দেশের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় আট কোটি শিশু। তাদের উন্নয়নে বিচ্ছিন্নভাবে সরকার অনেক উদ্যোগ নিয়েছে। তবে সমন্বয়হীনতার কারণে বেশিরভাগ উদ্যোগ বাস্তবায়ন হয় না। ফলে শিশুদের ওপর চলমান ধর্ষণ নির্যাতনের রাশ টেনে ধরা যাচ্ছে না। সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে শিশুদের সুরক্ষায় অধিদপ্তরের বিকল্প নেই। শিশুদের সুরক্ষায় আইন ও নীতিমালা থাকলেও শিশু অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার দাবি দীর্ঘদিনের। আন্তর্জাতিক ফোরামে সরকারের অঙ্গীকার থাকা সত্ত্বেও এ বিষয়ে অগ্রগতি নেই। মুজিববর্ষকে স্মরণীয় করে রাখতে ২০২০ সালের মধ্যে শিশু অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার জোর দাবি জানান তারা। গত ৩১ ডিসেম্বর বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে দৈনিক সমকাল কার্যালয়ে এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। 'শিশুবিষয়ক পৃথক অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠায় অগ্রগতি ও আমাদের মতামত' শীর্ষক বৈঠকটি যৌথভাবে আয়োজন করে সমকাল ও চাইল্ড রাইটস অ্যাডভোকেসি কোয়ালিশন ইন বাংলাদেশ
আবু সাঈদ খান
ক্রমেই সমাজ এবং দেশ শিশুদের বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে। আজকাল ইন্টারনেট ও খেলনার আড়ালে ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে বসেছে। এখনকার শিশুরা সাঁতার জানে না। বলী খেলা হারিয়ে গেছে।

আমরা তাদের খেলাধুলার জায়গা করে দিতে পারছি না। একসময় অনেক শিশু সংগঠন ছিল। শিশুরা নানারকম সৃজনশীল কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল। এখন সে অবস্থা নেই। খেলাধুলা ও সৃজনশীলতা থেকে দূরে সরে শিশুরা যেমন জড়িয়ে পড়ছে নানারকম অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে, তেমনি তাদের ওপর বৃদ্ধি পেয়েছে নির্যাতন-সহিংসতার মাত্রাও। যৌন নির্যাতন ব্যাধির মতো ছড়িয়ে গেছে। এখান থেকে উত্তরণে সরকারের অনেক উদ্যোগ রয়েছে সত্যি, বেশিরভাগ ঘটনার বিচার হয় না। কয়েকটি ঘটনার দ্রুত বিচারের দৃষ্টান্ত দেখা গেলেও রায় কার্যকরে গড়িমসিও লক্ষণীয়। একরকম প্রতিকারহীনভাবে চলছে সবকিছু। শিশুদের সুরক্ষায় আইন এবং নীতিমালা রয়েছে। আদালতের নির্দেশনাও আছে। তবে সেগুলো জায়গামতো কার্যকর এবং পর্যবেক্ষণের অভাব রয়েছে। এ জন্য বিভিন্ন মহল থেকে জোরালো দাবি উঠেছিল শিশুবিষয়ক একটি আলাদা অধিদপ্তর গঠন করার। সরকার সেই দাবিতে সায়ও দিয়েছিল। কিন্তু কার্যক্রম থমকে রয়েছে। প্রায় আট কোটি শিশুর বিষয়গুলো দেখভালের কাজটি পৃথক একটি অধিদপ্তর ছাড়া মোটেও সহজ হবে না। তাই নাগরিক মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুত পৃথক অধিদপ্তর গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি।


কাজী রিয়াজুল হক
শিশুদের জন্য খেলার মাঠ নেই। মুক্ত বাতাস নেই। এ অবস্থায় তারা নানারকম ঝুঁকির মুখে পড়েছে। কীভাবে শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে পারি।

