ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত নাগরিকদের নিরাপদ জীবন-যাপনের স্বার্থে প্রত্যেক ওয়ার্ডের স্থাপনা ও ভবনের পয়ঃনিষ্কাশন-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং গ্যাসলাইন নিয়মিত পর্যবেক্ষণে সংশ্লিষ্ট বিভাগের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে পর্যবেক্ষণ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। হাইকোর্ট বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে পৃথক কমিটি হবে এবং তা হবে সাত সদস্য বিশিষ্ট।

আগামী সাত দিনের মধ্যে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) চেয়ারম্যান, তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে এই কমিটি করতে বলা হয়েছে।

বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেল সমন্বয়ে গঠিত হাইেকার্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার রুলসহ এই আদেশ দেন। এ ছাড়াও আদেশে কমিটি গঠনের পর পর্যবেক্ষণে যদি বর্জ্য ও পয়ঃনিষ্কাশন এবং গ্যাসলাইনের কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরা পড়ে, তাহলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার স্বার্থে কমিটিকে আট সপ্তাহের মধ্যে আদালতে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব ও গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজার এলাকায় কয়েকটি ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। প্রাণহানিসহ বহু হতাহত হন। এ প্রেক্ষাপটে পরিবেশ ও মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে গত রোববার ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত নাগরিকদের নিরাপদ জীবন-যাপনের স্বার্থে গ্যাসলাইন এবং বর্জ্য ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নিয়মিত পর্যবেক্ষণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জনস্বার্থ একটি রিট আবেদন দায়ের করা হয়। মঙ্গলবার ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদেশ দেন হাইকোর্ট।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তৌফিক সাজাওয়ার। পরে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, সায়েন্স ল্যাবরেটরি ও সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনার প্রধান কারণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর অবহেলা। ঢাকা শহরে থাকা হাজার হাজার স্থাপনা বা ভবনের পয়ঃনিষ্কাশন ও গ্যাসের লাইন তদারকি, রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো এ বিষয়ে সক্রিয় নয়। এ কারণে রিটটি দায়ের করা হয়।

তিনি জানান, দুই সিটি করপোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডের গ্যাস ও পয়ঃনিষ্কাশন লাইন তদারকির জন্য সাত সদস্যের একটি করে কমিটি গঠন করে কার্যক্রম শুরু করতে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন। প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য সাত সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি থাকবে। আট সপ্তাহ পর অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।