- বিশেষ আয়োজন
- বাংলার মানুষকে তিনি বড্ড বেশি ভালোবাসতেন
সা ক্ষা ৎ কা র
বাংলার মানুষকে তিনি বড্ড বেশি ভালোবাসতেন
তোফায়েল আহমেদ

তোফায়েল আহমেদ, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সচিব
প্রশ্ন :বঙ্গবন্ধুকে প্রথম দেখার স্মৃতি বলবেন?
উত্তর : ১৯৫৭ সাল। আমি ভোলা সরকারি হাই স্কুলের শিক্ষার্থী। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ি। ওই সময়ে বঙ্গবন্ধুকে জড়িয়ে আমার জীবনে স্মরণীয় ঘটনা ঘটে। প্রাদেশিক পরিষদের উপনির্বাচনের প্রচার চালাতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান ভোলায় আসেন। এই দু'নেতা ভোলা সরকারি স্কুল মাঠে জনসভায় ভাষণ দেবেন। এ নিয়ে ভোলার সর্বস্তরের মানুষের ব্যাপক প্রস্তুতি। চারদিকে উচ্ছ্বাস-আনন্দের ফল্গুধারা। জনসভায় লাখো মানুষের উপচেপড়া ভিড়। কানায় কানায় ভরে ওঠা ওই জনসভায় সমবেত সবার মতো উপস্থিত হয়েছিলাম স্কুলপড়ূয়া আমিও। রাজনীতির কবি শেখ মুজিবুর রহমান জনসভায় ভাষণ দিয়েছিলেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর আগে। তিনি ভাষণের শুরুতেই কিছুক্ষণ চুপ করে ছিলেন। তারপর চারদিকে দু'চোখ জুড়িয়ে দেখেন তার প্রিয় মানুষদের। একটা অদ্ভুত বিষয়। ওই সময় জনসভায় পিনপতন নীরবতা নেমে আসে। কিছুক্ষণ পর দরাজ গলায় শুরু হয় মনোমুগ্ধকর সেই ভাষণ। কী সুন্দর সেই ভাষণ! বর্ণনার অতীত। তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের প্রতিটি পঙ্ক্তিতে ঝরছিল মানুষের অধিকার আদায়ের কথা। সেই ভাষণ শুনে মুক্তির শপথ নিচ্ছিল মুক্তিকামী মানুষ। তারা মুহূর্তে মুহূর্তে মুষ্টিবদ্ধ হাত উঁচিয়ে আকাশ কাঁপানো স্লোগান দিয়ে নিরঙ্কুশ সমর্থন জুগিয়েছিল তাদের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে। এখনও সেই ভাষণের প্রতিটি শব্দ আমার কানে বাজে। সেদিন সবার মতো আমিও মন্ত্রমুগ্ধের মতো ওই ভাষণ শুনেছি। ছোট্ট ওই বয়সে রাজনীতি বুঝতাম না। কিন্তু রাজনীতির প্রাণপুরুষ শেখ মুজিবুর রহমানের নাম শুনেছিলাম। তাকে দেখার খুব ইচ্ছা ছিল। জনসভায় কাছ থেকে তাকে দেখতে পেয়ে আমার সেই ইচ্ছা পূর্ণতা পেয়েছিল। সেই জাদুকরী, মায়াবী ভাষণ আমাকে শিখিয়েছিল- অধিকারবঞ্চিত মানুষের মুক্তি ও কল্যাণের রাজনীতি করতে হলে শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনীতিতেই সম্পৃক্ত হতে হবে। আমার সেই আশা পূর্ণতা পেয়েছে। আমার জীবন ধন্য হয়েছে।
প্রশ্ন :জাতির পিতা কীভাবে 'বঙ্গবন্ধু' উপাধি পেলেন?