তাদের নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচাতে পারি, সে বিষয়ে আমাদের ভাবতে হবে। শিশুদের অবস্থা আজকে কোথায় দাঁড়িয়ে? পরিবারে শিশুদের অবস্থান কোথায়? শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখনও শিশুদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন হচ্ছে। অনেক শিক্ষকই জানেন না, দেশে এমন একটি আইন রয়েছে যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পেটানো যাবে না। অথচ বাংলাদেশই প্রথম কোনো দেশ, যেখানে স্বাধীনতার খুব অল্প সময়ের মধ্যে শিশু অধিকার আইন হয়েছে। জাতিসংঘ যা করেছে তার ১৫ বছর পর। বাংলাদেশের আইনটি যথেষ্ট ভালো ছিল। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। আইন থাকলেও সেটির প্রয়োগ নেই। দেশের একটি বড় অংশ শিশু। এরাই একদিন দেশকে নেতৃত্ব দেবে। শিশুদের সব বিষয় দেখভালের জন্য শুধু শিশু অধিদপ্তর নয়, একটি কমিশনও জরুরি। এরপর দরকার একটি স্বাধীন নিয়ন্ত্রক সংস্থা। সরকার বলে থাকে, দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ৪৫ শতাংশ শিশু। তারাই দেশের নেতা। সুতরাং তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আরও জোরালো আওয়াজ তুলতে হবে।


শাহীন আনাম
শিশু অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার দাবি দীর্ঘদিনের। এ বিষয়ে কমিটিও হয়েছে। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন এই প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত ছিল। কিন্তু এ মুহূর্তে অগ্রগতি কতটুকু, সেটি বলা মুশকিল। কারণ, আমরা তা জানিই না।

আমরা এখন মন্ত্রণালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি লিখে হয়তো এর অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজ নিতে পারি। কিন্তু বিষয়টি খুবই হতাশাজনক। আমরা খুব আশা নিয়ে একটি অধিদপ্তর চেয়েছিলাম, যেখানে শিশুদের জন্য অনেক সুব্যবস্থা থাকবে। শিশুদের নিয়ে ভাবনার মানুষ থাকবে। দেশে শ্রেণিভিত্তিক নানা বৈষম্য দেখা যায়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশুরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে শিশুরা অনিরাপদ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। আমাদের সবার সংকল্প হোক- আমাদের শিশুদের আমরাই রক্ষা করব। সব শিশুর প্রতি আমাদের সমান দায়িত্ব রয়েছে। তবে এটাও ঠিক যে, শিশুদের নিয়ে কাজ করা অনেক কষ্টের। কারণ, শিশুদের নিজেদের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। ফলে তাদের খুব সহজেই অন্য কেউ ব্যবহার করে ফেলতে পারে। সুতরাং তাদের বিষয়ে আমাদের অবশ্যই চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। তাই তাদের উন্নয়নে কাজ করা এবং সুরক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। সে কাজটি অধিদপ্তর ছাড়া বিচ্ছিন্নভাবে হবে না।


শাহানারা মনিকা
জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদের ৩০ বছর পূর্তির এই বিশেষ মুহূর্তটা আদর্শ সময় ছিল দেশে শিশু অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার। বিষয়টি নতুন করে দাবি আকারে তোলার দরকার নেই।

কারণ, শিশু অধিদপ্তর সরকারের একটি অঙ্গীকার। বিভিন্ন সময় আন্তর্জাতিক ফোরামে সরকার এ ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি এবং ঘোষণা দিয়ে আসছে। ফলে এ বিষয়ে নতুন করে দাবি তোলার কিছু নেই। কিন্তু দেখা যায়, দেশে নতুন নতুন ইস্যু আসে, তাতে হারিয়ে যায় শিশু অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার বিষয়টি। শিশুদের বিষয়ে আলাপ হয় না বললেই চলে। শিশুদের অধিকারকে মানবাধিকার পরিস্থিতির অংশ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। আমাদের আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতার দিক থেকে চিন্তা করলেও অনেক কাজ বাকি রয়েছে। জাতিসংঘে আমরা ২৪টি সুপারিশ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করে এসেছি। আমাদের শিশুদের কল্যাণ আমরাই নিশ্চিত করব। এ জন্য আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী কেন আমাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করবে? আমরা নিজেরা সেটি নিশ্চিত করে না পারা আমাদেরই ব্যর্থতা। প্রায় আট কোটি শিশুর জন্য একটি অধিদপ্তর নেই, এটি মানাই যায় না। শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠায় সরকার ও আদালতের বিভিন্ন সময়ের নির্দেশনা মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়নে সমন্বয়হীনতা দেখা যায়। এ ছাড়া বিচ্ছেদের শিকার পরিবারের সন্তানের দায়িত্ব নিয়েও দেশে নানারকম টানাহেঁচড়া দেখা যায়। অথচ ওই সন্তান লালন-পালনের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। বিদ্যমান সমস্যাগুলো নিরসনে একমাত্র অধিদপ্তরই উপযুক্ত বিকল্প।


