ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষি শিক্ষা ও কৃষি সম্প্রসারণকে এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া দরকার। বিশেষ করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য যেসব কৃষিপণ্য অপরিহার্য, তার উৎপাদন আধুনিকায়ন করার বিকল্প নেই। কৃষি খাতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সুবিধা কাজে লাগাতে হবে। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সমকাল কার্যালয়ে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে এ কথা জানান বিশেষজ্ঞরা। 'কৃষি সম্প্রসারণে ভিডিওর ব্যবহার' শিরোনামে এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে সমকাল, গণসাক্ষরতা অভিযান ও অ্যাকসেস এগ্রিকালচার

মুস্তাফিজ শফি :কৃষিকাজ কৃষকের। কিন্তু কৃষি ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন ও শিক্ষার জন্য অবশ্যই কৃষিবিদ, প্রযুক্তিবিদ, অর্থনীতিবিদদের এগিয়ে আসতে হবে। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত না হলে আগামী দিনের চাহিদা মোকাবিলায় যে কৃষির প্রয়োজন, সেটা মেটানো কষ্ট হবে। কারণ, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনও কৃষিনির্ভর। এখানে যে ভিডিওগুলোর কথা বলা হচ্ছে, সেগুলোর মাধ্যমে যদি কৃষকদের সামনে আরও উন্নত প্রযুক্তিতে সহজে লাভজনক কৃষি উৎপাদনের বিষয়টি তুলে ধরা যায়, তাহলে সেটা বাংলাদেশের কৃষি উৎপাদনকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। সমকাল চায়, বাংলা ভাষায় আরও এ ধরনের ভিডিও হোক। আরও উপযোগী হোক এবং এগুলো প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের কাছে ছড়িয়ে পড়ূক। এ জন্য সমকাল তার সামর্থ্য নিয়ে সঙ্গে থাকবে। সমকালের নিজস্ব অনলাইন এবং ফেসবুক পেজ আছে। অ্যাকসেস এগ্রিকালচার চাইলে সমকালের অনলাইনের মাধ্যমেও ভিডিওগুলো প্রচার করা সম্ভব।
এখানে আমি আরও একটা বিষয় বলতে চাই, সমকাল সংবাদ প্রকাশের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির সঙ্গে যুক্ত থাকাকে দায়িত্ব বলে মনে করে। এ জন্য শিক্ষা, প্রযুক্তি, পরিবেশ, কৃষি, বাণিজ্য, নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে গোলটেবিল ও আলোচনা সভার আয়োজন নিয়মিত করছে। এর মধ্য দিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সমকালের কাজের সম্পর্ক বিস্তৃত হচ্ছে। সমকাল এ ধারায় এগিয়ে যেতে চায়।
রাশেদা কে চৌধুরী :সমকালের সঙ্গে গণসাক্ষরতা অভিযান দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। শিক্ষা, পাঠ্যপুস্তক, নারীর ক্ষমতায়ন ইস্যু থেকে শুরু করে এখন কৃষিবিষয়ক শিক্ষা নিয়েও কাজ হচ্ছে। সমকাল এ ধরনের ইস্যু নিয়ে সব সময়ই কাজ করছে। এ জন্য সমকালের প্রতি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা।