উত্তর : প্রিয় নেতা শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৮ সালের ১৮ জানুয়ারি মুক্তি পেয়ে ওই দিনই জেলগেটে রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিব মামলায় গ্রেপ্তার হন। কিন্তু প্রথমে কেউই তার অবস্থান জানত না। পরে জানা যায়, তিনি সেনানিবাসে বন্দি। ওই মামলার বিচার যখন শুরু হয়, তখন ছাত্রসমাজ ভাবতে শুরু করে- একজন মানুষ যখন কথা বলেন, তখন সাড়ে সাত কোটি মানুষের কণ্ঠ উচ্চারিত হয়। এই কণ্ঠ স্তব্ধ হলে বাংলার মানুষের কণ্ঠ চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে। এই ভাবনা থেকেই ছাত্রসমাজ ঐক্যবদ্ধ হয়। ১৯৬৯ সালের ৫ জানুয়ারি আবদুর রউফ, খালেদ মোহাম্মদ আলী, শামসুদ্দোহা, সাইফুদ্দিন আহমেদ মানিক, মোস্তফা জামাল হায়দার, মাহবুবউল্লাহ, ফখরুল ইসলাম মুন্সী, ইব্রাহিম খলিল ও নাজিম কামরান চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হয় সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। ওই সময়ে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি। এ জন্য আমাকে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
১৯৬৯ সালের ১৭ জানুয়ারি শুরু হয় সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আন্দোলন। ২০ জানুয়ারি শহীদ হন আসাদ। ২৪ জানুয়ারির হরতালে শহীদ হন মতিউর, রোস্তম ও আলমগীর। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে মানুষ স্বতঃস্ম্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে আসে। ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত থাকে সান্ধ্য আইন। ৯ ফেব্রুয়ারি ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানের জনসভায় আমরা শপথ নিই। সভাপতির বক্তৃতায় আমি বলি- শপথ নিলাম শপথ নিলাম/ মুজিব তোমায় মুক্ত করব; শপথ নিলাম শপথ নিলাম/ মাগো তোমায় মুক্ত করব।
১৫ ফেব্রুয়ারি সেনানিবাসে সার্জেন্ট জহুরুল হককে হত্যা করা হয়। এর প্রতিবাদে মানুষ আবার রাজপথে নামে। আবার কারফিউ দেওয়া হয়। ওই কারফিউর মধ্যেই আমরা মশাল মিছিল করি। ২১ ফেব্রুয়ারি পল্টন ময়দানের জনসভায় আমরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তি চাই। পরে শেখ মুজিবুর রহমানকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়ার কথা বলা হলেও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কারাগারে গিয়ে জাতির প্রিয় নেতার সঙ্গে দেখা করে বলেন, জাতি প্যারোলে মুক্তি চায় না। নির্যাতিত-নিপীড়িত বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমান নিঃশর্ত মুক্তি পান ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি। পরদিন ২৩ ফেব্রুয়ারি আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ দিন। এদিন ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) স্মরণাতীতকালের বিশাল জনসভা থেকে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ বাঙালি জাতির পক্ষ থেকে রাজনীতির ইতিহাসের মহানায়ক শেখ মুজিবুর রহমানকে গণসংবর্ধনা ও বঙ্গবন্ধু উপাধি দেয়। বঙ্গবন্ধুর বয়স তখন মাত্র ৪৯।