সুলতানা রাজিয়া
আমাদের সবার লক্ষ্য এক। একদিন আমরাও সবাই শিশু ছিলাম। নানা বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা তাগিদ বোধ করছি শিশুদের জন্য কিছু করার। শিশুদের সুরক্ষায় রাষ্ট্রীয় সমন্বয় খুবই জরুরি।

বর্তমানে দেখা যাচ্ছে, নানা অপশক্তি শিশুদের ব্যবহার করে যাচ্ছে। যাদের কারণে শিশুরা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। তাদের শাস্তির মুখোমুখি দাঁড় করাতে হবে। শিশুদের যেন কেউ ব্যবহার করতে না পারে, সে বিষয়টি আগে নিশ্চিত করা জরুরি। সরকারের স্বল্পসংখ্যক জনবল দিয়ে এত বিপুলসংখ্যক শিশুর সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
রাষ্ট্রের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা এবং সর্বস্তরের মানুষের এ কাজে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ, আমরা সবাই পরস্পর পরিপূরক। শিশুর পরিপকস্ফতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার মায়েদের দিকে নজর দিয়েছে। তাদের মাতৃত্বকালীন ভাতা দিচ্ছে। এরপর কিশোর-কিশোরী ক্লাব হয়েছে। ডে-কেয়ার সেন্টার হয়েছে। তবে এগুলোর পরিসর আরও বাড়াতে হবে। পরিবার যেন শান্তিময় হয়, অসুস্থ মানসিকতা নিয়ে যেন কোনো শিশুকে বেড়ে উঠতে না হয়, সে বিষয়গুলো দেখভালের জন্য শিশু অধিদপ্তর জরুরি।


মো. নূরুননবী শান্ত
জাতিসংঘ সনদ অনুযায়ী, ১৮ বছরের নিচে যে কোনো মানব সন্তানকে শিশু বিবেচনায় নিলে দেশে বর্তমানে মোট জনগোষ্ঠীর ৪৭ শতাংশই শিশু। যদিও সরকারি হিসাব মতে, শিশু ৪৫ শতাংশ।

যাই হোক, প্রায় আট কোটি শিশু রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু আমরা শিশুদের কতখানি গুরুত্ব দিচ্ছি, সেটি অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে। বাজেটে নানা বিষয়ে সরকার গুরুত্ব দিয়ে থাকে। কিন্তু শিশুদের বিষয়টি বাজেটে আশানুরূপ গুরুত্ব পাচ্ছে না। শিশুরা ধাপে ধাপে নতুন নতুন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ওরা নিজেদের কতখানি খাপ খাওয়াতে পারছে, সেটি আমরা দেখছি না।
পরিবারের মা-বাবা তাদের সন্তানদের পর্যাপ্ত সময় দিতে পারছেন না। এর নানারকম নেতিবাচক প্রভাব সমাজে এবং পরিবারে ইতোমধ্যে লক্ষণীয়। বিচ্ছিন্নভাবে এ ঘটনাগুলোই একসময় বড় হয়ে দাঁড়ায়। তাই এখনই শিশুদের নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। উন্নয়ন কতটা টেকসই হবে, সেটি নির্ভর করবে আজকের শিশুদের উন্নয়নে কতটা গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে তার ওপর।


অধ্যাপক ইসরাত শামীম
ডিজিটালাইজেশনের সুযোগ নিয়ে একশ্রেণির সুবিধাবাদী শিশুদের সামনে ফাঁদ পেতে রাখে। শিশুরা অনলাইনে যুক্ত হয়ে হেনস্তার শিকার হয়। এমনকি যৌন নির্যাতন পর্যন্ত হচ্ছে।

