- সমকাল অনুসন্ধান
- চাবি নিয়ে বাকবিতণ্ডা, ছুরিকাঘাতে ছাত্রলীগ নেতা খুন
চাবি নিয়ে বাকবিতণ্ডা, ছুরিকাঘাতে ছাত্রলীগ নেতা খুন
-samakal-646e3cb78ca43.jpg)
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইকরাম আহমেদ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইকরাম আহমেদ (২৮) খুন হয়েছেন। বুধবার বিকেলে পৌর এলাকার মুন্সেফপাড়ায় ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য রিদোয়ান আনসারী রিমোর বাড়িতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
পুলিশ ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই রায়হান (২৮) নামে একজনকে আটক করেছে। এ সময় তার কাছ থেকে রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করা হয়।
নিহত ইকরাম আহমেদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের তেরকান্দা গ্রামের মাসুদ মিয়ার ছেলে। ইকরাম তার পরিবারের সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ডা. ফরিদুল হুদা রোডে বি.বাড়িয়া টাওয়ারে থাকতেন। বাবা মাসুদ মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
আটক রায়হান ঢাকার মগবাজারের জিয়াউল হক জিয়ার ছেলে। তিনি ছাত্রলীগ নেতা রিমোর মামাতো ভাই। রায়হান কয়েকদিন ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রিমোদের বাসায় অবস্থান করছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা ছাত্রলীগের একাধিক সূত্র জানায়, বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা রিমোর বাড়িতে ছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেলের চাবি নিয়ে ইকরামের সঙ্গে রায়হানের তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে রায়হান ইকরামকে ছুরি দিয়ে আঘাত করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রিদোয়ান আনসারী রিমো জানান, রায়হান তার মামাতো ভাই। তার মামা ভারতে যাওয়ায় রায়হানকে এখানে রেখে যান। মোটরসাইকেলের চাবি নিয়ে তর্কাতর্কির জের ধরে ইকরামকে ছুরিকাঘাত করে রায়হান। ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। রায়হান মাদকাসক্ত বলে দাবি করেন রিমো।
এদিকে ঘটনার পর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। জেলা সদর হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করে তারা খুনিদের বিচার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাত ৮টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখেন ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধ নেতাকমীরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরে মাওলা ফারাবী জানান, ইকরাম জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এ ঘটনায় জড়িতদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি। অন্যথায় আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহাদাৎ হোসেন শোভন ইকরাম হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
বুধবার রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত এ ঘটনায় থানায় কোনো মামলা হয়নি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহরাব আল হোসাইন জানান, মোটরসাইকেলের চাবি নিয়ে তর্কের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। তাৎক্ষণিকভাবে ঘাতক রায়হানকে আটক করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমরা রক্তমাখা ছুরিসহ ঘাতককে আটক করেছি। এ ঘটনায় যারাই জড়িত থাকবেন তাদেরকে আটক করা হবে।’
এদিকে ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনের সংসদ সদস্য, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ‘ঘটনাটি দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। যারা এই ঘটনায় জড়িত তাদেরকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।’
মন্তব্য করুন