- প্রবাস
- মার্টিনেজকে কয়েক ঘণ্টার জন্য ঢাকায় আনার চেষ্টা
মার্টিনেজকে কয়েক ঘণ্টার জন্য ঢাকায় আনার চেষ্টা
এই ধরুন সকালে এলো, দুপুরে হোটেলে লাঞ্চ সেরে সন্ধ্যায় কলকাতায় রওনা দিল

দু’দিন ধরে সকাল-বিকেল মিটিংয়ের পর মিটিং করছেন। ঢাকায় করপোরেট অফিসগুলোতে দৌড়াচ্ছেন কলকাতার ক্রীড়া উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্ত। সবার কাছেই বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজের বাংলাদেশে আসার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন। কেউ কেউ আগ্রহী হলেও সমস্যাটা ডলারের পেমেন্ট প্রক্রিয়ায়। এই মুহূর্তে বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলার দেশের বাইরে পাঠাতে দীর্ঘসূত্রতা ও নানা নিয়মের বেড়াজাল টপকাতে হবে।
এ ছাড়া কৃচ্ছ্রসাধন এবং সরকারের আর্থিক নীতির কারণে দুষ্প্রাপ্য ইউএস ডলার। সব মিলিয়ে এক দিনের জন্য মার্টিনেজকে ঢাকায় আনতে যে পরিমাণ ডলারের প্রয়োজন, তা জোগাড় করতে পারেননি তিনি। এখন তিনি চেষ্টা করছেন, অন্তত কয়েক ঘণ্টার জন্য মার্টিনেজকে ঢাকায় এনে তাঁর ইচ্ছাপূরণ করতে। তাতে হয়তো ২০ থেকে ২৫ হাজার ইউএস ডলারে হয়ে যাবে। গত রাতে সেই অর্থ সংগ্রহের জন্যই একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শেষ মিটিংটি করেছেন কলকাতার ওই এজেন্ট। শতদ্রু দত্ত আশাবাদী, তিনি মার্টিনেজকে নিয়ে আসবেন। ‘আশা করছি, ৩ জুলাই মার্টিনেজকে ঢাকায় আনতে পারব। তবে আগামী ১০ জুনের মধ্যে তাঁর সফরের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে পারব।’
ইতালিতে ছুটিতে থাকা এমিলিয়ানো মার্টিনেজ এখনও জানেন তিনি বাংলাদেশে আসবেন ৩ জুলাই। সারাদিন ঢাকায় থেকে পরের দিন যাবেন কলকাতায়। কিন্তু তাঁর এই সফরসূচিতে খানিকটা পরিবর্তন আনতেই হচ্ছে। ‘ঢাকায় এসে অনেকের সঙ্গে অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা করেছি। ইচ্ছা ছিল এক দিনের জন্য মার্টিনেজকে ঢাকায় আনব। কিন্তু ডলার সংকটের কারণে তা হচ্ছে না। এখন কয়েক ঘণ্টার জন্য আনতে চাইছি। এখন দেখি একটা গুডউইল লাঞ্চ বা এ ধরনের কিছু একটা করা যায় কিনা। এই ধরুন সকালে এলো, দুপুরে হোটেলে লাঞ্চ সেরে সন্ধ্যায় কলকাতায় রওনা দিল।’
মোবাইল ফোনে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশের সঙ্গে মার্টিনেজের সফর নিয়ে কথা এগিয়েছে শতদ্রু দত্তের। এর বাইরে এশিয়াটিক এজেন্সির সঙ্গেও মিটিং করেছেন তিনি। তবে সব জায়গাতেই নাকি ডলার পেমেন্টের ব্যাপারেই পিছিয়ে যাচ্ছে। অনেকেরই ধারণা ছিল, বসুন্ধরার মতো বড় শিল্পগোষ্ঠী মার্টিনেজকে ঢাকায় আনার ব্যাপারে আগ্রহ দেখাবে। কিন্তু কলকাতার এই এজেন্ট তাদের কাছ থেকে তেমন কোনো সাড়া পাননি বলে জানান।
‘ক্যাশ ডলারে আমরা লেনদেন করব না। বাংলাদেশের আইনে যা আছে আমি সেভাবেই এগোতে চাই। এই ধরনের হাইপ্রোফাইল সেলিব্রিটিকে নিয়ে পরবর্তী সময়ে কোনো কেলেঙ্কারিতে জড়াতে চাই না।’ এমিলিয়ানো মার্টিনেজের এই সফরটি মূলত কলকাতাকেন্দ্রিক। সেখানেই দু’দিন থাকবেন তিনি। তবে মার্টিনেজ নিজে থেকে আগ্রহ দেখিয়েছেন বাংলাদেশে আসার জন্য। তিনিই কলকাতার এই এজেন্টকে অনুরোধ করেছেন বাংলাদেশ সফরে কিছু একটা করতে।
বাংলাদেশে মার্টিনেজ তাঁর সমর্থক এবং আর্জেন্টাইন ভক্তদের আবেগ দেখতে চান। আর এ জন্য ন্যূনতম অর্থে তিনি ঢাকা সফর করতে চান বলে জানিয়েছেন শতদ্রুকে। ঢাকায় আসার সঙ্গে হোটেলের খরচটা উঠে গেলেই মার্টিনেজকে নিয়ে আসতে চান কলকাতার এই এজেন্ট। ‘একজন বাঙালি হিসেবে আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি, মার্টিনেজকে ঢাকায় আনতে। চেষ্টা করছি, এখানে এলে যেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করানো যায়। তবে একান্তই যদি সম্ভব না হয়, যদি মার্টিনেজের ঢাকা সফর বাতিল করতে হয়, তাহলে ওই দিন তিনি দুবাইতে ইভেন্ট করবেন।’
যদি মার্টিনেজকে ঢাকায় আনতেই হয়, তাহলে প্রথমে কলকাতার শতদ্রু স্পোর্টসের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো প্রতিষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক চুক্তি করতে হবে। এরপর সেই প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ডলার প্রেরণের অনুমতি চাইবে। পুরো প্রক্রিয়াটি একটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আর এখানেই আটকে যেতে পারে মার্টিনেজের বাংলাদেশ দর্শনের ইচ্ছা।
মন্তব্য করুন