- রাজশাহী
- সবুজ ছায়া থেকে মরু হচ্ছে রাস্তাটি
সবুজ ছায়া থেকে মরু হচ্ছে রাস্তাটি

সড়কের হোসেনের বটতলা এলাকায় ফেলে রাখা হয়েছে কাটা গাছের গুঁড়ি -সমকাল
রাজশাহীর পুঠিয়া-তাহেরপুর-বাগমারা ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ১৮ ফুট চওড়া সড়কের সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে সম্প্রতি। সে সময় দু'পাশের গাছ ছিল অক্ষত। তবে সড়কে নালা নির্মাণসহ নানা অজুহাতে সাবাড় করা হচ্ছে হাজারো গাছ। স্থানীয়দের দাবি, সবুজ-শ্যামল পরিবেশ থেকে মরুতে পরিণত হচ্ছে রাস্তাটি।
জানা গেছে, সড়কটি ১৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার করা হয়। রাস্তাটি নতুন করে চওড়াও হয়নি। সওজ, বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, জেলা পরিষদ ও বন বিভাগ কাটছে গাছ।
বাগমারার একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম। তিনি প্রতিদিন এ সড়কে বাইক নিয়ে পুঠিয়া থেকে অফিস করতে যান। দু'পাশের সবুজ গাছ তার মতো হাজারো পথচারীকে দিত শীতল ছায়া। তবে দু'পাশের গাছগুলো কেটে ফেলায় এখন মরুর উত্তাপ সহ্য করতে হচ্ছে।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, 'সড়ক নির্মাণের সময় প্রয়োজনে গাছ কাটা যেতেই পারে। কিন্তু সড়ক নির্মাণ হয়ে যাওয়ার পর গাছ কাটার কারণ কী কারণ থাকতে পারে? এখানে বাড়িঘরও নেই। দু'পাশে বিল আর ফসলি জমি। শুনেছি, সড়কের পাশে ড্রেন (নালা) নির্মাণ করা হবে। কিন্তু যেখানে বাড়ি নেই, সেখানে ড্রেনের প্রয়োজনীয়তা কতটুকু?'
শীলমাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন মুকুল বলেন, 'সওজ, বন বিভাগ, জেলা পরিষদ রাতে গাছ কেটে নিচ্ছে। দিনের বেলা খড়ি সরাচ্ছে। আম, জাম, কাঁঠাল, মেহগনিসহ ফলদ গাছ কাটা হচ্ছে। রাস্তা হয়ে গেছে। নতুন করে চওড়া হয়নি। তাহলে গাছ কাটতে হবে কেন? কোনো টেন্ডারও হয়নি। আমরা এর প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করেছিলাম।'
স্থানীয় বাসিন্দা মইদুল ইসলাম বলেন, গাছ কাটার বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েও ফল পাননি তাঁরা। বড় গাছগুলো তৈরি হতে অন্তত দুই থেকে চার যুগ সময় লেগেছে। এখন এক নিমেষেই সেগুলো কেটে ফেলা হচ্ছে। এতে পরিবেশ বিপর্যয় হবে। সড়কে চলাফেরা করতেও মানুষের রোদের তাপে কষ্ট হবে।
রাজশাহী সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাব ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার শাহ মো. আশিক দাবি করেন, সড়কের পাশে যেখানে বাড়িঘর আছে, সেখানে নালা নির্মাণ করা হবে। আর রাস্তার ৩ ফুটের মধ্যে যেসব গাছ আছে, তা দুর্ঘটনা প্রতিরোধের জন্য কাটা হচ্ছে। আরও কিছু গাছের ওপর দিয়ে পল্লী বিদ্যুতের ৩৩ কেভি লাইনের তার গেছে। সেই তার গাছে স্পর্শ করছে। এ কারণে কিছু গাছ কাটা পড়ছে। তিনি বলেন, কতগুলো গাছ তা বলা যাচ্ছে না। এ সড়কের দুপাশের গাছ চারটি প্রতিষ্ঠানই কেটে নিচ্ছে। '
রাজশাহী বিভাগীয় বন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রফিকুজ্জামান শাহ বলেন, ঠিক কতগুলো গাছ কাটা হচ্ছে তা নলেজে নেই। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকার বলেন, 'গাছ কিছু বিক্রি হয়েছে, কিছু হয়নি। বিস্তারিত জানি না আমি।'
মন্তব্য করুন