নানা কায়দায় ওরা পাচারকারীদের খপ্পরেও পড়ছে। এর বড় একটি কারণ, পরিবারে মা-বাবার সন্তানদের পর্যাপ্ত সময় না দেওয়া। একাকিত্বের সুযোগে বাচ্চারা ঝুঁকে পড়ে অনলাইনে। তারা তো বুঝতেই পারে না, এখানে কত রকমের ফাঁদ পাতা রয়েছে তাদের জন্য। সরল বিশ্বাসে শিশুরা খপ্পরে পড়ে যায়। অভিভাবকরা বুঝতেই পারেন না যে, তাদের বাচ্চা কতটা ভয়ঙ্কর ফাঁদে আটকে যাচ্ছে। শিশুদের টোল-ফ্রি হেল্পলাইন ১০৯৮ সম্পর্কে প্রচারণা দেখা যায় না। অনলাইনভিত্তিক যৌন নির্যাতন এবং হেনস্তার ঘটনাগুলো আমাদের আমলে নিয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে এখনই। সেখানে অনেক ধরনের অপরাধ হয়ে যাচ্ছে নীরবেই। শারীরিক নির্যাতনের চেয়েও মানসিক নির্যাতন বেশি ভোগায়।


এম রবিউল ইসলাম
শিশুদের নানা বিষয় দেখভালের জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে একটি বিশেষ কমিটি রয়েছে।

শিক্ষা, পাচার, ধর্ষণ, নির্যাতনসহ ওদের যাবতীয় বিষয় নিয়ে কমিটিতে আলোচনা হয়ে থাকে। সরকারকে নানারকম সুপারিশও কমিটির তরফে দেওয়া হয়। বিচ্ছিন্নভাবে সরকারের বাইরে অনেক উন্নয়ন সংস্থাও শিশুদের জন্য কাজ করছে। কিন্তু দেশের বিপুলসংখ্যক শিশুর জন্য এসব যথেষ্ট নয়। দরকার হলো আলাদা একটি অধিদপ্তর; যেখানে শুধু শিশুদের ভালোমন্দ উঠে আসবে। প্রতিকার এবং সম্ভাবনা বড় করে দেখা যাবে। শিশু অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সরকারকে সুপারিশ করেছিল। সরকার সেটি সাদরে গ্রহণও করেছে। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি এখনও বাস্তবায়ন না হওয়া খুবই দুঃখজনক। আগামী সিটি নির্বাচনসহ দেশের যে কোনো নির্বাচনে যেন শিশুদের কোনো কাজে ব্যবহার করা না হয়, সেদিকে সবাইকে লক্ষ্য রাখার আহ্বান জানান তিনি।

তানজিম ফেরদৌস
শিশু অধিকার নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষা, সুরক্ষা, পুষ্টি এবং মানসিক অবস্থার ওপর জোর দিতে হবে।

নব্বইয়ের দশকে আমাদের আন্দোলন ছিল শিশুদের স্কুলমুখী করা। আমরা সে জায়গায় সফল হয়েছি। তবে হতাশার জায়গা হলো, আমরা তাদের জন্য এই শিক্ষা কতটা টেকসই করতে পেরেছি। শিক্ষার গুণগত মান নিয়ে জোরালো আলোচনা শোনা যায় না। শিশুদের সুরক্ষায় আইন হয়েছে ঠিকই, এর প্রয়োগের দিকে মনোযোগ নেই। পাশাপাশি শিশুদের শারীরিক গঠনের দিকটা আমাদের গুরুত্ব সহকারে ভাবতে হবে। তাদের মানসিক বিকাশের জায়গাগুলো জবরদখল হয়ে গেছে। গুটিকয়েক যেগুলো আছে, সেখানে সর্বসাধারণের প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত। জাতীয় সংসদের পাশে যে প্রতিবন্ধীদের জন্য একটি খেলার মাঠ বরাদ্দ রয়েছে, ক'জনই বা সেই তথ্য জানেন! শিশুদের জন্য অধিদপ্তর হতে হবে, সেখানে নেতৃত্বে আনতে হবে খুবই ডায়নামিক ব্যক্তিদের। দক্ষ কর্মকর্তাদের এখানে যুক্ত করতে হবে। আমাদের বড় লক্ষ্য ঠিক করতে হবে।


