হাসিব রহমান। সেই এইটুকুন বয়স থেকেই স্বপ্ন দেখতেন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। সেই স্বপ্ন থেকেই নিজের সামর্থ্যের মধ্যে যখন যতটুকু সম্ভব হয়েছে তা নিয়েই সমাজের অসহায় ও অবহেলিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে দেখা গেছে তাঁকে। সেই মানবিকতার হাত প্রসারিত করতে ২০১৭ সালে সমবয়সী কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে গড়ে তোলেন 'ইউথ ফর হিউম্যানিটি' নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

মফস্বলে বেড়ে ওঠা এই তরুণরা তখনও কিশোর। টিফিনের জন্য তাঁদের যে টাকা দেওয়া হতো সেই টাকা জমিয়ে অসহায়দের পাশে দাঁড়াতে শুরু করেন তাঁরা। এভাবে ধীরে ধীরে তাঁরা সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ভাগ্যোন্নয়নকে নিজেদের ভবিষ্যৎ বানিয়ে নিয়েছেন। ছোট ছোট প্রচেষ্টার সম্মিলিত রূপে গড়ে তোলা সেই সংগঠন আজ শতাধিক সদস্য নিয়ে মানবসেবায় কাজ করে যাচ্ছে।

ঝিনাইদহ জেলায় যাত্রা শুরু করা ইউথ ফর হিউম্যানিটি করোনায় কাজ করেছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ, ত্রাণসামগ্রী বিতরণসহ জরুরি প্রয়োজনে। বৈশ্বিক মহামারির প্রকোপ শেষে ইউথ ফর হিউম্যানিটি নজর দিয়েছে সমাজের সেসব সমস্যার দিকে, যা নিয়ে আজকের আধুনিক সমাজেও খুব বেশি কথা হয় না। বিশেষত প্রান্তিক অঞ্চলে, যেখানে এখনও মানুষ সচেতনতার ব্যাপারে উদাসীন।

সংগঠনটি বিভিন্ন প্রজেক্টের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে শীতার্ত ব্যক্তিদের মধ্যে প্রতিবছর কম্বল বিতরণ, সৌরবিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান, গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণ, সবার জন্য নিরাপদ স্যানিটেশন প্রকল্প, অসহায়দের বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান প্রভৃতি। তা ছাড়া স্বাবলম্বী প্রজেক্টের মাধ্যমে যাঁরা আর্থিকভাবে অসচ্ছল তাঁদের স্বাবলম্বী করার ব্যবস্থাসহ প্রতি মাসে নিয়মিত ছোট ছোট কিছু কার্যক্রম পরিচালনা করছে সংগঠনটি।

সামাজিক কাজের উদ্যোক্তা হাসিবের কাছে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আগামীতে এই সংগঠনকে আরও অনেক দূর নিয়ে যেতে চাই। তবে এর জন্য অবশ্যই প্রয়োজন স্বেচ্ছাসেবকদের অংশগ্রহণ। আমরা স্বপ্ন দেখি, একটি বৈষম্যহীন সমাজে বেড়ে উঠবে আমাদের শিশুরা। সুবিধাবঞ্চিত মানুষ বলতে কেউ থাকবে না দেশে!'