পটুয়াখালীর দশমিনার আলীপুর ইউনিয়নে কলেজছাত্রী হাফসাকে (২০) আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় গত বুধবার দু'জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলো- হাফসার ভাবি আয়শা বেগম নিপা ও ফকির নুরজাহান বেগমের স্বামী মনির সরদার। আটক দু'জনের তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল হাফসার মোবাইল ফোনের রেকর্ড ও আগুন দেওয়ার বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ জানুয়ারি উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের খলিশাখালী গ্রামের বাসিন্দা মো. শাহজাহান মৃধার ছোট মেয়ে ও আলীপুরা কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী হাফসা তাঁর ভাই রিয়াজ মৃধার শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে যান। হাফসার মধ্যে জিনের আসর আছে অভিযোগে তাঁর ভাবি আয়শা বেগম নিপা তাঁকে স্থানীয় মনির হোসেনের স্ত্রী ফকির নুরজাহান বেগমের কাছে নিয়ে যায়। জিন তাড়ানোর নামে ওই রাতে ফকির নুরজাহান একটি বিলে নিয়ে হাফসাকে মারধর করে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। হাফসার শরীরে আগুন দেওয়ার সময় হাফসা তাঁর মোবাইল ফোনের রেকর্ডার চালু রাখে। আগুনে জ্বলে যাওয়ার সময় হাফসার প্রচণ্ড আর্তনাদ ও আকুতি মোবাইল ফোনে রেকর্ড হয়ে যায়। ওই সময় পাশের একটি বাড়িতে দৌড়ে গিয়ে 'বাঁচাও বাঁচাও' বলে চিৎকার করতে থাকেন হাফসা। ওই বাড়িতে তখন বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল। বিয়ে বাড়ির লোকজন হাফসাকে বাঁচাতে গেলে তাদের বাধা দেয় ফকির নুরজাহান ও তার সঙ্গীরা।

হাফসার মেজ বোন মলিনা বেগমের স্বামী আলী হোসেন মৃধা বলেন, ওই দিন রাতে হাফসাকে গুরুতর আহত অবস্থায় দশমিনা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ২২ জানুয়ারি বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাফসার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে পাঠানোর পর গত ২৭ জানুয়ারি রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় ফকির নুরজাহান, পুত্রবধূ আয়শা বেগম নিপাসহ ছয়জনকে আসামি করে গত ২৯ জানুয়ারি হাফসার মা লুৎফুন্নেছা বেগম দশমিনা থানায় মামলা করেন।

দশমিনা থানার ওসি মো. মেহেদী হাসান বলেন, মামলায় ছয়জনের নামসহ অচেনা আরও কয়েকজন আসামি করা হয়। দু'জনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের ধরতে অভিযান চলছে।