তাসলিমা আক্তার
বাংলাদেশের ৪৭ শতাংশ শিশু এ দেশের ভবিষ্যৎ নাগরিক।

শিশুর সর্বাত্মক স্বার্থ সুরক্ষায় শিশু অধিকার সুরক্ষার বিষয়টি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে বিভক্ত না হয়ে ৫৪টি বিষয়ের একটি বিষয় না হয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আলাদা অধিদপ্তরের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।

তবে এটি হতে হবে সংবেদনশীল অধিদপ্তর। থাকতে হবে কিছু সংবেদনশীল মানুষের সমন্বয়।

এ ধরনের একটি গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করার জন্য সমকালকে ধন্যবাদ জানাই।




তাহমিনা আক্তার
আমরা শিশুদের নানা বিষয়ে কাজ করে থাকি। সারাদেশে প্রায় সাড়ে তিন হাজার স্বেচ্ছাসেবক রয়েছে।

কাজ করতে গিয়ে উপলব্ধি করেছি, শিশুদের জন্য এখনও পরিবারেই নিরাপদ পরিবেশ গড়ে ওঠেনি। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে শিশুরা পরিবার থেকেই নিগৃহীত হচ্ছে। হেনস্তার শিকার হলেও বিচার পাচ্ছে না পরিবারের অসহযোগিতার কারণে।

পরিবারে সে রকম পরিবেশ গড়ে ওঠেনি বলেই শিশুরা নির্যাতনের কথা নীরবে সয়ে যায়, কিংবা বাইরের কারও সঙ্গে শেয়ার করে। শিশুদের নিয়ে কাজ করতে হলে আমাদের আগে পরিবার নিয়ে কাজ করা দরকার। যাতে নির্ভয়ে শিশুরা তাদের কথা বলতে পারে। অন্যদিকে শিক্ষা খাতে উন্নয়নের চিত্র বোঝাতে সংখ্যা উল্লেখ করা হয়। অথচ সেই শিক্ষা কতটা টেকসই হয়েছে, সেটি বিবেচনায় আনা হচ্ছে না। কোয়ান্টিটির মতো কোয়ালিটির দিকেও আমাদের মনোযোগী হওয়া উচিত। সামগ্রিকভাবে শিশুদের দেখভালের জন্য আলাদাভাবে কিছু দরকার। এমন কিছু থাকবে, যেখানে শিশুরা তাদের অধিকারের কথা বলতে পারবে। এ জন্য পৃথক অধিদপ্তরই উপযুক্ত বিকল্প। আমরা যেন মুজিববর্ষে সেটি পেয়ে যাই, সে প্রত্যাশা রইল।


ইফতেখার আহমেদ
বাজেটে বরাদ্দ দিয়ে বাস্তবায়ন হয় না। অধিকার দিয়ে সেটি হরণ করা হয়।

সেখানে কীভাবে আমরা শিশু অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার দাবি তুলব। জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদের ৩০ বছর পূর্ণ হয়েছে।

কিন্তু সত্যিকারের বাস্তবতা কী। আমরা শিশুদের নিয়ে সভা-সেমিনার করছি। নানারকম প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি।

কিন্তু পরিবর্তন কতটা এসেছে? শিশুদের আমরা কতখানি গুরুত্ব দিচ্ছি? সব জায়গায় তারা অবহেলিত।

শিশুদের সুরক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। কিন্তু বাস্তবের চিত্র ভিন্ন। আমাদের সবার জোর গলায় আওয়াজ তুলতে হবে শিশু অধিদপ্তর যেন দ্রুত প্রতিষ্ঠা হয়।


রাশেদা আক্তার
প্রাথমিক শিক্ষায় ঝরে পড়া রোধে আমরা সফল হয়েছি কিন্তু শিক্ষার গুণগত মান নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে।

এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৬৫ শতাংশ শিশু বাংলা পড়তে পারে না। বস্তিগুলোতে এখনও বাল্যবিয়ের হার ৮২ শতাংশ। রাজন, রাকিব হত্যার বিচারের রায় দ্রুত সময়ে পেয়েছি কিন্তু রায় কার্যকর হয়নি এখনও। শিশুদের বড় ইস্যুগুলো আলোচনায় আসে, কিন্তু ছোট ছোট ইস্যুগুলো গুরুত্ব পায় না। অথচ বিচ্ছিন্নভাবে অনেকগুলো সমস্যার যোগসূত্র হলো একেকটি বড় সমস্যা। এই পরিস্থিতি শিশুদের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অনুপস্থিতির প্রকটতা প্রমাণ করে। আমাদের বিশেষ জায়গায় বিশেষভাবে নজর দেওয়া দরকার। শিশুদের সঠিকভাবে পরিচর্যা করতে না পারলে আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। শিশুদের জন্য একটি পৃথক অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠায় সরকারের মধ্যে এক ধরনের ধীরগতি লক্ষণীয়। আমরা চাই মুজিববর্ষ স্মরণীয় হয়ে থাকুক সময়ের এই দাবিটি মিটিয়ে।

আবদুছ সহিদ মাহমুদ
বিভিন্ন পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা গেছে, ২০১৮ সালে দেশে শিশু ধর্ষণের সংখ্যা ৫৭১।

২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত এটি বেড়ে দাঁড়ায় ৯৭১। বছর শেষে হয়তো এক হাজার অতিক্রম করতে পারে। আত্মহত্যার প্রবণতা কিছুটা কমেছে। ২০১৮ সালে ছিল ২৯৮, ২০১৯ সালে কমে হয়েছে ১৫৬। আশঙ্কার জায়গা হলো, শিশুরাই শিশুদের নির্যাতন করছে। শিশুদের দ্বারা অপহরণ, ধর্ষণ এমনকি খুন পর্যন্ত হচ্ছে। এই অপরাধপ্রবণ শিশুগুলো যখন প্রাপ্তবয়স্ক হবে, তখন তারা আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। শিশু-কিশোরদের গ্যাং কালচার গড়ে উঠেছে দেশের প্রত্যেক পাড়া-মহল্লায়। কথিত বড় ভাইদের অস্ত্র-মাদক বহনসহ হেন কোনো অপরাধ নেই তারা করে না। এ জন্য বিচার প্রক্রিয়ায় গতি আনতে হবে। মামলাগুলোকে দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে। রায়ও কার্যকর করতে হবে অতিদ্রুত। শিশু রাজন ও রাকিব হত্যার বিচার দৃষ্টান্তমূলক দ্রুততার সঙ্গে হয়েছে। অথচ চার বছর অতিক্রম হলেও রায় কার্যকর হয়নি। দেশে বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষা আইন এখনও হয়নি। সামগ্রিকভাবে মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ শুধু আইন দিয়ে হবে না, এর জন্য প্রয়োজন মানসিকতার পরিবর্তন।


কাজী আবদুল কাদির

আমরা উন্নত রাষ্ট্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।

সরকারেরও প্রত্যাশা একটি সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ে তোলা। সেই সঙ্গে আমাদেরও মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। শিশুশ্রম নিরসনে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে। সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে সবরকম শিশুশ্রম বন্ধে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেটি বাস্তবায়িত হোক। কিন্তু লক্ষ্যটা বেশি দূরে নয়। দেশে যে পরিমাণ শিশু নানারকম ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদের সেখান থেকে মুক্ত করে উন্নত জীবন দিতে হলে অনেক প্রচেষ্টা থাকতে হবে। বিচ্ছিন্নভাবে এবং সমন্বয়হীনতার মাধ্যমে সেই লক্ষ্য পূরণ কোনোভাবেই সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে শিশু অধিদপ্তরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আশা করব, নতুন বছরে এটি প্রতিষ্ঠা হোক।

মীর রেজাউল করিম
প্রায় দুই লাখ শিশুর সঙ্গে সরাসরি আমরা মাঠপর্যায়ে কাজ করে থাকি।

গত দুই বছরে প্রায় ৮৮ হাজার শিশুকে নানা ধরনের শ্রম থেকে ফিরিয়ে আনতে পেরেছি। সরকার শিশুদের উন্নয়নে অনেক ভালো ভালো পদক্ষেপ নিয়েছে। থানা পর্যায়েও অনেক পরিবর্তন এসেছে। এত কিছুর পরেও পৃথক একটি অধিদপ্তর কেন, সেটি অবশ্যই সবার কাছে পরিস্কার।

