ঢাকা শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

অল্প স্বল্প মজার গল্প

তেল ও চরকার গল্প

তেল ও চরকার গল্প

অলংকরণ:: তন্ময় শেখ

ইয়াসীন সেলিম 

প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫ | ০০:৪৯

নয়ন আজ নতুন একটা চাকরিতে যোগ দিয়েছে। এটি তার চতুর্থ চাকরি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হওয়ার পর এর আগের তিনটি চাকরির কোনোটিতেই ছয় মাসের বেশি টেকেনি সে। মেধাবী ছাত্র ছিল সে। পরিশ্রমীও। শুধু জায়গা-অজায়গায় মাত্রাতিরিক্ত তেলবাজির জন্য তার চাকরিগুলো টেকে না। তেল মারা তার একটা নেশা। অফিস ও বাসার দারোয়ান, পিয়ন, সহকর্মী সবাইকে তেল মারে। এমনকি বেশি তেল মারতে গিয়ে তার প্রেমিকারাও ‘আঁতেল’ বলে ছেড়ে চলে যায়! এমডি স্যারের রুমের সামনে গিয়ে দরজার নব ঘুরিয়ে নয়ন বিনয়ের সঙ্গে বলল, আসতে পারি স্যার?
– আরে, নয়ন সাহেব। তা নয়ন সাহেব, নতুন অফিস কেমন লাগছে?
– চমৎকার লাগছে স্যার। এ অফিসের সবাই এত ভালো, এত ব্যক্তিত্বসম্পন্ন যে আমি মুগ্ধ। এমন অফিসে চাকরি করা আমার ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল। আজ স্বপ্নপূরণ হলো। অসাধারণ অনুভূতি!
– হুম, বুঝলাম নয়ন সাহেব। আমাদের অফিসটা আসলেই অনেক ভালো। সবাই অনেক কো-অপারেটিভ। আপনার কোনো সমস্যা হবে না। যে কোনো সমস্যা হলে আপনি আমাকে ইনফর্ম করবেন। কোনো দ্বিধা করবেন না।
– সত্যি স্যার, আপনাকে দেখে বুঝেছি বস কাকে বলে, কেমন হওয়া উচিত। এমন ব্যক্তিত্বের অধীনে চাকরি করতে পারাটা চরম ও পরম সৌভাগ্যের। আপনি আসলেই বড়মনের গুণী একজন মানুষ।
– নয়ন সাহেব, আজই তো জয়েন করলেন। একসঙ্গে এত প্রশংসা করলে কীভাবে হয়! আমাকে তো আপনি এখনও ভালো করে চিনলেনই না।
– স্যার, এই যে কথায় আছে ‘একটা ভাতে চাপ দিলে পুরো হাঁড়ির খবরই বলা যায়’, আপনার ব্যাপারটাও তাই। আপনি আসলেই আদর্শ বস।
– ঠিক আছে নয়ন সাহেব। এবার আপনি আসুন। এনজয় ইউর জব।
নতুন অফিসের চাকরিটাও আড়াই মাসের বেশি টিকল না। কিছুদিন পর নয়ন জুটিয়ে নেয় নতুন চাকরি। তার স্বভাব বদলায় না কখনোই। ফলে তার তৈলাক্ত জীবনটা শুধু চরকার মতো ঘুরতে থাকে, ঘুরতেই থাকে...। 
সুহৃদ মৌলভীবাজার
 

আরও পড়ুন

×