গণসাক্ষরতা অভিযান কেন এ ধরনের উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, সেটা বলা দরকার। গণসাক্ষরতা অভিযান মূলত শিক্ষা নিয়ে কাজ করে। পাশাপাশি পরিবেশ ইস্যু, নারীর ক্ষমতায়নের বিষয় নিয়েও কাজ করে। কৃষির সঙ্গে পরিবেশের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। অতএব, কৃষিবিষয়ক শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গণসাক্ষরতা অভিযান। আরও একটা বিষয় জানা দরকার, অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের যাত্রা শুরু হয়েছিল বাংলাদেশ থেকেই আরও অনেক আগে 'ইরি'র সঙ্গে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে। এখানে বিশেষভাবে বলা দরকার, বাংলাদেশের জন্য যেসব ভিডিও তৈরি করা হয়েছে, সেগুলো বাংলাদেশের কৃষকদের যুক্ত করেই তৈরি করা। এরই মধ্যে ১০০টির বেশি ভিডিও হয়েছে। এসব ভিডিও প্রচারের জন্য বাংলায় ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছে। এই ওয়েবসাইট আজ এ আয়োজন থেকেই উদ্বোধন করা হচ্ছে।
এখানে আলোচনার মধ্য দিয়ে আরও কীভাবে উন্নত করা যায়, আরও বেশি উপযোগী করা যায়, সে বিষয়গুলো আশা করি উঠে আসবে। বাংলাভাষী মানুষ বাংলাদেশের বাইরেও আছে। তাদের কাছেও এ বিষয়টি নিয়ে যাওয়া দরকার। এখানে কৃষিবিদ, সরকারের সাবেক ও বর্তমান পদস্থ কর্মকর্তারা আছেন। আমরা চাই, সবাইকে নিয়ে এ বিষয়টিতে আরও এগিয়ে যেতে; আরও উন্নততর শিক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করতে।
আমি গর্বের সঙ্গে বলতে চাই, বাংলাদেশে অনেক ধরনের উদ্ভাবন হচ্ছে। এসব উদ্ভাবন প্রমাণ করে- বাংলাদেশের মানুষের কাজ করার অমিত সম্ভাবনা আছে। এই সম্ভাবনাকে এগিয়ে নিতে হবে। এরই মধ্যে বাংলাদেশে কৃষিতে বিপ্লব সাধিত হয়েছে। এখন কৃষিকে আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। এ জন্যই অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের ভিডিওগুলো ছড়িয়ে দেওয়া জরুরি। পরিবেশসম্মত কৃষির যে গুরুত্ব, তা তুলে ধরা জরুরি। মূলত এই জরুরি দায়িত্বের বিবেচনা থেকেই গণসাক্ষরতা অভিযান অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশের কৃষককে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহী করে তুলতে, তাদের সম্ভাবনার জায়গাগুলোকে বাস্তবে রূপ দিতে গণমাধ্যম, কৃষিবিদ, কৃষিপ্রযুক্তিবিদ, অর্থনীতিবিদ, নীতিনির্ধারক সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
নজরুল ইসলাম খান :এখানে যে মাধ্যমে কৃষকের কাছে ভিডিও পৌঁছে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, সে মাধ্যমে পৌঁছানো এখনও কষ্টসাধ্য। ইন্টারনেট কিনে ওয়েবসাইট দেখার জন্য আমাদের প্রান্তিক কৃষকরা কতটা প্রস্তুত, সেটা নিয়ে সংশয় আছে। আমি উপজেলা পর্যায়ে কাজ করেছি। ঢাকায় কাজ করার সময়েও তৃণমূলের ইন্টারনেট ব্যবস্থার সম্প্রসারণ নিয়ে কাজ করেছি। সে অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, ইন্টারনেট কিনে আমাদের দেশের কৃষকরা ওয়েবসাইট দেখবেন, সেটা এখনও সেভাবে তৈরি হয়নি। কিন্তু মনে রাখতে হবে, কোনো কিছুই অসম্ভব নয়। এ জন্য প্রতিটি গ্রামে কিছু পয়েন্টে ফ্রি ইন্টারনেট সেবা এলাকা প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। সরকার চাইলে মোবাইল অপারেটরদের দিয়ে এটি করা সম্ভব। এ ছাড়া যে ওয়েবসাইটের কথা বলা হয়েছে, সেখানে ক্লাউড সোর্সিং ব্যবহার করা যেতে পারে। এর ফলে অনেক বিষয়ে ভিডিও যোগ হবে। সেগুলো অনেক বেশি সহায়তা করবে ডিজিটাল কৃষিশিক্ষায়। অনেক দেশে কৃষিপণ্য উৎপাদনের পাশাপাশি প্রক্রিয়াজাতকরণের নানা পদ্ধতি আছে। তারা এর ওপর ভিডিও তৈরি করেছে। সেগুলো ক্লাউডের মাধ্যমে দেখতে পারলে আমাদের কৃষকরা উপকৃত হবে। সবচেয়ে ভালো হয় যদি স্মার্টফোনের জন্য একটি অ্যাপ তৈরি করা যায়, যে অ্যাপে কৃষক তার প্রয়োজনীয় তথ্যটি সহজেই পাবে। কারণ, স্মার্টফোন এখন তৃণমূলেও চলে গেছে। দিন দিন আরও সহজলভ্য হচ্ছে। ফলে স্মার্টফোন অ্যাপ হবে এ ক্ষেত্রে বড় সুযোগ।
