- বিশেষ আয়োজন
- করোনায় নতুন বাস্তবতায় ইন্টারনেট
করোনায় নতুন বাস্তবতায় ইন্টারনেট

ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ সংক্রামক ব্যাধির মুখোমুখি মানব সমাজ। সভ্যতার ইতিহাসে মানুষের অগ্রযাত্রা যুদ্ধ-বিগ্রহ-ব্যাধির মতো নানা বাধার মুখে পড়লেও কখনও গোটা মানব জাতির জীবনযাত্রা স্থবির হয়নি। করোনা নামক ভাইরাসের ভয়াল থাবায় বিশ্বজুড়েই নেমে এসেছে মানবিক বিপর্যয়। কভিড-১৯ থেকে সুরক্ষিত থাকতে মানুষে মানুষে দূরত্ব বজায় রাখতে হচ্ছে। আর সেটা করতে গিয়ে গত ফেব্রুয়ারি থেকে টানা কয়েক মাস গোটা বিশ্বটাই যেন চলে গিয়েছিল লকডাউনে। বেঁচে থাকার জন্য ঘরবন্দি মানুষের দীর্ঘশ্বাস ক্রমেই ভারি হয়ে উঠছিল। অবস্থা যে খুব একটা পরিবর্তন হয়েছে, সেটা নয়। এখনও স্কুল-কলেজ বন্ধ; হোম অফিস করছেন অনেকেই। খুব একটা প্রয়োজন না হলে সচেতন মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। কভিড-১৯ এর হানায় যখন সামাজিক যোগাযোগে দূরত্ব নিশ্চিত করতে হয়েছে কিংবা হচ্ছে; সেই সময়ে মানুষকে কাছে থাকার সুযোগ দিচ্ছে ইন্টারনেট। করোনাকালীন বিচ্ছিন্ন দুনিয়াকে একসূত্রে গেঁথেছে ইন্টারনেট। ইন্টারনেটে নির্ভর করেই ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে চলছে দেখা-সাক্ষাৎ, ক্লাস, অফিস, চিকিৎসাসহ নানা আয়োজন। দেশে ইন্টারনেটের ব্যবহার কতটা বেড়েছে, একটা তুলনামূলক ডাটা থেকে অনায়াসে বোঝা যাবে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার হিসাবমতে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল ৯ কোটি ৩৪ লাখ এবং ব্রডব্যান্ড ব্যবহারকারী ছিল ৫৭ লাখ। সেখানে গত জুন মাসের হিসাবে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ৯ কোটি ৪৯ লাখ আর ব্রডব্যান্ড ইউজার ৮৫ লাখ। মূলত করোনা পরিস্থিতির কারণে ব্রডব্যান্ডের বাসাবাড়ির ব্যবহারকারী বেড়েছে। করোনা প্রাদুর্ভাবের আগে যেখানে ১৩০০ থেকে ১৮০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ব্যবহূত হতো; এখন সেখানে ১৭০০ থেকে ১৮০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ লাগছে। হিসাবটি ছিল গত জুন মাসের লকডাউনের সময়ের। এখন কিন্তু অধিকাংশ অফিস খুলেছে। সে হিসেবে ওই সময়ে অফিসিয়াল ব্যবহারকারী কম থাকলেও এখন বেড়েছে। ইন্টারনেটসংশ্নিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, লকডাউনপরবর্তী সময়ে আরও অন্তত ৫০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইন্টারনেটে এত কী করছে মানুষ- না বলে বরং এটা জিজ্ঞাসা করা যাক, ইন্টারনেটে কী করছে না মানুষ! নিত্যপ্রয়োজন থেকে সবকিছু ঘরবন্দি মানুষের ড্রয়িংরুমে পৌঁছে দিচ্ছে ইন্টারনেট। অনলাইনেই চলছে পড়াশোনা, পরীক্ষাসহ যাবতীয় অ্যাকাডেমিক আয়োজন। ক্ষুদ্র পরিসরের মিটিংসহ জাতিসংঘের মতো বিশ্ব সংস্থার বড় বড় আয়োজনও চলছে ইন্টারনেটনির্ভর। আর করোনার প্রাদুর্ভাবে ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগে ফেসবুক মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো, ভাইবারের মতো প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার দাঁড়িয়েছে যে কোনো সময়ের চেয়ে কয়েক গুণ। অফিসিয়াল থেকে শুরু করে সব ধরনের মিটিংসহ ক্লাস-পরীক্ষা হচ্ছে ভিডিও প্ল্যাটফর্মে। এরই সুফল ঘরে তুলেছে বড় বড় প্রযুক্তি কোম্পানি। এর একটি উদাহরণ হতে পারে, ভিডিও মিটিং প্ল্যাটফর্ম জুম, ২০১৯ সালে যার সর্বমোট মূল্য ছিল ১০ বিলিয়ন ডলার; মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে সেটি এখন ৬২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে! করোনার কারণে ইন্টারনেটভিত্তিক কেনাকাটা তথা ই-কমার্সনির্ভরতা বেড়েছে। ফলে ফুলে-ফেঁপে উঠেছে বিশ্বের শীর্ষ ই-কমার্স অ্যামাজন, আলীবাবার মতো প্রতিষ্ঠান। ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম থেকে কেনাকাটার প্রবণতা দেশেও বেড়েছে। ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-ক্যাব বলছে, করোনাকালীন দেশে ১৬ হাজার কোটি টাকার ডিজিটাল লেনদেন হয়েছে। নতুন ৫০ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আগের চেয়ে নগদ টাকার পরিবর্তে ডিজিটাল লেনদেনও বেড়েছে। চিকিৎসা ক্ষেত্রকে তো বলা যায় আমূল বদলে দিয়েছে করোনা।
