সাধারণ কিংবা অভিজাত যে রেস্টুরেন্টেই যান না কেন, কিছু নিয়মকানুন তো মানতেই হয়। খেতে বসে এমন ভুল করা যাবে না, যাতে সেটি দৃষ্টিকটু দেখায়। এসব বিষয় এড়াতে টাইমস অব ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিশেষজ্ঞরা দিয়েছেন পরামর্শ।

আমন্ত্রিত অতিথির জন্য অপেক্ষা :খাবার টেবিলে বসার আগে অতিথির জন্য অপেক্ষা করুন। সে বসার পর বসুন। মনে রাখবেন, খাবার টেবিলে ব্যস্ততা দেখানো চলবে না।

ন্যাপকিনের ব্যবহার :ন্যাপকিন ব্যবহার করা জরুরি। টেবিলেও ন্যাপকিন রাখা যাবে অথবা আপনার শার্টের ওপরও দিতে পারেন। যেভাবেই ন্যাপকিন ব্যবহার করুন না কেন, খেয়াল রাখবেন খাবার পোশাকের ওপর পড়ে যেন নষ্ট না হয়।

চামচের সঠিক ব্যবহার :অনেকেই চামচ দিয়ে প্রথমবার খাওয়ার সময় মানসিক চাপে থাকেন। তাই খেতে বসার আগে চামচ, ছুরির সঠিক ব্যবহার জেনে নিলে ভালো হবে। চামচ দিয়ে খেতে বসলে অনেকের খাবার সরে যায়। তাই প্রথমে বড় চামচ দিয়ে খাবারের অভ্যাস করা যেতে পারে।

খাবার টেবিলে বসের সঙ্গে ভদ্রতা :পেশার অন্তর্গত মিটিংয়ের উদ্দেশ্যে রেস্টুরেন্টে খাবার টেবিলে যদি আপনি বসেন অবশ্যই খেয়াল রাখবেন সেখানে নিজের মতো করা খাওয়া যাবে না। সবাই যদি ছুরি, চামচ দিয়ে খাবার খায় আপনারও সেটি অভ্যাস করে নিতে হবে। হাত দিয়ে খাওয়া চলবে না। পরিবেশ বুঝেই খেতে হবে। এসব ক্ষেত্রে খাবার টেবিলে ভদ্রতা বজায় রাখার পাশাপাশি পোশাকের প্রতিও নজর রাখতে হয়। ক্লায়েন্ট মিটিং থাকলে অবশ্যই ফরমাল পোশাক পরতে হবে। এমন রঙের পোশাক পরা যাবে না যেটি দৃষ্টিকটু লাগে।

খাবার অর্ডার দেওয়ার আগে বস এবং অতিথির অনুমতি নিয়ে দিতে হবে। খাবারের চেয়ে আলোচনায় বেশি মনোযোগী হতে হবে। এমন কোনো খাবার অর্ডার করা যাবে না, যেটি মিটিং করতে অসুবিধা করে তুলতে পারে। তখন যে যেটি খেতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে, সেটিই খাওয়া প্রয়োজন।

খাবারের সময় বড় হাঁ করে খাওয়া যাবে না। সেলফোনের রিংটোন বন্ধ রাখার পাশাপাশি বার্তা দেওয়া থেকেও বিরত থাকতে হবে। খাওয়ার সময় হাতের কনুই যেন টেবিলে না থাকে, সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। কোনো অবস্থাতেই শব্দ করে খাওয়া যাবে না।

এদিকে খাবার শেষে বিল কে দেবেন, এটি নিয়ে অনেকে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন। বেশিরভাগ সময় বস কিংবা সিনিয়র ব্যক্তি খাবারের বিল দিয়ে থাকেন। যেই দিক না কেন, তাঁকে ধন্যবাদ দিতে ভুলবেন না। হতে পারে সেটি সরাসরি, সেলফোন মেসেজ কিংবা ই-মেইলে।

শুধু নিজেই খাবারের টেবিলের আদবকায়দা জানলে হবে না। সন্তানকেও জানাতে হবে। শিশুর খাবারের টেবিলের নিয়মকানুনের কৌশল।
সময় বের করুন:সন্তানকে খাবার টেবিলের আদবকায়দা জানানোর জন্য নির্দিষ্ট সময় বের করুন। এর পর তাকে বোঝান ন্যাপকিন কীভাবে ব্যবহার করতে হয়। কীভাবে চামচ, ছুরি দিয়ে খেতে হয়। পরিমাণমতো খাবার খাওয়ার নিয়মও জানাতে হবে।

রেস্টুরেন্টে খাওয়ার সময় সন্তানকে নিয়ে বাইরে খেতে গেলে তাদের জন্য উপযুক্ত রেস্টুরেন্ট পছন্দ করতে হবে। আপনার সন্তানকে পছন্দ অনুযায়ী খাবার অর্ডার দেওয়ার অভ্যাস করাতে হবে। এতে করে বুঝতে শিখবে তারা বড় হচ্ছে এবং দায়িত্বশীল মনোভাবও তৈরি হবে। এটি জরুরি।

ফোন থেকে বিরত :পরিবারের সঙ্গে খেতে বসলে সেলফোন ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। সন্তান আপনাকে দেখে শিখবে। আপনি খাওয়ার সময় ফোনে কথা বললে সন্তান এটিই শিখবে। দয়া করে সন্তানকে এটি শেখাবেন না।

'ধন্যবাদ' বলতে শেখান :ঘরে কিংবা বাইরে যেখানেই সন্তানকে নিয়ে খাবার টেবিলে বসুন না কেন, তাকে বিনয় শেখাতে ভুলবেন না। যেমন খাবার নেওয়ার আগে যে পরিবেশন করবে তাঁকে প্রথমে খাবার দিন 'প্লিজ' এবং খাওয়া শেষ হলে 'ধন্যবাদ' দিতে হবে। এই ভদ্রতা জ্ঞান শেখাতে হবে।

রান্না শেখার অভ্যাস :খাবার টেবিলের ভদ্রতা জানানোর পাশাপাশি সন্তানকে খাবার তৈরি সম্পর্কে সঠিক ধারণা দেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। যখন আপনি রান্না করবেন, তখন সন্তানকে পাশে রাখতে পারেন। এই সময় রান্না করার ছোট কৌশলগুলো তাকে বোঝাতে আপনার সুবিধা হবে। া
মডেল : সাবা; ছবি :ফাহিম; স্থান:দ্য স্টেক গার্ডেন