দিনভর কাঠফাটা রোদ্দুর। ভ্যাঁপসা গরমে অস্থির রাজধানীবাসী। মধুমাস জ্যৈষ্ঠের শেষ দিন বলে গরমের তীব্রতা ছিল অসহনীয় পর্যায়ে। তবে সন্ধ্যায় সেই গরমে জল ঢেলে দিলেন শেকড়ের সুরের বাউলরা। পূবের সূর্য পশ্চিমে অস্ত যাওয়ার কিছু পরেই সুরের ডালি নিয়ে বসেন দেশের প্রখ্যাত বাউলরা। অমিয় বাণীর কথা ও সুরে মধুময় হয়ে উঠল মধুমাস জ্যৈষ্ঠের শেষ সন্ধ্যাটা।

ভাববাদী গান ও লালনের সুরের দ্যোতনায় দুলতে থাকেন সুরের আসরে আগত রাজধানীর সঙ্গীত সমঝদাররা। পরিবেশনার পরতে পরতে মায়াজাল ছড়িয়ে বাউল গানের আসরকে উপভোগ্য করে তোলেন সুরের সাধকরা। এমন দৃশ্যকল্পই ছিল শিল্পকলা একাডেমির বটতলার বাউলকুঞ্জের বাউল গানের আসর সাধুমেলার ৩৭ তম আসরে।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর শুরু হয়ে আয়োজন চলে রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত।


অনুষ্ঠানে বাউল গানের সুরে সুরে দর্শক শ্রোতাদের বিমোহিত করেন বাউল ওমর আলী, সমির বাউল, লতিফ শাহ, চন্দনা মজুমদার, সিফা বাউল, পলি বাউল, মিরাজ ক্ষ্যাপা, করিম বাউল, নিলা বাউল, নাবিয়া বিনতে মিতুল, আরিফ বাউল, আনান বাউল, আরিফ দেওয়ান, ফকির সাহাবুদ্দিন, আবদুল আউয়াল, খ্যাপা বিদ্যুৎ সরকার, এম আর মানিক, আফসানা হক ইমু, ডলি মণ্ডল, এলিজা পুতুল, মৌসুমী ইকবাল, ফারুক নুরী প্রমুখ। 

অনুষ্ঠানে দলীয়ভাবে শিল্পীরা পরিবেশন করেন লালনের ‘মিলন হবে কত দিনে’। দলীয়ভাবে আরও গান পরিবেশন করেন সেন্টু, ইভা, আবির, লাভলী শেখ, টিটু, মিনা পাগলী, সিপু রানী, তানিয়া, সুমি, পিউ বিশ্বাস, শামীম, ফারুক প্রমুখ। 


না জানি ভাব নদীর কেমন ও ধারা, চির দিন পোষলাম এক অচিন পাখি, মানব জনম সফল হবে গুরুর উপদেশে, দাশের যোগ্য নই চরণে, বল সরুব কোথায় আমার সাধে পেয়ারী, কী মহিমা করিলেন সাঁই ইত্যাদি গানের কথার সুরের বৃষ্টিতে অনন্য হয়ে ওঠে শেকড়ের সুরের ব্যতিক্রমী এই আসর।

একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী সভাপতিত্বে এর আগে সংক্ষিপ্ত আলোচনাসভায় বাউল গান নিয়ে আলোচনা করেন কুষ্টিয়ার দেবরা জান্নাত। স্বাগত বক্তৃতা করেন একাডেমির প্রযোজনা বিভাগের পরিচালক সোহাইলা আফসানা ইকো।