এই যে ভিডিওর মাধ্যমে কৃষি সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেটা তখনই সফল হবে যখন এই ভিডিওগুলো খুব সহজে কৃষকের কাছে নেওয়া যাবে। এখন এটাই গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে। আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে ফলপ্রাপ্তি। অন্যান্য দেশে রাস্তার পাশে ফলের দোকান পাওয়া যায়। আমাদের দেশে কিন্তু পাওয়া যায় না। অথচ ফলের বিপুল চাহিদা। বিদেশ থেকে ফল না নিয়ে এসে আমাদের দেশেই চাহিদার সমান উৎপাদন করা গেলে সেটা বড় একটা অর্জন হবে। এখানেই উদ্ভাবনের প্রয়োজন। অর্থাৎ আমাদের দেশে কী ধরনের কৃষি উৎপাদন বাড়ানো জরুরি, সেটা নিয়ে গবেষণা, চিন্তাভাবনা করতে হবে। অনেক ছোট উদ্ভাবনও কিন্তু বড় কিছু এনে দিতে পারে। অতএব, আমাদের আশাবাদী হতে হবে, স্বপ্ন দেখতে হবে।
ড. আহমাদ সালাহুদ্দীন :অ্যাকসেস এগ্রিকালচার একটি আন্তর্জাতিক অলাভজনক উন্নয়ন সংস্থা। এর জন্ম ২০০২ থেকে ২০০৪ সালে বাংলাদেশে ইরির (ইন্টারন্যাশনাল রাইস রিসার্চ ইনস্টিটিউট) একটি প্রকল্পের মাধ্যমে। এটি প্রধানত পরিবেশসম্মত কৃষি বিষয়ে বিভিন্ন দেশের স্থানীয় ভাষায় প্রশিক্ষণ ভিডিও তৈরি করে সংস্থার নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে। ২০১৫ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় কাজ করার জন্য অ্যাকসেস এগ্রিকালচার ইরির সঙ্গে অপর একটি সমঝোতা স্মারক সই করে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ, ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশে এর অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের কার্যক্রম ব্যাপকভাবে শুরু হয়।
অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের ওয়েবসাইটে বর্তমানে পরিবেশসম্মত কৃষির ওপর দুই শতাধিক ভিডিও আছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে এগুলো নির্মাণ করা হয়েছে বিচিত্র সব বিষয়ের ওপর। এই ভিডিওগুলো প্রায় ৮০টি ভাষায় অনূদিত। প্রায় ৩০ লাখ কৃষক এসব ভিডিও এরই মধ্যে দেখেছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৪৪টি টিভি স্টেশন থেকে ভিডিওগুলো প্রচারিত হয়েছে। এ ছাড়া এশিয়া, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকায় অংশীদার সংস্থা ও সংগঠনের মাধ্যমে ১৩০টি দেশের প্রায় ছয় কোটি মানুষের কাছে এসব ভিডিওর তথ্য পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বাংলা ভাষায় ভিডিওর সংখ্যা বর্তমানে প্রায় ১০০ এবং এ সংখ্যা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। বিজ্ঞানসম্মত এবং স্থানীয় জ্ঞানের সংমিশ্রণে ধান ও দানাদার ফসল, ডাল, স্থায়ী জমির পরিচালনা কৌশল, রোগবালাই দমন, হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল পালন ও মাছ চাষ, বিভিন্ন যন্ত্রের ব্যবহার, কম পানি ব্যবহার করে সেচসহ অনেক ভিডিও যুক্ত করা হয়েছে। এসব ভিডিও www.accessagriculture.org I www.agtube.org  সাইটে পাওয়া যাচ্ছে।www.accessagriculture.org সাইটটি বাংলায় ব্যবহারোপযোগী করা হয়েছে। এ সাইট দুটিতে বিনামূল্যে ভিডিও দেখা যায়।