আমরা শিশুদের সঙ্গে সরাসরি কাজ করতে গিয়ে অনেক বাস্তবতা সামনে থেকে দেখেছি। শিশুরা নানারকম ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমের সঙ্গে যুক্ত। নারীদের জন্য আলাদা অধিদপ্তর রয়েছে। ওই অধিদপ্তরের আওতায় উপজেলা, ইউনিয়ন এমনকি গ্রামপর্যায়ে নানারকম কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। অথচ বিপুলসংখ্যক শিশুর জন্য নেই। শিশু অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা না হলে সরকারের কোনো উদ্যোগই ফলপ্রসূ হবে না।

ফরিদা ইয়াসমিন
দেশে কমিউনিটিকেন্দ্রিক শিশু সুরক্ষার পরিবেশ এখনও সেভাবে গড়ে ওঠেনি, যদিও সরকারের শিশু অধিকার বিষয়ে অনেক ভালো উদ্যোগ এবং অঙ্গীকার রয়েছে।

শিশু সুরক্ষার পরিবেশ সঠিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য তৃণমূল স্তরে মনিটরিং ব্যবস্থা আরও ঢেলে সাজাতে হবে। জাতীয় শিশু নীতিমালায় যেসব নির্দেশনা আছে, সেগুলো আজও বাস্তবায়ন হয়নি। মনে রাখতে হবে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের সঙ্গে বাল্যবিয়ের একটা যোগসূত্র রয়েছে, যে কারণে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের মতো সামাজিক অপরাধের লাগাম আজও টেনে ধরা সম্ভব হচ্ছে না।

সরকারের অঙ্গীকার রয়েছে; কাউকে পেছনে রেখে এগিয়ে যাওয়া যাবে না। সরকারের এই অঙ্গীকার বাস্তবায়নে বিশেষ করে মেয়েশিশুদের সুরক্ষার দিকে নজর বাড়াতে হবে। যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ এবং সুরক্ষা আইনের খসড়া বর্তমানে পর্যালোচনার পর্যায়ে রয়েছে, যা আইনসভায় পাস হলে যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ ও শিশু সুরক্ষার পরিবেশ রক্ষায় ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি।


কাজী ফারুক আহমেদ
শিক্ষার মধ্যে মানবাধিকারের সংশ্নিষ্টতার বিষয়গুলো আমি তুলে ধরার চেষ্টা করি।

শিশুদের ওপর নির্যাতনরোধে সরকারের যে প্রতিশ্রুতি, সেগুলো জাতিসংঘে তুলে ধরেছে সরকার। শিশু অধিদপ্তর গড়ে তোলা সরকারের অঙ্গীকার। শিশুদের ওপর শারীরিক নির্যাতন বন্ধে আদালতের যে নির্দেশনা, বেশিরভাগ স্কুল সে তথ্য জানেই না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো অভিযোগ বাক্স নেই। শিশুদের ওপর শারীরিক নির্যাতনের কুফল সম্পর্কে সবাইকে বোঝাতে হবে। শিশুদের সুরক্ষায় অন্যান্য দেশের ইতিবাচক পদক্ষেপগুলো আমাদের অনুসরণ করা উচিত। এমনকি উগান্ডা ও কেনিয়ার মতো দেশ শিশুদের সুরক্ষায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছে। আমাদের তাদের কাছ থেকে শেখা উচিত। পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতাদের এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে হবে। শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠায় তাদের নানাভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। নেতারা চাইলে অনেক কিছু সম্ভব। সরকার সহজে কিছু মানতে চায় না। এ জন্য সামাজিক আন্দোলনের বিকল্প নেই।


সাবিনা সুলতানা
নারী ও শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল গ্রোগ্রামের অধীনে ন্যাশনাল ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টার ২০০৯ সাল থেকে কাজ করে যাচ্ছে।

তবে সরকারের একার পক্ষে সব কাজ করা সম্ভব নয়। এখন প্রয়োজন ইতিবাচক একটি পরিবার এবং ভয়ভীতিহীন শিক্ষাকেন্দ্র।

