ব্যাংকখাত
কভিড-১৯, ইউক্রেন ও ব্যাংকিং

ফারুক মঈনউদ্দীন
প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ | ১৮:০০ | আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৩ | ০৩:৫৯
বিশ্বব্যাপী এক নতুন ধরনের অতিমারির কবলে ২০২০ সালের প্রথমার্ধ থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম যখন প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছিল, ভেঙে পড়েছিল উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থা, এমনকি সেই অভূতপূর্ব বিপর্যয়ের স্থায়িত্ব সম্পূর্ণ অনিশ্চিত, সেই সময় শত প্রতিকূলতার মধ্যে দুটি খাত চালু ছিল- একটি কৃষি খাত এবং আরেকটি ব্যাংক খাত। কৃষকরা যেমন কোনো বিপদের তোয়াক্কা না করে সমুন্নত রেখেছিলেন তাঁদের উৎপাদন, ব্যাংকাররাও সব বিপদ মাথায় নিয়ে সচল রেখেছিলেন অর্থনীতির চাকা। আমাদের দেশের ইতিহাসে সম্ভবত সবচেয়ে সফল একটা সরকারি কার্যক্রম তিন মাত্রায় দেশব্যাপী করোনা ভ্যাকসিন অভিযান সম্পন্ন করার পর এই বালাই থেকে ধীরে ধীরে মুক্ত হতে থাকে দেশ। ফিরে আসে অর্থনীতির স্বাভাবিক ছন্দ। পুনর্বাসিত হতে থাকে ক্ষতিগ্রস্ত খাতগুলো। কভিড-১৯ মোকাবিলায় ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে সরকারের পূর্ণোদ্যম প্রণোদনা কর্মসূচির আংশিক সফলতা ছিল এই পুনর্বাসনের মূল চালিকা শক্তি।
সরকারি প্রণোদনার সুবিধাভোগী এবং যোগ্য প্রাপকদের তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হলে 'আংশিক' সফলতার বিষয়টি খোলাসা হবে। এই তিন শ্রেণির মধ্যে প্রথম শ্রেণিতে আছে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত যোগ্য প্রাপকরা- যাদের কাছে প্রণোদনা একটা বড় আশীর্বাদ হয়ে এসেছিল, দ্বিতীয় শ্রেণিতে আছে যারা অবাধ নীতিমালার সুবাদে প্রণোদনা লাভ করেছে, যদিও তাদের এই সহায়তার প্রয়োজন ছিল না। কথিত আছে, এই শ্রেণির সুবিধাভোগীরা প্রণোদনার সুলভ অর্থ দিয়ে ভূসম্পত্তি কিনেছে কিংবা অন্যত্র বিনিয়োগ করেছে। সর্বশেষ শ্রেণিতে আছে তারা, যাদের জন্য প্রণোদনা ছিল অত্যন্ত জরুরি অথচ সরকারি নির্দেশনা সত্ত্বেও বিভিন্ন ব্যাংকিং শর্ত এবং নিজেদের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর সহজাত দুর্বলতার কারণে এই জীবনদায়ী সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এই ভাগ্যাহত শ্রেণিটি প্রধানত মাঝারি ও ক্ষুদ্র ব্যবসা ও শিল্পপ্রতিষ্ঠান।
এতদসত্ত্বেও দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম পূর্ণ গতি লাভ করেছিল এবং অনুমিত প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ছিল প্রত্যাশারও অধিক। আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলোও বাংলাদেশের কভিড-পরবর্তী প্রবৃদ্ধি নিয়ে আশাব্যঞ্জক ভবিষ্যদ্বাণী করে। এই অনুমিত প্রবৃদ্ধির হার আগের মতো না হলেও হতাশাজনক ছিল না, তবে কিছু চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকতার কথা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছিল না। ঠিক এমন সময় রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিকে নতুন বিপর্যয়ের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে উত্তেজনা ও যুদ্ধাভাস এবং আমেরিকা ও চীনের ভেতরকার ক্রমবর্ধমান স্নায়ুযুদ্ধ- এসবকে ম্লান করে দিয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধ কভিড-পরবর্তী বিশ্বকে নতুন ডামাডোলের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। এতে বিশ্বব্যাপী দেখা দিয়েছে খাদ্য ও জ্বালানি সংকট, মূল্যস্ম্ফীতি, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বিঘ্ন এবং রপ্তানি বাজারের সংকোচন ও দেশে দেশে খাদ্য নিরাপত্তার অভাব। একটি আমদানিনির্ভর দেশ হওয়ার কারণে বাংলাদেশ কোনোভাবেই এই অভিঘাত এড়াতে পারছে না। সরকারি হিসাবেই বাংলাদেশের মূল্যস্ম্ফীতি (নভেম্বর ২২) ৮.৮৫ শতাংশ। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির অপ্রতিরোধ্য অনুগামী হিসেবে প্রকৃত মূল্যস্ম্ফীতি এই হিসাবকেও ছাড়িয়ে গেছে বলে ধারণা করা যায়। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিশ্ববাজারের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি, যা কেবল জ্বালানি কিংবা খাদ্যপণ্যের মধ্যে আর সীমাবদ্ধ নেই, গ্রাস করেছে প্রায় সব ধরনের পণ্য ও সেবাকে।
যুদ্ধপীড়িত বিশ্ব পরিস্থিতির মধ্যে অর্থনৈতিক ব্যবস্থার এই অস্থিরতার ভেতর বাংলাদেশের ব্যাংক খাত ২০২২ সালে একাধিক নতুন সংকটের মুখোমুখি হয়। খেলাপি ঋণ, সুশাসনের অভাব, মূলধন ঘাটতির মতো চলমান দুর্বলতার ওপর মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো এসে পড়ে প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার অপ্রতুলতা, বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভের দ্রুত অধোগতি, ডলারের বিপরীতে অস্বাভাবিক চড়া হারে টাকার অবমূল্যায়ন এবং ব্যাংকিং ব্যবস্থার ওপর টলে যাওয়া মানুষের আস্থা। এই সমস্যার আগুনে ঘৃতাহুতি দেয় দেশের সর্ববৃহৎ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের অস্বাভাবিক ও ভারসাম্যহীন ঋণ বৃদ্ধি, যার আঘাত এসে পড়ে একই শ্রেণিভুক্ত আরও কয়েকটি ব্যাংকে। ফলে ব্যাংকের সঙ্গে সংযোগহীন মানুষের মধ্যেও সংক্রমিত হয় অনাবশ্যক আতঙ্ক। এমনকি ব্যাংকের ডলার সংকট নিয়েও মাথা ঘামাতে শুরু করে সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ। পরিস্থিতি এমন অবস্থায় গিয়ে পৌঁছায় যে, পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য দেশের সরকারপ্রধানকেও জনসাধারণকে আশ্বস্ত করার কাজে নেমে পড়তে হয়।
সাধারণ মানুষের মধ্যে এই উদ্বেগ ছড়ানোর আরেকটি উপাদান ছিল শ্রীলঙ্কার ভেঙে পড়া অর্থনৈতিক পরিস্থিতি। দুই বছরেরও বেশি সময় আগে এই সংকটের শুরু হলেও ২০২২ সালে এসে তা চরম আকার ধারণ করে। এ বছরের প্রথম দিকে দেশটির বিদেশি মুদ্রার মজুত এমন স্তরে নেমে আসে, তাতে তাদের আন্তর্জাতিক ঋণ পরিশোধ করা এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিও অসম্ভব হয়ে পড়ে। বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির যুগে আঞ্চলিক একটি দেশের দুরবস্থার দুঃসংবাদ অতি সহজেই আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়।
টাকার অবমূল্যায়ন এবং জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি দুধারি ছুরির মতো সাধারণ মানুষকে আক্রমণ করেছে। কারণ উভয় পদক্ষেপই সব ধরনের পণ্য ও সেবার উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে দিয়েছে, যার চূড়ান্ত অভিঘাত গিয়ে পড়েছে ভোক্তার ওপর। দফায় দফায় অবমূল্যায়নের পর টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশের মতো। সুতরাং সব ধরনের আমদানীকৃত পণ্যের আমদানি খরচ কেবল টাকার বিপরীতে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির অনুপাতে ঘটেনি, আমদানি মূল্যের ওপর বাড়তি শুল্ক্ক, পরিবহন ও অন্যান্য ব্যয়ের বোঝাও তার ওপর চেপে বসে এই মূল্যবৃদ্ধিকে আরেক ধাপ চড়িয়ে দিয়েছে।
দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংক খাতের বিবিধ দুর্বলতার সঙ্গে বিগত বছরে যুক্ত হয়েছে কিছু ব্যাংকের ওপর মানুষের আস্থাহীনতার মতো বিপজ্জনক একটা উপাদান। এই ভয়াবহ বিষয়টি ব্যাংক খাতের অন্যসব দুর্বলতাকে পেছনে ফেলে বিপর্যয় ঘটাতে পারে দ্রুততম সময়ে। ব্যাংকের ওপর মানুষের আস্থা ধরে রাখার সবচেয়ে শক্তিশালী বর্ম হচ্ছে মূলধনের পর্যাপ্ততা এবং অবাধ তারল্য। অথচ বিগত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১১টি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতির মোট পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি। এ কথা সবারই জানা, পর্যাপ্ত মূলধন ব্যাংককে ঘাত সহনক্ষম করে। ব্যাসেল চুক্তি অনুযায়ী ব্যাংকগুলোকে বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকি বিবেচনায় কমপক্ষে মোট সাড়ে ১২ শতাংশ মূলধন সংরক্ষণ করতে হয়। এই মূলধনের ঘাটতি থাকলে ব্যাংক কোনো বড় ধরনের ঝুঁকি মোকাবিলা করতে পারে না।
মূলধন ঘাটতির মতো একটা অদৃশ্য রোগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন ব্যাংকের খেলাপি ঋণের উচ্চহার এবং তার বিপরীতে সংস্থান ঘাটতি। বিগত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর মিলিত খেলাপি ঋণের পরিমাণ এক লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৯.৩৬ শতাংশ। তার আগের বছরে এই হার ছিল ৮ শতাংশের ঘরে। উল্লেখ্য, ব্যাংকগুলোকে তাদের খেলাপি ঋণের বিপরীতে মেয়াদ বিবেচনায় বিভিন্ন হারে সংস্থান রাখতে হয়, যা আহরণ করতে হয় ব্যাংকের মুনাফা থেকে। সর্বশেষ হিসাবে বিগত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আটটি ব্যাংকের সংস্থান ঘাটতি ছিল ২০ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি, যার মধ্যে ১২ হাজার কোটি টাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে এবং আট হাজার কোটি টাকা বেসরকারি ব্যাংকে।
কিন্তু উদ্বেগের বিষয়, খেলাপি ঋণ এবং সংস্থানের ঘোষিত এই হিসাব থেকে প্রকৃত চিত্র পাওয়া যায় না। কারণ প্রথমত, কিছু ব্যাংক খেলাপি ঋণের সঠিক হিসাব প্রকাশ করে না এবং দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন সময়ে খেলাপি ঋণের সংজ্ঞা পরিবর্তনের কারণে প্রকৃত খেলাপিরা হিসাবের বাইরে থেকে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে যায়। খেলাপি ঋণের হিসাবায়নের ব্যাপারে প্রথম ছাড় দেওয়া হয় কভিড-পরবর্তী ক্ষতি পূরণের জন্য। সে সময় ব্যাংক খাতসংশ্নিষ্ট আদর্শিক বিশ্নেষক ও ব্যাংকারদের আশঙ্কা ছিল, পরবর্তী সময়ে ছাড় পাওয়ার ভিন্ন অজুহাত আবারও দেওয়া হবে। তবে বাহানা আর খুঁজতে হয়নি, ইউক্রেন যুদ্ধ এনে দিয়েছে নতুন সুযোগ। সর্বশেষ সুযোগটি এসেছে ২০২২ সালের শেষ প্রান্তিকে প্রদেয় কিস্তি কিংবা ঋণের ৫০ শতাংশ পরিশোধ করে খেলাপির তালিকা থেকে বাইরে থাকার ব্যবস্থার মাধ্যমে। সম্ভাব্য খেলাপিদের এই ছাড়ের সঙ্গে ব্যাংকগুলোকেও দেওয়া হয়েছে অন্য ধরনের সুযোগ; যাতে ২০২২ সালে