শ্যামল কান্তি ঘোষ :কৃষককে শিক্ষিত করতে হবে। এখন ভিডিওর মাধ্যমে যে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে, সেটা ভালো উদ্যোগ। কিন্তু মনে রাখতে হবে, ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গ্রামের কৃষকের কাছে এসব ভিডিও তুলে ধরা এখন পর্যন্ত সহজসাধ্য নয়। কারণ, কৃষকরা এখনও ওয়েবসাইট ব্যবহারে অভ্যস্ত নয়। তবে মোবাইল ফোন অ্যাপ তৈরি করা হলে কিংবা মোবাইল ফোনকে ব্যবহার করে ভিডিও প্রচার করা হলে সেটা অনেক বেশি সময়োপযোগী হবে। বাংলাদেশের কৃষকদের নানা প্রতিকূলতায় কৃষিকাজের অভিজ্ঞতা ও উদ্ভাবনী শক্তি দুটিই আছে। এখন সবার দায়িত্ব কৃষককে সহায়তা করা। সরকারিভাবে বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংস্থা, জাতীয় পর্যায়ে কাজ করা অন্যান্য বেসরকারি সংস্থা এগিয়ে এলে সেটা অনেক বেশি কার্যকর হবে। এই যে অ্যাকসেস এগ্রিকালচার এগিয়ে এসেছে, সেটা খুবই সময়োপযোগী ও আশাব্যঞ্জক। এই প্রচেষ্টার সঙ্গে সংশ্নিষ্ট সরকারি সংস্থাকে সম্পৃক্ত করা হলে এটি আরও বেশি সফল হবে এবং কৃষক আরও বেশি উপকৃত হবে। এখানে কৃষি ব্যবস্থাপনা নিয়ে গবেষণা করেন, কাজ করেন তারা নিশ্চয় আরও ভালো মতামত দেবেন।
কৃষিবিদ মো. নজরুল ইসলাম :শিক্ষার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ভাষা। আমাদের কৃষকরা আঞ্চলিক ভাষায় অভ্যস্ত। অনেকেই প্রমিত বাংলার অনেক শব্দের অর্থ বোঝেন না। এ কারণে আঞ্চলিক বাংলায় শিক্ষার ব্যবস্থা করা দরকার। কৃষকের উপযোগী ভিডিও প্রচার করতে হলে সেখানে কোনো ধরনের ইংরেজি শব্দ থাকতে পারবে না, কোনো ধরনের যুক্তাক্ষর থাকতে পারবে না। এই ভিডিও প্রচারে সরকারি সংস্থার পাশাপাশি কৃষি সাংবাদিক ফোরামসহ গণমাধ্যমকে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত করা দরকার।
আবার বাংলাদেশের কৃষি কিন্তু বিভিন্ন অঞ্চলভিত্তিক। যেমন- সমতলের কৃষি, হাওরের কৃষি, পাহাড়ের কৃষি, উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষি, বন্যা উপদ্রুত অঞ্চলের কৃষি, খরা অঞ্চলের কৃষি। এ কারণে প্রতিটি অঞ্চলের কৃষি উৎপাদন, মাটি, পানি, আবহাওয়া, ভূমির প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্যের বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই শিক্ষার জন্য ভিডিও নির্মাণ করতে হবে। তাহলে এটা অনেক বেশি কার্যকর হবে সব অঞ্চলের কৃষকের জন্য। যেমন- এখানে একটি ভিডিওচিত্রে গোপালগঞ্জ এলাকার কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থায় উপযোগী উৎপাদন ব্যবস্থা দেখানো হয়েছে। এ অঞ্চলের যারা কৃষি কর্মকর্তা আছেন, তাদেরও ভিডিওচিত্র নির্মাণে সম্পৃক্ত করা দরকার। তাহলে তারাও ভালো পরামর্শ দিতে পারবেন।