কিশোর-কিশোরী ক্লাবগুলো শক্তিশালী করতে হবে। তাদের কথা বলার সুযোগ বাড়াতে হবে।



খন্দকার মোহাম্মদ শহিদুজ্জামান
একসময় সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে নানা মুখরোচক কথা শোনা যেত। তারা নাকি কাজ করেন না।

কিন্তু এখন ফাঁকি দেওয়ার আর সুযোগ নেই। এত বেশি কাজ, দম ফেলার ফুরসত থাকে না। দায়িত্ব বেড়েছে। কাজ বেড়েছে। সমাজসেবা অধিদপ্তর অন্যান্য কাজের পাশাপাশি শিশুদের জন্যও কাজ করে যাচ্ছে। ১৩০টি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মধ্যে ৫৪টি বাস্তবায়ন করে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে একটি কর্মসূচি রয়েছে শিশুবিষয়ক। এই কর্মসূচির আওতায় শিশুদের সুরক্ষা, বিচার, উন্নয়নসহ যাবতীয় বিষয়গুলো দেখভাল করা হয়। শিশুদের সুরক্ষা প্রশ্নে আমরা দায়বদ্ধ। কিন্তু একটিমাত্র কর্মসূচি দিয়ে প্রায় আট কোটি শিশুর সুরক্ষা সম্ভব নয়। সেদিক থেকে চিন্তা করলেও শিশু অধিদপ্তরের গুরুত্ব প্রকাশ পায়। অনেক কাজের মধ্যে সমন্বয়হীনতা লক্ষ্য করা যায়। ফলে অনেক চেষ্টা শেষ পর্যন্ত ফলপ্রসূ হয় না। পৃথিবীর কোথাও এত শিশু নেই। বাংলাদেশের শিশুদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনা করা উচিত।

সঞ্চালনা
আবু সাঈদ খান,উপ-সম্পাদক, সমকাল
আলোচকবৃন্দ

কাজী রিয়াজুল হক, সাবেক চেয়ারম্যান, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন
শাহীন আনাম, নির্বাহী পরিচালক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন
শাহানারা মনিকা, পরিচালক (জাতিসংঘ), পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
সুলতানা রাজিয়া, অতিরিক্ত পরিচালক, মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর
মো. নূরুননবী শান্ত, টিম লিডার, শিশু অধিকার ইউনিট, আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)
অধ্যাপক ইসরাত শামীম, সভাপতি, সিডব্লিউসিএস
এম রবিউল ইসলাম, উপ-পরিচালক, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন
তানজিম ফেরদৌস, ন্যাশনাল কনসালট্যান্ট, ইউএনডিপি
তাসলিমা আক্তার ,ডেপুটি ম্যানেজার, উইমেন রাইটস অ্যান্ড জেন্ডার ইকোয়ালিটি, অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ
তাহমিনা আক্তার, চাইল্ড ওয়েলফেয়ার ও এডুকেশন প্রোগ্রামের প্রধান, জাগো ফাউন্ডেশন
ইফতেখার আহমেদ, প্রোগ্রাম প্রধান, বি-স্ক্যান
রাশেদা আক্তার, ম্যানেজার, চাইল্ড রাইটস গভর্ন্যান্স অ্যান্ড প্রটেকশন সিভিল সোসাইটি অ্যান্ড পলিসি অ্যাডভোকেসি, সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশ
আবদুছ সহিদ মাহমুদ, পরিচালক, বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম
কাজী আবদুল কাদির, বিশেষজ্ঞ, এডুকেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট
মীর রেজাউল করিম, কো-অর্ডিনেটর, রিজিওনাল অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড চাইল্ড প্রটেক্ট, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ
ফরিদা ইয়াসমিন, প্রধান, চাইল্ড রাইটস অ্যান্ড ইয়্যুথ গভর্ন্যান্স প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ
কাজী ফারুক আহমেদ, চেয়ারম্যান, ইনিশিয়েটিভ ফর হিউমেন ডেভেলপমেন্ট
সাবিনা সুলতানা, সিনিয়র গ্রোগ্রাম অফিসার, নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়
খন্দকার মোহাম্মদ শহিদুজ্জামান, সমাজসেবা কর্মকর্তা, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়

অনুলিখন
জয়নাল আবেদীন
স্টাফ রিপোর্টার, সমকাল