হঠাৎ বিপরীত দিক থেকে একটি ট্রাক এসে আঘাত করলে আমাদের পিকআপ উল্টে যায়। ট্রাকটি সড়কে তার ডানে চলে এসেছিল। দুর্ঘটনায় আমি আর বাবা আহত হলেও প্রাণে বেঁচে আছি। তবে আমার বড় চাচা আর নেই।  

সিলেটের নাজিরবাজারে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ভয়াবহ দুর্ঘটনার এভাবেই বর্ণনা দিলেন রবিউল ইসলাম। তিনি ওই পিকআপে ছিলেন। তার বাবা ঠিকাদার শের ইসলামের সঙ্গে নির্মাণশ্রমিক নিয়ে গোয়ালাবাজারে যাচ্ছিলেন। 

দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাক ও পিকআপ ভ্যান। ছবি- ফোকাস বাংলা। 

সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শের ইসলাম সমকালকে বলেন, বিপরীত দিকে থেকে আসা ট্রাকের ভুলেই এতগুলো প্রাণ ঝরে গেল। আমার ভাই মারা গেছেন। আরও কয়েকজন বন্ধু ও স্বজন আহত হয়েছেন। 

ওসমানী হাসপাতালের প্রাঙ্গণে হতাহতদের স্বজনেরা ভিড় করেছেন। ছবি- ফোকাস বাংলা। 

দুপুর সাড়ে ১২টায় সরেজমিনে দেখা যায়, ওসমানী হাসপাতালের প্রাঙ্গণে হতাহতদের স্বজনেরা ভিড় করেছেন। তাদের অনেকের কান্নায় হাসপাতালের বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। 

ওসমানী হাসপাতালে হতাহতদের স্বজনদের কান্নায় বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। ছবি- ফোকাস বাংলা।

নিহতদের মরদেহ ওসমানী হাসপাতালে রাখা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। সেজন্য অপেক্ষা করছেন স্বজনেরা। আহতদের কারও হাতে, কারও পায়ে ব্যান্ডেজ। চোখে-মুখে সদ্য ঘটা ভয়াল অভিজ্ঞতার রেশ। 

সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান জানান, নিহতদের পরিবারকে ২০ হাজার ও আহতদের পরিবারকে ১০ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে। 

দুর্ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ছবি- ফোকাস বাংলা।

বুধবার সকাল ছয়টার দিকে ঘটা এই দুর্ঘটনায় দুপুর একটা পর্যন্ত মারা গেছেন ১৪ জন। হতাহতদের সকলেই নির্মাণশ্রমিক। 

সিলেটের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ জানান, নিহত ১৪ জন হলেন- সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার মো. সি‌জিল মিয়া (৫৫), এক‌লিম মিয়া (৫৫), হা‌রিছ মিয়া (৬৫), সৌরভ ‌মিয়া (২৭), সাজেদুর (৬০), বাদশা মিয়া (৩০), সাধু মিয়া (৫০), রশিদ মিয়া (৫০) ও মেহের (২৫); সুনামগঞ্জের শা‌ন্তিগঞ্জ উপজেলার শাহীন মিয়া (৪০), দুলাল মিয়া (২৬) ও আওলাদ হোসেন (৫০); হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের আমিনা বেগম (৪৫) এবং নেত্রকোনা বারহাট্টার আওলাদ মিয়া (৪০)।

/এইচকে/