আরেকটা বিষয় হচ্ছে, কৃষি উৎপাদনকে বাণিজ্যিকভাবে ভাবতে হবে। উৎপাদনে কতটা খরচ হলো, এর মাধ্যমে পরে কৃষক কতটা লাভবান হচ্ছে; সেসব বিষয়ও এ শিক্ষা কার্যক্রমে নিয়ে আসতে হবে। কৃষক যদি দেখে, তার এক টাকা খরচ করে চার আনা লাভ হচ্ছে, তাহলেই সে উদ্যোগী হবে। এটা একশ' বছর ধরেই আমাদের দেশে চলে আসছে। কোন অঞ্চলে কোন ধরনের কৃষি উৎপাদন হলে আয় বেশি হবে, সে বিষয়টি ভুলে গেলে চলবে না। এই শিক্ষা কার্যক্রমকে ব্যাপকভাবে প্রচারে কৃষিবিষয়ক সাংবাদিক ফোরাম, সরকারের কৃষিতথ্য সার্ভিস, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারসহ স্থানীয় পর্যায়ে কাজ করা সক্রিয় সংস্থাগুলোকে সম্পৃক্ত করা দরকার। তাহলে প্রচারকাজে বেশি সাফল্য আসবে।
ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম :আমি বলব, বাংলাদেশের কৃষি নিয়ে আরও বেশি গবেষণা হওয়া দরকার। গবেষণা হলে কোন ধরনের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন, সেটা নির্ধারণ সম্ভব। এর আগেই বলা হয়েছে, বাংলাদেশে একেক এলাকায় একেক ধরনের কৃষিব্যবস্থা প্রচলিত। শুধু পানিকে কেন্দ্র করেই অনেক ধরনের কৃষি আছে। কোথাও নদীকেন্দ্রিক কৃষি, কোথাও হাওরকেন্দ্রিক কৃষি। কোথাও বিল, কোথাও একেবারে শুকনো ভূমি। এ কারণে কোন এলাকায় এবং কোন ধরনের ভূমিতে কী ধরনের কৃষি হয়, তা নির্ধারণ করে এর ওপর আলাদা ভিডিও নির্মাণ করলে অনেক বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখবে কৃষিশিক্ষা ও সম্প্রসারণে। হাওরের কৃষককে হাওরের উপযোগী, নদীর কৃষককে নদীর উপযোগী প্রশিক্ষণ দিতে হবে। আর কৃষককে ওয়েবসাইটে ভিডিও দেখার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে প্রাথমিক পর্যায়ে গ্রামে গ্রামে গিয়ে বড় পর্দায় এটি দেখানোর ব্যবস্থা করা উচিত। কৃষক একবার পরিচিত হলে এবং উপকৃত হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পারলে নিজেই ওয়েবসাইট খুঁজে নেবে।
রিয়াজ আহমাদ :অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের তৈরি এসব ভিডিও কৃষকদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কৃষিশিক্ষার প্রচারে এখানে সরকারের কৃষিতথ্য সার্ভিস, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আছে। পাশাপাশি গণমাধ্যমকেও এগিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশের কৃষির নিকট ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, কৃষি উৎপাদনে সাফল্য আছে, ভবিষ্যতের সম্ভাবনাও আছে। এখন বিশ্বজুড়ে কৃষিপণ্য উৎপাদনে প্রযুক্তি ব্যবহারে যে বিপ্লব হয়েছে, সেটা বাংলাদেশেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আত্তীকরণ হবে, অতীতেও হয়েছে। অতএব, হতাশার কিছু নেই। আমাদের খোরপোশ কৃষি থেকে বাণিজ্যিক কৃষিতে উত্তরণ হচ্ছে। এটা হতেই হবে। ভবিষ্যতের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তা খুবই প্রয়োজন। যেমন- আমরা ধান উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ, কিন্তু গম আমাদের বিপুল পরিমাণে আমদানি করতে হয়। এ কারণে আগামী প্রজন্মের জন্য যে ধরনের কৃষির প্রয়োজন, তার আধুনিকায়ন জরুরি। কারণ, তার ওপরেই নির্ভর করবে ভবিষ্যৎ। এ জন্য সব সময় পরিবর্তিত পরস্থিতির কৃষি বিষয়ে গবেষণা অব্যাহত রাখতে হবে এবং সেভাবে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কৃষি উৎপাদনকে গুরুত্ব দিতে হবে।
