- রাজশাহী
- অভিযোগ ধর্ষণের, পুলিশ মামলা নিলো ধর্ষণচেষ্টার
অভিযোগ ধর্ষণের, পুলিশ মামলা নিলো ধর্ষণচেষ্টার

প্রতীকী ছবি
জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে বান্ধবীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। তবে মেডিকেল রিপোর্ট না পাওয়ায় ধর্ষণের মামলার পরিবর্তে ধর্ষণচেষ্টার মামলা নিয়েছে পুলিশ।
ধর্ষণের আলামত খুঁজতে ঘটনার তিন দিন পর ভুক্তভোগীর ডাক্তারি পরীক্ষা করা হলেও ছয় দিনেও রিপোর্ট মেলেনি। থানা পুলিশের দাবি, ভুক্তভোগী মেয়েটি প্রথমে ধর্ষণচেষ্টার কথা জানালেও এখন বলছে ধর্ষণ। তাই ডাক্তারি পরীক্ষার প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত ধর্ষণ মামলা নেওয়া হবে না।
নির্যাতিতা স্কুলছাত্রীর স্বজনরা জানান, রাব্বিউল ইসলাম নামের এক যুবক ওই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের সময় তার বন্ধুরা তাকে সহযোগিতা করে। এ ঘটনার দু’দিন পর থানায় মামলা হয়েছে ধর্ষণচেষ্টার। এতে রাব্বিউল ও তার সহযোগী সুমনসহ আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাতপরিচয় আরও দু’জনকে। অথচ বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে ভুক্তভোগীকে স্কুল থেকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া তার বান্ধবীকে আসামি করা হয়নি।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ক্ষেতলালের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী গত ২২ মার্চ দুপুরে তার কথিত প্রেমিক কলিঙ্গা গ্রামের সুমনের বাড়িতে দেখা করতে যায়। এ সময় খালার বাড়িতে বেড়ানোর কথা বলে ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীকে সঙ্গে নেয় ওই শিক্ষার্থী। সুমনের বাড়িতে গেলে ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীকে এক ঘরে বসিয়ে রেখে তার বান্ধবীকে অপর ঘরে নিয়ে যায় সুমন। এ সময় অভিযুক্ত রাব্বিউলসহ কয়েক বন্ধুকে বাড়িতে ডেকে নেয় সুমন। তার তিন বন্ধু স্কুলছাত্রীর ঘরে ঢোকে। রাব্বিউল স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করার সময় ভুক্তভোগী চিৎকার দিলে অন্য দু’জনসহ ধর্ষক পালিয়ে যায়। ঘটনার দিন বিকেলে বাড়ি এসে স্কুলছাত্রী বিষয়টি তার মাকে জানায়।
পরে ২৪ মার্চ শুক্রবার রাব্বিউল, সুমনসহ অজ্ঞাতপরিচয় দুই জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে থানায় মামলা হয়। পরে ভুক্তভোগী ধর্ষণের শিকার হয়েছে এমন দাবি জানালে, তাকে ২৫ মার্চ শনিবার জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়। তবে পরীক্ষার পর ছয়দিন অতিবাহিত হলেও রিপোর্ট থানায় জমা হয়নি।
জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শহীদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, নির্যাতিতার ডাক্তারি পরীক্ষা গত ২৫ মার্চ সম্পন্ন হলেও আরও কিছু পরীক্ষা বাকি আছে। যেগুলো সম্পন্ন করতে সময়ের প্রয়োজন। এ জন্য রিপোর্ট দিতে বিলম্ব হচ্ছে।
ভুক্তভোগীর দাদি বলেন, গত ২৪ মার্চ দুপুরে তার নাতনিকে ধর্ষণ করা হয়েছে। ওই দিন বিকেলে তারা বিষয়টি জানতে পেরেছেন। পরে ধর্ষকের পক্ষ নেওয়া প্রভাবশালীরা ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসার প্রস্তাব দেয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত বিষয়টি মীমাংসা না হওয়ায় রাতেই মেয়ের মা থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়। অভিযোগ দেওয়ার দু’দিন পর থানায় ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়।
মামলার বাদী ও ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর মা জানান, ঘটনার দিনই অভিযোগ দিয়েছেন তিনি। তিনি মেয়েকে নির্যাতনের ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ক্ষেতলাল থানার এসআই লতিফুর রহমান বলেন, স্কুলছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় গত ২৫ মার্চ ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। তবে এখনও মেডিকেল রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন