ঢাকা মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

সুবর্ণরেখা

প্রযুক্তির উৎকর্ষ ও বাংলাদেশ

প্রযুক্তির উৎকর্ষ ও বাংলাদেশ

--

প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২২ | ২২:৪২

প্রযুক্তির উৎকর্ষ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে এনেছে বহুমাত্রিক পরিবর্তন। প্রতি মুহূর্ত আজ প্রযুক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। কর্মব্যস্ত জীবনে এখন আমাদের নিত্যসঙ্গী নানান ডিজিটাল ডিভাইস। ফেসবুক, গেমস, ইউটিউব কিংবা ই-মেইলের মতো অতিপ্রয়োজনীয় বিষয় এখন আঙুলের ইশারায় নিয়ন্ত্রিত। জীবনের সঙ্গে অতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকা প্রযুক্তির ছোঁয়া সর্বত্র বিদ্যমান। স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট বদলে দিয়েছে একুশ শতকের হালচাল। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সরকারের বিভিন্ন ও তরুণদের নানা উদ্যোগ প্রচেষ্টায় সম্ভব হচ্ছে এই অর্জন। স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের ব্যবহার দ্রুতগতিতে বাড়ায় এর প্রভাব পড়েছে দেশের নানা গুরুত্বপূর্ণ খাতে।

প্রযুক্তিগত দক্ষতায়, অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম কোরসেরার বৈশ্বিক দক্ষতা সূচকে 'গ্লোবাল স্কিলস ইনডেক্স ২০১৯' অনুযায়ী অপারেটিং সিস্টেম ও সফটওয়্যার প্রকৌশলের মতো ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য হারে ভালো করছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি আইটিইউ অ্যাওয়ার্ড, সাউথ সাউথ অ্যাওয়ার্ড, গার্টনার এবং এ টি কারনিসহ বেশ কয়েকটি সম্মানজনক স্বীকৃতি পেয়েছে দেশ। এতে স্পষ্ট হচ্ছে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব মোকাবিলায় বাংলাদেশের মানবসম্পদ উন্নয়ন ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের চিত্র। তবে ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপমেন্টে আরও জোর দেওয়ার পাশাপাশি দেশে স্থায়ী বাজার প্রসারে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পকে সঙ্গে নিয়ে ই-গভর্ন্যান্সসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিতে হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রযুক্তির অগ্রগতি এখন দৃশ্যমান। মহাকাশে প্রথম স্যাটেলাইটসহ কয়েকটি বড় অর্জন বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশকে নিয়ে গেছে অন্য রকম উচ্চতায়। চতুর্থ প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক (ফোরজি) যুগে পা রাখা এবং ফাইভজি প্রযুক্তি উন্মুক্ত করার ঘোষণা, ই-গভর্ন্যান্স, স্টার্টআপ, কম্পিউটার উৎপাদন কারখানা, জাতীয় ডাটা সেন্টারের সক্ষমতা বৃদ্ধি, হাইটেক পার্ক এবং সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক নির্মাণ, মানবসম্পদ উন্নয়নে আইসিটি, স্কিল এনহ্যান্সমেন্ট, ফ্রিল্যান্সিংসহ নানা ধরনের প্রশিক্ষণ, জনগণের দোরগোড়ায় তথ্যসেবা পৌঁছে দিতে সরকারের বিভিন্ন ধরনের তথ্য ও সেবার ডিজিটালাইজেশনের উদ্যোগ তথ্যপ্রযুক্তিতে আমাদের দারুণভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে আগামীর পথে। ব্যবসা-বাণিজ্যও অনলাইনমুখী হচ্ছে। গড়ে উঠেছে এফ-কমার্স বা ফেসবুকভিত্তিক ব্যবসা। দেশের ফ্রিল্যান্সাররা বিশ্বজুড়ে নিজেদের কাজ প্রতিষ্ঠা করছেন। সফটওয়্যার খাতের উদ্যোক্তারাও দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন বিশ্বময়। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার হাতছানি দিচ্ছে। নারীর তথ্যপ্রযুক্তিতে যুক্ততা একটি বড় অগ্রগতি হিসেবে ধরা দিয়েছে।

এছাড়া করোনাকালীন স্বাস্থ্যব্যবস্থা প্রযুক্তির ব্যবহারে প্রকৃষ্ট উৎকর্ষ দেখাতে সক্ষম হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেও শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব হয়েছে। 'ডিজিটাল বাংলাদেশ' হিসেবে ঘোষণা ছিল এ অগ্রযাত্রার প্রথম ধাপ। বিশেষজ্ঞরা তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক এই উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে আখ্যায়িত করছেন ডিজিটাল নবজাগরণ হিসেবে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আমাদের এ অর্জন উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ গঠনের পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর মানবিক এক সমাজ গঠনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে, এটাই প্রত্যাশা।

আরও পড়ুন

×