- সাহস
- সবার আগে নিজেকে গুরুত্ব দিন
সবার আগে নিজেকে গুরুত্ব দিন

জিয়ানলুইজি বুফোন। আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানানো ইতালিয়ান এ কিংবদন্তি গোলরক্ষক নিজের লক্ষ্যের কথা প্রকাশ করেছিলেন এক কাব্যিক চিঠিতে। সেই চিঠি থেকে অনুপ্রেরণামূলক কথা তুলে এনেছেন মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ
মানুষের জীবন কত যে নাটকীয়তায় পরিপূর্ণ! জন্মের পর থেকেই মানুষ অদ্ভুত এক সংগ্রামের মুখোমুখি হয়। আমিও হয়েছিলাম। হয়েছেন আপনিও! মনে পড়ে, আমার তখন ১২ বছর বয়স। কী-ইবা বুঝি। তবু নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মুখে পড়ি আমি। সিদ্ধান্ত নিই– ঘুরে দাঁড়াব। ঠিকই আমি ঘুরে দাঁড়াই। অনেকটা আচমকাই বলা চলে। ঘুরে দাঁড়িয়ে বাতিল করে দিলাম নিশ্চিত ভবিষ্যতের কোনো সম্ভাবনাকে! কেননা, অন্তরের ডাক শুনেছিলাম আমি। সহজাত প্রবৃত্তি আমাকে দেখিয়েছিল পথ।
ভালোবেসে নিয়েছি জীবনকে
তবে বলে দিচ্ছি, যেদিন আমি ঘুরে দাঁড়িয়েছিলাম, সেদিন আসলে ভালোবেসে নিয়েছি জীবনকে। নিজের জীবনকে ভালোবাসলে অন্যরকম মনে হয় পৃথিবী! তো যেদিন নিজের জীবনকে ভালোবেসে নিয়েছি, সেদিন থেকে আসলে নিরাপত্তার বিষয়টিকেও জাগ্রত করে নিয়েছি অন্তঃস্থলে। সেই সঙ্গে এও শিখে গিয়েছি যে, প্রথম ও শেষ কথা হলো, অবশ্যই রক্ষা করতে হবে– আমাকে, আপনাকে!
নিজেকে কথা দিয়েছিলাম
নিজেকে কথা দিয়েছিলাম আমি– আর কোনো দিনই ফিরব না পুরোনো পথে। কিংবা বলা ভালো, যতদূর সম্ভব, না ফেরার চেষ্টা করব। জীবনে এমনটা যতবার করেছি আমি, ততবারই ভুগেছি নিদারুণ যাতনায়। পেয়েছি টের– যাঁরা তাকিয়ে আছেন আমার দিকে, মানে প্রচলিত পথে হাঁটিনি বলে আমার ভবিষ্যতের প্রশ্নে যাঁরা উদ্বিগ্ন তাঁদের কথা বলছি আরকি, কী অসহনীয় বেদনাই না তাঁদের দিয়েছি আমি!
একে অপরের বিপরীত অথচ পরিপূরক
তারপর আবারও করেছি এমনটা; বারবার! চন্দ্র ও সূর্যের মতোই। আমরা প্রত্যেকেই একে অপরের আজন্ম বিপরীত অথচ পরিপূরক। পরস্পরকে ছুঁতে না পেরেই একজনকে আরেকজনের পর্যায়ক্রমে জায়গা ছেড়ে দিতে দিতে এই বেঁচে থাকা আমাদের। এটি এমনই এক জীবন, শুনতে খারাপ লাগলেও এটাই বাস্তবতা যে, এখানে প্রতিপক্ষের সম্ভাবনাকে ধূলিসাৎ করে দেওয়াতেই যত গর্ব!
যতদিন পায়ে আছে শক্তি
পঁচিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে নিজের লক্ষ্যকে তৈরি করে নিয়েছি আমি। আর নিজেকে একবার নয়, বারবার কথা দিয়েছি এবং এখনও কথা দিচ্ছি– সুরক্ষা দেব, খেয়াল রাখব; যে কোনো শত্রুর বিপক্ষেই হয়ে উঠব বাধার প্রাচীর। নিজের চেয়েও অন্যের কল্যাণ, অন্যের সুরক্ষাই আমার কাছে অগ্রগণ্য– ঠিক এই কথাগুলোর ওপর ভিত্তি করেই ১২ বছর বয়সে যে আমি ঘুরে দাঁড়িয়েছিলাম, এখনও অটল আছি সেই সিদ্ধান্তে। যতদিন পায়ে আছে শক্তি, যতদিন অন্তর আমার সচল– চলবেই পথচলা!
মন্তব্য করুন