- শিল্পমঞ্চ
- ‘ক্ষমতাধর’ মেয়র আরিফের আশীর্বাদ চাচ্ছেন প্রার্থীরা
সিলেট সিটি নির্বাচন
‘ক্ষমতাধর’ মেয়র আরিফের আশীর্বাদ চাচ্ছেন প্রার্থীরা

আরিফুল হক চৌধুরী
সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিরও সদস্য। বিভিন্ন সময় দায়িত্ব পালন করেছেন নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি হিসেবে। ২০০৩ সালে প্রথম কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে নানাভাবে আলোচনায় আসেন। ওই সময় তৎকালীন অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী সাইফুর রহমানের ছায়ায় হয়ে ওঠেন প্রতাপশালী।
কাউন্সিলর হয়ে আরিফ ছিলেন নগর উন্নয়ন ও পরিকল্পনা কমিটির চেয়ারম্যানও। ‘ছায়া মেয়রের’ কাজও করেন তিনি। সে সময়কার মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা বদর উদ্দিন আহমদ কামরান ছিলেন অনেকটা বেকায়দায়। ২০১৩ সালের ১৫ জুন প্রথমবারের মতো মেয়র পদে নির্বাচন করে চমক দেখান। কিন্তু ওই সময়কাল পুরোটা তাঁর জন্য সুখকর ছিল না। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় বরখাস্ত, জেল খাটা ও মামলায় জড়ান তিনি। তিন বছর সময় পেয়ে নানা কাজে প্রশংসা কুড়ান আরিফ, যা ২০১৮ সালে দলীয় প্রতীক নিয়ে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়লাভ করতে সহায়তা করে। নগরবাসীর কাছে তিনি এখনও ‘ক্ষমতাধর’।
আসন্ন সিসিক নির্বাচনে প্রার্থী না হয়েও তাঁকে নিয়ে আলোচনা থামছে না। তাঁর দিকে দৃষ্টি যেমন অনুসারী-অনুরাগীদের, তেমনি বর্তমান মেয়র প্রার্থীদেরও। আরিফের ইশারায় যে কারও ফলাফলে প্রভাব পড়তে পারে– এমনটি ভেবেই তাঁর দোয়া নিচ্ছেন কেউ কেউ। আবার কেউ গোপনে পরামর্শ নিতে রাতে বাসায় ছুটে যাচ্ছেন। নগরবাসী মনে করছেন, আরিফুল হকের খ্যাতি ও জনপ্রিয়তার কারণেই প্রার্থীরা ধরনা দিচ্ছেন। তাঁর কাছ নির্বাচনী কৌশল জানার চেষ্টা করছেন।
তবে আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচন বর্জন করায় সরাসরি কাউকে কোনো পরামর্শ দিচ্ছেন না। কিংবা ভোট দিতেও কাউকে উৎসাহিত করছেন না। সাধারণ ভোটাররা মনে করছেন, সিটির ভোটের লড়াইয়ে আরিফুল হক চৌধুরী অন্যতম ‘ফ্যাক্টর’। আওয়ামী লীগ সরকারে সময় টানা দুই মেয়াদে মেয়র হয়েছেন তিনি। এটা সম্ভব হয়েছে তাঁর কৌশল ও সৃষ্টিশীলতার কারণে। ভোটের মাঠের কলাকৌশল সম্পর্কে তিনি বেশ অভিজ্ঞ। সিলেটে দলীয় রাজনীতিতে আরিফের রয়েছে নিজস্ব বলয় ও সাধারণ ভোটারও। এসব কারণে আরিফের সুনজরের প্রত্যাশা করছেন অনেক প্রার্থী।
গত রোববার হঠাৎ করেই তাঁর বাসায় ছুটে যান আওয়ামী লীগ প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। পরদিন একই পথে হাঁটেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল। আরিফুল হককে নিজের দিকে টানতে মূলত দুই মেয়র প্রার্থী তাঁর বাসায় যান। কিন্তু যে নির্বাচনে বিএনপি নেই, সে নির্বাচনে তিনি কতটুকু সহানুভূতিশীল হবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। দুই মেয়র প্রার্থীর দেখা করা প্রসঙ্গে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সমকালকে বলেন, তাঁরা সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এসেছিলেন। কুশল বিনিময় করে দোয়া ও সহযোগিতা চেয়েছেন। এর বাইরে কিছুই আলাপ হয়নি।
ইতোমধ্যে বেশ কিছু বর্তমান কাউন্সিলর ও প্রার্থী তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন। প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো প্রার্থী তাঁর সঙ্গে দেখা করে আশীর্বাদ চাচ্ছেন। এ বিষয়ে মেয়রের ঘনিষ্ঠজন বলে পরিচিত ও এসিড সন্ত্রাস নির্মূল কমিটি সিলেটের সাধারণ সম্পাদক জুরেজ আব্দুল্লাহ গোলজার বলেন, তিনি নির্বাচন বর্জন করায় মনে হচ্ছে নগরী নীরব। তবে এখনও প্রতিদিন তাঁর বাসায় লোকজন আসছেন।
নগরীর শিবগঞ্জের বাসিন্দা ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টির মহাসচিব তালুকদার মকবুল হোসেন বলেন, আরিফুল হক নগর উন্নয়ন নিয়ে ইতোমধ্যে মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। তিনি নির্বাচন না করলেও ভোটে তাঁর ছায়া পড়বে। ভোটের আগ পর্যন্ত তাঁকে নিয়েই আলোচনা চলবে।
মন্তব্য করুন