- সাহিত্য ও সংস্কৃতি
- জাতীয় বাজেটের এক শতাংশ সংস্কৃতির জন্য বরাদ্দের দাবি
জাতীয় বাজেটের এক শতাংশ সংস্কৃতির জন্য বরাদ্দের দাবি

দেশে সংস্কৃতি খাতের উন্নয়নে আগামী অর্থবছরে জাতীয় বাজেটের এক শতাংশ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।
বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দের এ দাবি জানায় সংগঠনটি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ।
এসময় গোলাম কুদ্দুছ বলেন, সংস্কৃতি কর্মীদের অনুদানের ভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে সংস্কৃতি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে হবে। জাতীয় বাজেটের কমপক্ষে এক শতাংশ সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ করতে হবে। এ বরাদ্দের বড় একটি অংশ অবকাঠামোগত উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ, সংগঠনের অনুদান, শিল্পীদের সম্মানি এবং বিশেষ কর্মসূচি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে।
প্রত্যেক উপজেলায় ৫০০ আসনের আধুনিক মিলনায়তন নির্মাণের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ স্মরণে রেখে প্রত্যেক জেলায় ‘বঙ্গবন্ধু জন্মশতবর্ষ স্মৃতিভবন নির্মাণ করতে হবে। এ ভবনে ৭০০ আসনের আধুনিক মিলনায়তন করতে হবে। পাশাপাশি ঢাকা মহানগরীসহ অন্যান্য মহানগরীগুলোর প্রতি ৫ লাখ নাগরিকের জন্য একটি করে আধুনিক মিলনায়তন নির্মাণ করা অত্যাবশ্যক।
বাংলার ঐতিহ্যবাহী যাত্রাপালার উন্নয়নে রাজধানীসহ প্রত্যেক জেলায় একটি করে স্থায়ী যাত্রাপালার প্যান্ডেল নির্মাণের দাবি জানান তিনি। প্রত্যেক জেলায় চারুকলা প্রদর্শনীর জন্য আর্ট গ্যালারি এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও তথ্যচিত্র প্রদর্শনীর জন্য মিনি অডিটরিয়াম নির্মাণ করতে হবে।
দেশের চারুশিল্পীদের মাসিক অনুদান ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে। জাতীয় পর্যায়ের কয়েকজন শিল্পী সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা পেয়ে থাকেন। অসচ্ছল শিল্পীদের মাসিক অনুদানের পরিমাণ বাস্তবতার নিরিখে ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করার দাবি জানান তিনি।
দেশের পাঁচ হাজার সাংস্কৃতিক সংগঠনকে যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে অনুদানের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে গোলাম কুদ্দুছ বলেন, প্রত্যেক সংগঠনকে এক লাখ টাকা অনুদান দিতে হবে। মূলধারার সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানকে ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হোক।
দেশের বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় শিগগির সম্ভব ‘সম্প্রীতির জন্য সংস্কৃতি’ মূল প্রতিপাদ্য নিয়ে কর্মসূচির প্রস্তাবনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশব্যাপী ব্যাপক সাংস্কৃতিক জাগরণ গড়ে তুলতে হবে। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য জাতীয়ভিত্তিক সাংস্কৃতিক ফেডারেশনগুলোকে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচির ভিত্তিতে বিশেষ আর্থিক বরাদ্দ দিতে হবে। কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য এ খাতে চলতি অর্থবছরে ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানাই।’
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটসহ জাতীয়ভিত্তিক সাংস্কৃতিক ফেডারেশনগুলোর স্থায়ী দপ্তর নির্মাণের জন্য মতিঝিলের ক্রীড়াপল্লীর অনুরূপ জায়গা বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানান তিনি। সংস্কৃতিকর্মীদের আবাসনের জন্য ‘সংস্কৃতিপল্লী’ নির্মাণের দাবিও আসে সংবাদ সম্মেলনে।
দেশে শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বহুমুখী শিক্ষার পরিবর্তে একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু অত্যাবশ্যক। মুক্তিযুদ্ধ ও মানবসভ্যতার ইতিহাস, অসাম্প্রদায়িক বিজ্ঞানমনস্ক আধুনিক চিন্তা সম্বলিত লেখা পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। শিক্ষাকার্যক্রমে সংস্কৃতিকে অন্তর্ভুক্ত করে প্রতি বছর সাংস্কৃতিক উৎসব ও প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করতে হবে। ’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জোটের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ।
মন্তব্য করুন