ড. ফারুক-উল ইসলাম :কৃষি উৎপাদন ও পরিবেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অ্যাকসেস এগ্রিকালচার পরিবেশসম্মত কৃষিকে এগিয়ে নিতে যে ভূমিকা নিয়েছে, তা প্রশংসনীয়। তবে কৃষি সম্প্রসারণে ভিডিও তৈরির জন্য দেশের একেক অঞ্চলের কৃষির ওপর আরও নিবিড় গবেষণা, সমীক্ষা চালিয়ে স্ট্ক্রিপ্ট তৈরি করতে হবে। প্রশিক্ষণ ভিডিওতে যেন কোনো ভুল বা ত্রুটিপূর্ণ তথ্য না যায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ, একটি ত্রুটিপূর্ণ তথ্যে কৃষক ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। একবার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হলে আর প্রশিক্ষণে আগ্রহী হবে না। অতএব, যে কোনো ভিডিও প্রচারের আগে কয়েকবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। বারবার দেখে তারপর প্রচার করতে হবে। এই ভিডিও প্রচারের জন্য ওয়েবসাইটের পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি গণমাধ্যমকে যত বেশি সম্পৃক্ত করা সম্ভব, করতে হবে। কারণ, গণমাধ্যম এখনও বাংলাদেশে মানুষের কাছে তথ্য পৌঁছে দেওয়া ও যোগাযোগের বড় মাধ্যম।
কৃষিবিদ মো. সাহিনুল ইসলাম :যে অ্যাপ তৈরির কথা বলা হচ্ছে, এরই মধ্যে সরকারের কৃষিতথ্য সার্ভিস সে ধরনের কয়েকটি অ্যাপ তৈরি করেছে। তবে এগুলোর আরও উন্নয়ন করা যেতে পারে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরও নানাভাবে কৃষককে প্রশিক্ষিত করছে। এর সঙ্গে অ্যাকসেস এগ্রিকালচার যুক্ত হলে এ কাজগুলো আরও ত্বরান্বিত হবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কিন্তু সরকারের বেতার-টেলিভিশন, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমেও কৃষকের কাছে নানা ধরনের প্রশিক্ষণ উপকরণ, কৃষি উৎপাদনের নতুন উদ্ভাবন, পরিবর্তিত সময়ের কৃষি উৎপাদনের চিত্র নিয়ে যাচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ, কৃষিতথ্য সার্ভিস কিন্তু বসে নেই। তবে আরও কাজের সুযোগ আছে। কৃষি সম্প্রসারণ কীভাবে আরও বেশি কৃষকের কাছে যাওয়া যায়, তা নিয়েও কাজ করছে।
মো. আসাদুজ্জামান :এখানে কৃষিপ্রযুক্তির কথা বলা হয়েছে। কিন্তু প্রযুক্তিরও অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। যেমন- এখানে যে ভিডিও দেখানো হলো, সেখানে কচুরিপানার ব্যবহার দেখানো হয়েছে। কিন্তু এক বছর যদি কোনো কারণে পর্যাপ্ত কচুরিপানা না পাওয়া যায়, তাহলে কী হবে? দেখা গেল, কচুরিপানার পরিবর্তে কলাগাছ ব্যবহার করা হলো। কিন্তু কলাগাছও যে সব সময় পাওয়া যাবে, তার নিশ্চয়তা কী? অতএব, কৃষিপ্রযুক্তির প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে এই চ্যালেঞ্জগুলো মনে রাখতে হবে।
আরেকটা বিষয়ে নজর দিতে হবে- পরিবেশসম্মত কৃষির জন্য দূষণমুক্ত ফসল উৎপাদন। আহ্‌ছানিয়া মিশন এ লক্ষ্যে কাজ করছে। দূষণমুক্ত কৃষি উৎপাদনের ওপরে ভিডিও নির্মাণ করা দরকার। কারণ, খাদ্য নিরাপত্তার সঙ্গে দূষণমুক্ত কৃষির বিষয়টি সম্পর্কিত।
