এ রকম বাংলাদেশ কখনও দেখোনি তুমি,
মুহূর্তে সবুজ ঘাস পুড়ে যায়,
ত্রাসের আগুন লেগে লাল হয়ে জ্বলে উঠে চাঁদ,
নরম নদীর চর হাঁ করা কবর হয়ে
গ্রাস করে পরম শত্রুকে,
মিত্রকে জয়ের চিহ্ন, পদতলে প্রেম,
ললাটে ধুলোর টিপ এঁকে দেয় মায়ের মতন,
এ রকম বাংলাদেশ কখনও দেখোনি তুমি।

নদীর জলের সঙ্গে মানুষের রক্ত মিশে আছে,
হিজল গাছের ছায়া বিপ্লবের সমান বয়সী
রূপসী নারীর চুল ফুল নয়,
গুচ্ছ গুচ্ছ শোকের প্রতীক,
এ রকম বাংলাদেশ কখনও দেখোনি তুমি,
কখনও দেখেনি কেউ।
বাতাস- বাতাস শুধু নয়
ত্রিশ লক্ষ মানুষের দীর্ঘশ্বাসময়
আকাশ- আকাশ শুধু নয়
এ রকম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ নয়।

এখানে প্রাণের মূল্যে নদীর জলের মধ্যে
আসে বান, টর্পেডো, টাইফুন, ঝড়
কালবৈশাখীর দুরন্ত তুফান
কোকিল- কোকিল শুধু নয়
পাখি শুধু পাখি নয় গাছে
বাউলের একতারা, ঊরুর অস্থির মতো
যেন আগ্নেয়াস্ত্রে বারুদের মজ্জা মিশে আছে।

আজকাল গান শুধু গান নয়
সব গান অভিমান
প্রাণের চিৎকার বলে ক্রুদ্ধ মনে হয়
এ রকম বাংলাদেশ কখনও দেখেনি কেউ
তুমিই তার প্রথম অতিথি।

নির্মলেন্দু গুণ

বিষয় : আত্মছবি নির্মলেন্দু গুণ সাহিত্য কবিতা

মন্তব্য করুন