ওই জনসভায় তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। আমি যখন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে জনসভা মঞ্চে পৌঁছি, তখন চারদিকে মানুষের সমুদ্র। চোখের দৃষ্টি সীমানা ছাড়িয়ে গিয়েছিল মানুষের ভিড়। এর আগে কখনও একসঙ্গে এত মানুষ দেখা হয়ে ওঠেনি আমার। জনসভার এমন চিত্র দেখে আমরা তখন স্তম্ভিত, বিস্মিত। আসলেই আমার জীবনে এর চেয়ে বড় পাওয়ার আর কী থাকতে পারে! বাংলার অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমান যখন মঞ্চে আসেন, তখন জনসভায় মানুষের উপস্থিতি ১০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।
ওই সময়ে আমার বয়স ২৬ বছর চার মাস। বিশাল জনসভার সভাপতি আমি। এখন এসব ভাবলে অদ্ভুদ এক শিহরণে আমার দুই চোখের কোণে পানি জমে। আহা, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জড়িয়ে আমার কত সুখস্মৃতি। কত ভালোবাসা। কত শ্রদ্ধাবোধ। তাই তো বঙ্গবন্ধু আমার ঠিকানা। আমি সত্যিই সৌভাগ্যবান। আমি ছিলাম ওই জনসভার সভাপতি। বাংলার মানুষের প্রাণস্পন্দন শেখ মুজিবুর রহমানের আগে আমি বক্তৃতা করি। তুমি বলে সম্বোধন করি শেখ মুজিবুর রহমানকে।
সেদিন আমি সমবেত সবার উদ্দেশে বলেছিলাম, প্রিয় নেতা- বাংলার মানুষের মুক্তির জন্য কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে থেকে তুমি তোমার জীবন বাঙালি জাতির জন্য উৎসর্গ করেছ। ফাঁসির মঞ্চে গিয়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছ। প্রধানমন্ত্রিত্বকে তুচ্ছ মনে করেছ। তোমার কাছে বাঙালি জাতি ঋণী। এই ঋণ আমরা কোনোদিন শোধ করতে পারব না। কিন্তু আজ তোমাকে বাঙালি জাতির পক্ষ থেকে একটি উপাধি দিয়ে এই ঋণের বোঝা কিছুটা হালকা করতে চাই।
এই প্রস্তাবে নিরঙ্কুশ সমর্থন জানায় ১০ লাখ মানুষ। তারা তাদের বিশ লাখ হাত উচিয়ে সমস্বরে বলেছিল- আমাদের পক্ষ থেকে শেখ মুজিবুর রহমানকে উপাধি দিতে পার। সেই সময়ে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে আমি গোটা জাতির পক্ষে কৃতজ্ঞচিত্তে ঘোষণা করেছিলাম- আজ থেকে বাঙালির শ্রেষ্ঠ সন্তান, হাজার বছরের মহাপুরুষ, নিপীড়িত-লাঞ্ছিত-প্রবঞ্চিত বাঙালির নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করলাম। ইতিহাসের মহামানব শেখ মুজিবুর রহমান আজ থেকে আমাদের বঙ্গবন্ধু।
সমবেত সবার কণ্ঠে তখন উচ্চারিত হলো-জয় বঙ্গবন্ধু। সেই দৃশ্য অবর্ণনীয়। ভাষায় বর্ণনার অতীত। এরপর আমি আবার ঘোষণা করি, এখন ভাষণ দেবেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এভাবেই বঙ্গবন্ধু উপাধি পান শেখ মুজিবুর রহমান।
প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধুর চরিত্রের সবচেয়ে ইতিবাচক দিক কোনটি ?