অসিত সিং :প্রথমেই বলতে চাই, আমাদের মধ্যে একটা ভুল ধারণা আছে। আধুনিক কৃষি ও ট্র্যাডিশনাল কৃষি নিয়ে এই ভুল ধারণাটা আছে। যে কৃষি আগামী প্রজন্মকে এগিয়ে নিয়ে যাবে, সেটাই হচ্ছে আধুনিক কৃষি। সেটা ঐতিহ্যগত কৃষি, জৈব কৃষির মাধ্যমেও হতে পারে। অতএব, ঐতিহ্যকে বাদ দিয়ে আধুনিক কৃষি নয়- এটা মনে রাখতে হবে। মাঠপর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে যে অভিজ্ঞতা তার আলোকে বলি, আমাদের কৃষকরা যুগ যুগ ধরে উৎপাদন করে যাচ্ছে। তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হচ্ছে না। কারণ, কৃষক তার পণ্যের ন্যায্যমূল্য সময়মতো পাচ্ছে না। এটাই সত্য, কৃষকরা কখনোই ন্যায্যমূল্য পায় না। যে কারণে কৃষকরা ভরা মৌসুমে পেঁয়াজ উৎপাদন করে মূল্য না পেয়ে মাথায় হাত দেয়। আর অন্য সময়ে আমদানি কম হলে দেশের মানুষকে দেড়শ'-দুইশ' টাকায় পেঁয়াজ খেতে হয়। ঢাকা শহরে চালের দাম দফায় দফায় বাড়ে। কিন্তু গ্রামে কৃষক ধানের ন্যায্য দাম পায় না। বাংলাদেশে কৃষিপণ্যের সংকট কখনোই হবে না, যদি কৃষককে সময়মতো উপযুক্ত মূল্য দেওয়া যায়।
এমডি শাহাদাৎ হোসেন :ব্র্যাক বাংলাদেশের কৃষি অর্থনীতি, কৃষিপণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং সফল বিপণন নিয়ে কাজ করছে। কৃষি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে আমরা দেখেছি, পোস্ট হারভেস্ট ম্যানেজমেন্ট ও মার্কেটিং। কৃষকের পণ্য উৎপাদনের পর যখন এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বিক্রির জন্য নিয়ে যায়, অনেক ফসল নষ্ট হয়। এই ক্ষতিটা কৃষকের। ফলে নিশ্চিত করতে হবে, কৃষকের ক্ষতি যেন কম হয় কিংবা তা শূন্যের কোঠায় নেমে আসে। এ জন্য প্রয়োজন, কৃষকের হাতের কাছে বিপণন ব্যবস্থা নিয়ে যাওয়া। কৃষক যদি তার ক্ষেত থেকে খুব কাছাকাছি কোথাও পণ্য বিক্রি করতে পারে এবং ন্যায্যমূল্যে, তাহলে হবে সবচেয়ে ভালো। আদর্শ বিপণন অবস্থা তৈরি করা গেলে কৃষক ন্যায্যমূল্য পাবে এবং বিপণন ব্যবস্থায় মধ্যস্বত্বভোগী কমবে। ফলে শহরেও জিনিসপত্রের দাম স্বাভাবিক থাকবে। ব্র্যাক একই সঙ্গে কাজ করছে কৃষিপ্রযুক্তি আত্তীকরণ নিয়ে। একাধিক ধরনের প্রযুক্তি কৃষকদের কাছে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে যেন পরিস্থিতি অনুযায়ী কৃষক তার বিকল্প ও উপযোগী কৌশল খুঁজে নিতে পারে। অ্যাকসেস এগ্রিকালচারেরও উচিত ভিডিও তৈরির ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলোতে নজর দেওয়া।
রেজাউল করিম সিদ্দিক :অ্যাকসেস এগ্রিকালচার এখানে যে ভিডিওগুলোর কথা বলছে, তার মধ্যে অন্তত ৮০টি আমি নিজে দেখেছি এবং বাংলায় অনুবাদের ক্ষেত্রে সহায়তা দিয়েছি। এই ভিডিওগুলো আরও সমৃদ্ধ করতে হবে কৃষির বিভিন্ন খাতের ওপর পৃথকভাবে ভিডিও নির্মাণের মধ্য দিয়ে। এখানে বলে রাখি, বাংলাদেশে আধুনিক প্রযুক্তিতে কৃষি উৎপাদনের বিষয়টি আরও অনেক আগেই শুরু হয়েছে। ১৯৯২-৯৩ সালে আধুনিক পদ্ধতিতে সবজি চাষের জন্য কিছু শিক্ষা উপকরণ তৈরি করেছিলাম আমি। পরে ১৯৯৬ সালে আধুনিক পদ্ধতিতে হাওরে মাছ চাষ, আধুনিক খামার ব্যবস্থাপনা, শহরে ছাদে বাগান তৈরির ওপর প্রশিক্ষণ উপকরণ তৈরি করি। অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের সঙ্গে এর আগেও গ্রামে গিয়ে কাজ করেছি। সেসব কাজ বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাটি ও মানুষে দেখানো হয়েছে। এগুলো অন্য মাধ্যমে কৃষকদের কাছেও পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
