আজহারুল ইসলাম নিয়ন। একজন পুষ্টিবিদ। তবে তাঁর স্বপ্নজুড়ে মানুষের সুস্থতা। সেই এইটুকুন বয়স থেকেই অন্যের বিপদে পাশে দাঁড়িয়েছেন। তবে তিনি দেখেছেন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য একজন ডাক্তারের ভূমিকা অপরিসীম। তাই তখন থেকেই ডাক্তার হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সংকল্প তাঁর।

নিয়নের জন্ম ও বেড়ে ওঠা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। পড়েছেন স্থানীয় শিক্ষা সদন বায়েক উচ্চ বিদ্যালয়ে। এরপর ময়নামতী মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস শেষ করে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন করেছেন পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞানে।

এরপর তাঁর মাথায় ভূত চাপে শরীরচর্চার!  কুমিল্লা কান্দির পাড়ের এস কে জিমের সঙ্গে যুক্ত হন। সেখানে ইন্সট্রাক্টর হিসেবে সাত বছর কাজও করেন। বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন ঢাকার আফতাবনগরে অবস্থিত সেইফ জিমে ইন্সট্রাক্টর এবং জেনারেল ফিজিশিয়ান ও পুষ্টিবিদ হিসেবে। এই বিষয়ে জানতে চাইলে নিয়ন বলেন,  ‘মাদক ও অনলাইনে অকারণে সময় নষ্ট না করে অবসর সময়টাকে কাজে লাগানোর জন্যই মূলত শরীর গঠনের দিকে ঝুঁকেছি। এখানে নিজে যেমন শিখেছি, অন্যদেরও শিখতে উৎসাহ দেওয়ার চেষ্টা করে আসছি। কেননা, সুস্থ থাকার জন্য শরীরচর্চার বিকল্প কিছুই নেই। আমার মনে হয়, এভাবে নিজেকে সুস্থ ও ফিট রাখা যাবে। আমায় দেখে অন্যরাও উৎসাহিত হবে এবং ভালো থাকবে, মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকবে। এই ভাবনা থেকেই ব্যায়ামাগার তৈরি করি।’ ২০২২ সালে নিয়ন জাতীয় শরীর গঠন ফেডারেশন আয়োজিত মিস্টার ঢাকা বডিবিল্ডিং প্রতিযোগিতায় ১৭০ সেমি ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হন। মিস্টার বাংলাদেশ প্রতিযোগিতায় একই ক্যাটাগরিতে রানার্সআপ হন। এ ছাড়া তিনি বিভিন্ন শরীর গঠন প্রতিযোগিতায় নিয়মিত অংশগ্রহণ করেন। তাঁর ঝুলিতে আছে চ্যাম্পিয়নের পদকও। নিজের কাজ ও আগামীর স্বপ্নের কথা জানতে চাইলে আজহারুল ইসলাম নিয়ন বলেন, ‘পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যায়াম, ডায়েট, আয়ের ব্যবস্থা– সব একা করা সহজ ছিল না, তবুও হাল ছাড়িনি। অক্লান্ত পরিশ্রম, অদম্য ইচ্ছা আর অধ্যবসায় আমাকে আজ একই সঙ্গে ডাক্তার ও জাতীয় প্রতিযোগিতায় স্থান গ্রহণের সম্মাননা এনে দিয়েছে। এখানেই থেমে যেতে চাই না। ভবিষ্যতে বিশ্বমানের ফিটনেস ইন্সট্রাক্টর ও নিউট্রিশনিস্ট হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। হতে চাই বিশ্বমানের ফিটনেস আইকনও। নিয়ন নিজ স্বপ্ন জয়ের পাশাপাশি এখন অসংখ্য তরুণের অনুপ্রেরণার বাতিঘর হয়ে আলো বিলিয়ে যাচ্ছেন। অদম্য মনোবল থাকলে কিছুই যে দমাতে পারে না, তার উজ্জ্বল উদাহরণ নিয়ন।