উত্তর : আমাকে দিয়েই এই প্রশ্নের জবাব দিচ্ছি। আমি সব সময়ই বলি, অনেকের চেয়ে আমি বঙ্গবন্ধুর কাছাকাছি ছিলাম সবচেয়ে বেশি। এ জন্য আমি নিঃসন্দেহে একজন ভাগ্যবান মানুষ। যে নেতার জন্ম না হলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না, সেই রকম একজন মহান নেতার সান্নিধ্য, ভালোবাসা, স্নেহ ও আদর পাওয়াটা অবশ্যই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম প্রাপ্তির একটি। আমার এখনও স্পষ্ট মনে আছে, ১৯৭০ সালে বরিশাল-পটুয়াখালী-ভোলা অঞ্চলে একটি সফরের কথা।
ভোলায় জনসভা ছিল ২৪ ফেব্রুয়ারি। ভোলার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ওই গণসমাবেশে বঙ্গবন্ধু আমাকে পরিচয় করিয়ে দেন। যোগ্যতার গুণগত বিচারে আমি যা না, তার চেয়েও অনেক বড় করে আমাকে উপস্থাপন করেন জনসমুদ্রে। বঙ্গবন্ধু নেতাকর্মীদের এভাবেই বড় করে পরিচয় করিয়ে দিতেন। ছোটকে বড় করে তুলতেন। যেসব জায়গায় সফর করতেন, সেখানকার নেতাকর্মীদের নাম ধরে তাদের ইতিবাচক দিকগুলো জনসমক্ষে তুলে ধরতেন। তিনি খুব সহজেই যে কোনো মানুষকে আপন করে নিতেন। বাংলার মানুষকে বড্ড বেশি ভালোবাসতেন। আসলে সাগর-মহাসাগরের গভীরতা পরিমাপ করা যায়; কিন্তু মানুষের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসা অপরিমেয়।
এ প্রসঙ্গে ১৯৭১ সালের রক্তঝরা মার্চের ১৭ তারিখের কথা একটু বলি। সেদিন ছিল বঙ্গবন্ধুর ৫২তম জন্মদিন। ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে আলোচনা শেষে দুপুরে ধানমন্ডির বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে ঘরোয়া আলোচনাকালে একজন সাংবাদিক জানতে চান, জন্মদিনে আপনার সবচেয়ে বড় ও পবিত্র কামনা কী? বঞ্চিত বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা স্বভাবসিদ্ধ কণ্ঠে জবাব দেন, জনগণের সার্বিক মুক্তি। সেদিন তিনি বলেছিলেন, আমি জন্মদিন পালন করি না। আমার জন্মদিনে মোতের বাতি জ্বালি না। কেকও কাটি না। এ দেশে মানুষের নিরাপত্তা নেই। অন্যের খেয়ালে যে কোনো মুহূর্তে মানুষের মৃত্যু হতে পারে। সেই আমি জনগণের একজন। আমার আবা জন্মদিনই কী, আর মৃত্যু দিনই কী? আমার জনগণের জন্যই আমার জীবন ও আমার মৃত্যু।'
প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আপনার শেষ স্মৃতি কী?
উত্তর : বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আমার শেষ দেখা ১৯৭৫ সালের ১৪ আগষ্ট। প্রতিদিনের মতো ওই দিন সকালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে যাই। সেখান থেকে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে যাই প্রধানমন্ত্রীর অফিস গণবভনে। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে একই টেবিলে বসে দুপুরে একসঙ্গে খেয়েছি। পরম শ্রদ্ধেয় বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মজিব-যিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর জীবনসঙ্গী। সুখে-দুঃখে, আপদে-বিপদে যিনি বঙ্গবন্ধুকে অতি যত্নে আগলে রাখতেন, তার হাতে রান্না করা খাবার বঙ্গবন্ধুর জন্য গণভবনে পাঠানো হতো। ওই দিন দুপুরের খাবার শেষে বঙ্গবন্ধু কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেন। এরপর যান গণববনে নিজ কক্ষে। তিনি প্রায় প্রতিদিন বিকেলে মন্ত্রিসভার সহকর্মীদের সঙ্গে রাজনৈতিক বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করতেন। সুযোগ থাকলে একসঙ্গে চা পান করতেন। রাত ৯টায় ফিরতেন বাসভবনে। আর বঙ্গবন্ধুকে পৌছে দিয়ে বাসায় ফিরতাম আমি।
১৯৭৫ সালের ১৪ আগস্ট বঙ্গবন্ধু আমাকে কাছে ডেকে নিয়ে বলেছিলেন, কাল একটু সকালে আমার বাসায় আসবি। আমার সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবি। দুর্ভাগ্য-প্রিয় নেতার সেঙ্গ সেদিন প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাওয়া হয়ে ওঠেনি আমার।
তোফায়েল আহমেদ: বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সচিব
মন্তব্য করুন