আসল কথা হচ্ছে, দেশ-বিদেশের অনেক আধুনিক প্রযুক্তি ও কৌশল যদি কৃষকের সামনে তুলে ধরতে পারি, তাহলে কৃষি উৎপাদনে বিনিয়োগ কম লাগবে কিংবা খরচ কম হবে। কম খরচে অধিক উৎপাদনই হচ্ছে কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মূল লক্ষ্য। কৃষিশিক্ষার ক্ষেত্রে দেখা যায় সরকারের কৃষিতথ্য সার্ভিস, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর একই বিষয়ে পৃথক শিক্ষা উপকরণ তৈরি করেছে, যেটার প্রয়োজন নেই। এ ক্ষেত্রে যদি সমন্বয়ের মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট করে একেকটি বিষয়ে একটি ভিডিও বা উপকরণ তৈরি করা যায়, তাতে খরচ কম হবে এবং একটি 'কমন' চ্যানেলের মাধ্যমে প্রচার করা গেলে অনেক বেশি কার্যকরভাবে কৃষকের কাছে যাবে। যদি একটা অ্যাপ তৈরি করা যায়, তাহলে সেটা কৃষকের জন্য আরও ভালো হবে।
মীর এমদাদ আলী :আধুনিক চাষাবাদের কথা এলে যেটা প্রথমে বলতে হয়, দরকার গবেষণা। এই গবেষণাগুলো কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি ইনস্টিটিউট, আরডিএর মাধ্যমে হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উপযোগী কৃষি উদ্ভাবনকেই গবেষণায় প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কোনো প্রকল্পের আওতায় গবেষণা হয়। প্রকল্প শেষ হয়ে গেলে গবেষণাগুলোও থাকে না। এ জন্যই জরুরি হচ্ছে একটি সংরক্ষণ নীতিমালার মাধ্যমে দলিল আকারে গবেষণাগুলো ধরে রাখা। আবার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি-বেসরকারি সংস্থায় একই বিষয়ে একই সময়ে গবেষণা হতে দেখা যায়। একটা সমন্বয় থাকলে একই বিষয়ে গবেষণা না হয়ে পৃথক বিষয়ে গবেষণা হতো এবং উদ্ভাবনে বৈচিত্র্য আসত। এই যে অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের ওয়েবসাইট আছে, এখানেও সেই গবেষণাগুলো রাখা যায়। রাখলে যেটা হবে, পরবর্তী সময়ে যারা গবেষণা করতে আসবেন, তারা আগের কাজগুলো দেখে পরবর্তী কাজের জন্য উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। একইভাবে কৃষক কৃষিপণ্য উৎপাদনের পর কীভাবে বিপণন করবে, তার শিক্ষার জন্যও পৃথক ভিডিও নির্মাণ করা উচিত।
আরেকটা বিষয় ভাবতে হবে, কৃষক কৃষিপণ্য উৎপাদনের পর যেন সঙ্গে সঙ্গে লাভজনক দামে বিপণনের সুযোগ পায়। একই সঙ্গে কমিউনিটিভিত্তিক আধুনিক কৃষিতেও যেতে হবে। এ জন্য কৃষিভিত্তিক শিল্প উৎপাদনে জোর দিতে হবে।
তপন কুমার দাশ :গণসাক্ষরতা অভিযানের কার্যক্রম সারাদেশে। শহর থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ে গণসাক্ষরতা অভিযান শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে। এই যে বৃহৎ নেটওয়ার্ক, এর মাধ্যমেই কৃষকদের মধ্যে অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের তৈরি করা প্রশিক্ষণ ভিডিও ছড়িয়ে দিতে কাজ করছে গণসাক্ষরতা অভিযান। এ জন্যই অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের সঙ্গে যুক্ত হওয়া। গণসাক্ষরতা অভিযান অনেক ধরনের অংশীদারের সঙ্গে কাজ করে। এর মাধ্যমে গণমাধ্যম বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এর অংশ হিসেবেই সমকালের সঙ্গেও যুক্ত হওয়া। কারণ, সমকালও সামাজিক কার্যক্রমকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়।

বিষয় : ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষি সম্প্রসারণের তাগিদ

মন্তব্য করুন