চিয়া সিড কেন খাবেন
চিয়া সিড
ভূঁইয়া শফি
প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২২:৩২
চিয়া সিড ছোট গোলাকার বীজ; যা কালো, বাদামি এবং সাদা রঙের হয়। মেক্সিকো এবং মধ্য আমেরিকার মরু অঞ্চলে চিয়া সিড বেশি জন্মায়। তবে বর্তমানে আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইতালি, পেরুসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে চাষ করা হয়। স্বাস্থ্যের উপকারিতার জন্য চিয়া সিড বিশ্বজুড়ে পরিচিতি লাভ করেছে। চিয়া সিডের পুষ্টিগুণ অত্যন্ত উচ্চমানের, যা প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়।
চিয়া সিডে দুধের চেয়ে ৫ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম, কমলার চেয়েও ৭ গুণ বেশি ভিটামিন সি, পালংশাকের চেয়েও ৩ গুণ বেশি আয়রন, কলার চেয়েও দ্বিগুণ পটাশিয়াম রয়েছে। তরলের সঙ্গে মিশ্রিত হলে চিয়া সিডের চারপাশে একটি জেলি তৈরি হয়, যা চিয়া পানীয়কে আলাদা রূপে বদলে দেয়। চিয়া সিড ওজনের ১২ গুণ পর্যন্ত তরলে শোষণ করতে পারে এবং শোষণের মাধ্যমে নিজের আয়তন বাড়াতে পারে।
চিয়া সিড খেলে কী হয়
উচ্চ ফাইবার: চিয়া সিডের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা পরিপাকতন্ত্রের জন্য উপকারী। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে এবং হজমে সহায়ক। এ ছাড়া রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা এবং সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি এসিড: চিয়া সিডে থাকা ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি এসিড হৃদরোগের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয় এবং বিপজ্জনক কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের (এনআইএইচ) মতে, ওমেগা-থ্রিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া হার্টের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে পারে।
প্রোটিন ও মিনারেলস: চিয়া সিড প্রোটিনের একটি ভালো উৎস, যা সবল দেহ গঠন, হাড়, মাংসপেশি, কার্টিলেজ ও ত্বকের জন্য খুবই উপরকারী। এ ছাড়া মানুষের চুল ও নখগুলো বেশির ভাগই প্রোটিন দ্বারা গঠিত; যার ক্ষতিপূরণ, আঘাতের ক্ষতস্থানের ক্ষতিপূরণ করতে সাহায্য করে। এর মধ্যে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক এবং আয়রন আছে, যা হাড়ের স্বাস্থ্য ও রক্তের শক্তি বজায় রাখতে সাহায্য করে।
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণ: চিয়া সিডে প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা শরীরের কোষগুলোকে ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিক্যালস থেকে রক্ষা করে, বয়সের কারণে হওয়া বিভিন্ন সমস্যা যেমন ত্বকের বয়সজনিত পরিবর্তন ও ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।
যেভাবে খাবেন: চিয়া সিড খাওয়া খুবই সহজ। এটি সাধারণত রাতে পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খেলে বেশি উপকার হয়। তবে আপনি চাইলে দুধ, ওটস, পুডিং, জুস ইত্যাদিরও সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে পুষ্টিগুণ আরও বেড়ে যাবে। এ ছাড়া টকদই, রান্না করা সবজি ও সালাদের ওপর ছড়িয়েও খেতে পারেন।
যেভাবে চিয়া সিডের পুডিং তৈরি করবেন:
দেড় কাপ বাদাম দুধ, আধা কাপ চিয়া সিড, পরিমাণ মতো কোকো পাউডার, চার চামচ ম্যাপল সিরাপ, আধা চামচ দারচিনি (ঐচ্ছিক), আধা চামচ ভ্যানিলা নির্যাস। একটি বাটিতে প্রথমে চিয়া সিড বাদে সব উপকরণ মিশিয়ে ফুটান। তারপর ওই মিশ্রণে চিয়া সিড মেশান। এরপর ফ্রিজে সারারাত রেখে দিন। তৈরি হয়ে গেল আপনার পছন্দের পুডিং। v
সূত্র: মায়ো ক্লিনিক হেলথ সিস্টেম
- বিষয় :
- ওষুধ