চিকিৎসক ও নার্সদের মতো ফ্রন্টলাইনারদের সুরক্ষায় বিশ্বের পাশাপাশি টেলিহেলথ দেশেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ঘরবন্দি মানুষের নিত্যপ্রয়োজন তো বটেই; বিনোদনেও সঙ্গী হয়ে উঠেছে ইন্টারনেট। সিনেমা হলের বিকল্প হয়ে উঠেছে ইন্টারনেটভিত্তিক ইউটিউব, নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন প্রাইম। পাশাপাশি ঘরোয়া বিনোদনে ইন্টারনেটকে মাধ্যম করে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু দেশীয় প্ল্যাটফর্মও। মোট কথা, করোনাকালীন সামাজিক যোগাযোগপ্রিয় মানুষকে প্রয়োজন আর বিনোদনে সজীব রাখতে ইন্টারনেট হয়ে উঠেছে সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত সঙ্গী।
ইন্টারনেটে এত কী করছে মানুষ- না বলে বরং এটা জিজ্ঞাসা করা যাক, ইন্টারনেটে কী করছে না মানুষ! নিত্যপ্রয়োজন থেকে সবকিছু ঘরবন্দি মানুষের ড্রয়িংরুমে পৌঁছে দিচ্ছে ইন্টারনেট। অনলাইনেই চলছে পড়াশোনা, পরীক্ষাসহ যাবতীয় অ্যাকাডেমিক আয়োজন। ক্ষুদ্র পরিসরের মিটিংসহ জাতিসংঘের মতো বিশ্ব সংস্থার বড় বড় আয়োজনও চলছে ইন্টারনেটনির্ভর। আর করোনার প্রাদুর্ভাবে ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগে ফেসবুক মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো, ভাইবারের মতো প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার দাঁড়িয়েছে যে কোনো সময়ের চেয়ে কয়েক গুণ। অফিসিয়াল থেকে শুরু করে সব ধরনের মিটিংসহ ক্লাস-পরীক্ষা হচ্ছে ভিডিও প্ল্যাটফর্মে। এরই সুফল ঘরে তুলেছে বড় বড় প্রযুক্তি কোম্পানি। এর একটি উদাহরণ হতে পারে, ভিডিও মিটিং প্ল্যাটফর্ম জুম, ২০১৯ সালে যার সর্বমোট মূল্য ছিল ১০ বিলিয়ন ডলার; মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে সেটি এখন ৬২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে! করোনার কারণে ইন্টারনেটভিত্তিক কেনাকাটা তথা ই-কমার্সনির্ভরতা বেড়েছে। ফলে ফুলে-ফেঁপে উঠেছে বিশ্বের শীর্ষ ই-কমার্স অ্যামাজন, আলীবাবার মতো প্রতিষ্ঠান। ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম থেকে কেনাকাটার প্রবণতা দেশেও বেড়েছে। ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-ক্যাব বলছে, করোনাকালীন দেশে ১৬ হাজার কোটি টাকার ডিজিটাল লেনদেন হয়েছে। নতুন ৫০ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আগের চেয়ে নগদ টাকার পরিবর্তে ডিজিটাল লেনদেনও বেড়েছে। চিকিৎসা ক্ষেত্রকে তো বলা যায় আমূল বদলে দিয়েছে করোনা।
চিকিৎসক ও নার্সদের মতো ফ্রন্টলাইনারদের সুরক্ষায় বিশ্বের পাশাপাশি টেলিহেলথ দেশেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ঘরবন্দি মানুষের নিত্যপ্রয়োজন তো বটেই; বিনোদনেও সঙ্গী হয়ে উঠেছে ইন্টারনেট। সিনেমা হলের বিকল্প হয়ে উঠেছে ইন্টারনেটভিত্তিক ইউটিউব, নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন প্রাইম। পাশাপাশি ঘরোয়া বিনোদনে ইন্টারনেটকে মাধ্যম করে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু দেশীয় প্ল্যাটফর্মও। মোট কথা, করোনাকালীন সামাজিক যোগাযোগপ্রিয় মানুষকে প্রয়োজন আর বিনোদনে সজীব রাখতে ইন্টারনেট হয়ে উঠেছে সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত সঙ্গী।
মন্তব্য করুন