আরোপিত সুদ (নগদ আদায় না হলেও) ব্যাংকের আয় খাতে স্থানান্তর করা যাবে। এ কথা নিশ্চিত, এ দুই নির্দেশনার কারণে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র কিছুটা আড়াল করা যাবে বটে, কিন্তু দুর্বলতা কাটানো যাবে না, বরং সেটা আরও ঘনীভূত হবে। করোনাভাইরাসের অভিঘাত এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো যেমন এ ব্যবস্থার সুফল পাবে, তেমনিভাবে ইচ্ছাকৃত খেলাপিরাও এই সুযোগের আওতায় লাভ করবেন বিশেষ সুবিধা, যা ন্যায়বিচারের নিরিখে অনাকাঙ্ক্ষিত।
ব্যাংক খাতের এই পরিস্থিতি উত্তরণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। এ ব্যবস্থার প্রধান অন্তরায় সুশাসনের ঘাটতি, খেলাপি ঋণ ও সেটি গোপন করার প্রবণতা এবং বিদ্যমান আইনের অপর্যাপ্ততা। এসব দুর্বলতা কাটানোর জন্য প্রয়োজন যথাযথ সংস্কার কর্মসূচি। বর্তমানে বিবেচনাধীন ব্যাংকিং কোম্পানি আইনের সংশোধনীর খসড়াতে যুক্ত হতে যাচ্ছে বহু প্রতীক্ষিত 'ইচ্ছাকৃত খেলাপি' চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান। এটি যদি কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা যায়, তাহলে ব্যাংকারদের অসহায় অবস্থার আংশিক অবসান হবে বলে ধারণা করা যায়। তবে এই নতুন বিধানের সাফল্য নির্ভর করবে ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের সংজ্ঞা নির্ধারণ এবং তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তার ওপর। সংজ্ঞাটি শিথিল ও অস্পষ্ট হলে আইনের ফাঁক গলিয়ে সত্যিকার ইচ্ছাকৃত খেলাপিরা পার পেয়ে যেতে পারবেন। তাই সব আইন এবং বিধানের সুষ্ঠু প্রয়োগের জন্য সবার আগে প্রয়োজন সুশাসন নিশ্চিত করা। বর্তমানে আমাদের দেশের অনেক বিদ্যমান আইনই সুশাসনের অভাবে কার্যকর করা যাচ্ছে না। ব্যাংকের সুশাসন এমনই একটি বিষয়, যা নির্ভর করে একাধিক পক্ষের সদিচ্ছার ওপর। এই পক্ষগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ, কর্মকর্তাবৃন্দ এবং সর্বোপরি নিয়ন্ত্রক সংস্থা। যে কোনো এক পক্ষের একক চেষ্টায় সুশাসন নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এটি প্রমাণিত হয় দেশি ও বিদেশি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হারের বিশাল তারতম্য দিয়ে। সর্বশেষ (সেপ্টেম্বর ২০২২) হিসাবে বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার ৪.৭৭ শতাংশ, অন্যদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে এই হার ২৩ শতাংশ এবং বেসরকারি ব্যাংকে ৬ শতাংশ। পাকিস্তানি একটি ব্যাংকে এই হার ৭৮ শতাংশ না হলে বিদেশি ব্যাংকের খেলাপি হার আরও কম হতো। এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার কম থাকার অন্যতম প্রধান কারণ কঠোরভাবে প্রতিষ্ঠিত সুশাসন।
অতএব এ কথা জোর দিয়ে বলা যায়, ব্যাংকিং ব্যবসায় সর্বাত্মক সুশাসন নিশ্চিত করা গেলে এই খাতের বর্তমান দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে ওঠা সহজতর হবে। এ জন্য আমাদের হতে হবে ব্যবসাবান্ধব, ব্যবসায়ীবান্ধব নয়। এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে একটি দুর্বল ব্যাংক খাত নিয়ে দেশের অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জন করা অসম্ভব, যেটুকু অর্জিত হয়েছে, সেটিও ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।
লেখক
ব্যাংকার
প্রাবন্ধিক