নারী আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল আন্দোলনের অগ্রদূত জননী সাহসিকা কবি সুফিয়া কামালের ২৩তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। মুক্তিযুদ্ধসহ বাঙালির সব প্রগতিশীল আন্দেলনে ভূমিকা পালনকারী সুফিয়া কামাল ১৯৯৯ সালের ২০ নভেম্বর মারা যান। তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

সুফিয়া কামাল ১৯১১ সালের ২০ জুন বরিশালের শায়েস্তাবাদের রাহাত মঞ্জিলে জন্ম নেন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর তিনি পরিবারসহ কলকাতা থেকে ঢাকায় চলে আসেন। ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং এই আন্দোলনে নারীদের উদ্বুদ্ধ করেন। তিনি ১৯৫৬ সালে শিশু সংগঠন কচিকাঁচার মেলা প্রতিষ্ঠা করেন।

পাকিস্তান সরকারের ১৯৬১ সালে রবীন্দ্রসংগীত নিষিদ্ধের প্রতিবাদে আন্দোলনে সুফিয়া কামাল জড়িত ছিলেন এবং ছায়ানটের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ১৯৬৯ সালে মহিলা সংগ্রাম কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন এবং গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেন।

১৯৭০ সালে তিনি মহিলা পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭১ সালের মার্চে অসহযোগ আন্দোলনে নারীদের মিছিলে নেতৃত্ব দেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ধানমন্ডির বাসভবন থেকে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা দেন। স্বাধীন বাংলাদেশে নারী জাগরণ ও নারীদের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তিনি উজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেন। ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে কারফিউ উপেক্ষা করে নীরব শোভাযাত্রা বের করেন।

'সাঁঝের মায়া', 'মন ও জীবন', 'শান্তি ও প্রার্থনা', 'উদাত্ত পৃথিবী' ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। এ ছাড়া সোভিয়েতের দিনগুলো এবং একাত্তরের ডায়েরি তাঁর অন্যতম ভ্রমণ ও স্মৃতিগ্রন্থ।

সুফিয়া কামাল বাংলা একাডেমি পুরস্কার, সোভিয়েত লেনিন পদক, একুশে পদক, বেগম রোকেয়া পদক, জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার ও স্বাধীনতা দিবস পদক পেয়েছেন।