যাবে কিনা সন্দেহ।’
প্রিজাইডিং কর্মকর্তা এ এ এম মো. মুস্তাকিম জানান, কেন্দ্রটির ১ নম্বর বুথে ৩২৮ ভোটের মধ্যে সাড়ে তিন ঘণ্টায় অর্থাৎ সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ মাত্র ৬৮টি ভোটগ্রহণ হয়েছে। ২ নম্বর বুথে ৩২৮ ভোটের মধ্যে একই সময়ে মাত্র ৭১টি ভোট পড়েছে। অথচ বুথের সামনে ভোটারদের দীর্ঘ সারি রয়েছে।
গাজীপুর সদরের টেকনগপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আটটি বুথের প্রতিটিতে শতাধিক ভোটারের সারি দেখা গেছে। কেন্দ্রটির প্রিজাইডিং রেজাউর রহমান বলেন, দেড় ঘণ্টায় আট বুথে মাত্র ৩ শতাংশ ভোট পড়েছে। এখানে মোট ভোটার দুই হাজার ৪০৭ জন। ইভিএমের কারণে কিছুটা ধীরগতি দেখা যাচ্ছে।
ওই কেন্দ্রের ভোটার জাবেদ হোসেন বলেন, ‘এক ঘণ্টার বেশি অপেক্ষার পর ভোট দিতে পেরেছি, আমার ভোট দিতে তিন-চার মিনিট লাগছে।’
একই কেন্দ্রের অপর ভোটার মিজান বলেন, ‘নেট স্লো, ফিঙ্গার প্রিন্ট মিলছে না, সমস্যা হচ্ছে। প্রিজাইডিং অফিসার আমাকে অপেক্ষা করতে বলেছেন।’
১৩৮ নম্বর কেন্দ্র সালনা নাসির উদ্দিন মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রেও ভোটারদের দীর্ঘ সারি। সেখানে দায়িত্বরত সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘এক নম্বর বুথে নারী ভোটাররা কোথায় চাপ দিতে হতে তা বুঝতে পারছেন না, ফলে দেরি হয়ে যাচ্ছে। ভেতরে সিসি ক্যামেরা রয়েছে, এজন্য প্রবেশ করতে সাহস করছি না আমরা। এই কেন্দ্রে তিনটি বুথ রয়েছে, ইভিএম বুঝতে না পারায় ভোটারদের দীর্ঘ লাইন পড়ে যাচ্ছে।’
টঙ্গীর ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের দারুস সালাম মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোট দিতে এসে আঙ্গুলের ছাপ না মেলায় ঘণ্টাখানেক বিলম্বে ভোট দিয়েছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খানের বড় ভাই আব্দুর রহমান খান (৭৭)।
ভাইয়ের ভোটপ্রদানে সমস্যা দেখা দেওয়ার পর আজমত উল্লা খান বলেন, ‘আমার বড় ভাইয়ের একটু ঝামেলা হয়েছে। স্মার্ট কার্ড আনতে গেছে। সেটি আনলেই ভোট দিতে পারবেন। একইসঙ্গে কোনো ভোটারের যদি আঙুলের ছাপ না মেলে, তাহলে স্মার্ট কার্ড দিয়ে তিনি ভোট দিতে পারবেন।’
পরে বাড়ি থেকে স্মার্ট কার্ড এনে ভোট দেন আব্দুর রহমান খান।
ধীরগতি প্রসঙ্গে ঢাকায় নির্বাচন কমিশনার আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ইভিএম কিছু ক্ষেত্রে ননফাংশনাল থাকে। হয়তো কাজ করতে পারে না, কিন্তু ট্রাবলশুট করার সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর করা হয়। মেশিন কখনো কাজ না করলে আমাদের কারিগরি লোক আছেন, ৫-১০ মিনিটের মধ্যে তারা সেটা ঠিক করে দিচ্ছেন।’
মন্তব্য করুন