নীরব ঘাতক উচ্চরক্তচাপ প্রতিরোধে জনসচেতনতার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপ করেছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের অভিমত, বিশ্বব্যাপী কিডনি, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, উচ্চরক্তচাপসহ অসংক্রামক রোগ বাড়ছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন করতে হলে এসব রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ রোগ নিয়ন্ত্রণে শুধু ওষুধ সেবন করলেই হবে না। পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে গুরুত্ব দিতে হবে। সে জন্য নগর থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত সব জায়গায় জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে। এটি ছাড়া এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে না। বিশ্ব উচ্চরক্তচাপ দিবস ২০২২ উপলক্ষ্যে গতকাল সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সমকাল কার্যালয়ে 'সঠিকভাবে রক্তচাপ মাপুন, নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং দীর্ঘজীবী হোন' প্রতিপাদ্যে গোলটেবিল আলোচনায় তাঁরা এসব কথা বলেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল (এনসিডিসি) প্রোগ্রাম ও সমকাল যৌথভাবে এ আয়োজন করে।
জাতীয় অধ্যাপক আব্দুল মালিক
যে কোনো জাতির মূল সম্পদ হচ্ছে মানবসম্পদ।যে কোনো জাতির মূল সম্পদ হচ্ছে মানবসম্পদ। মানবসম্পদ যদি স্বাস্থ্যবান না হয়, তা হলে জাতি পঙ্গু হয়ে যাবে। অসংক্রামক রোগ যদি প্রতিরোধ করতে না পারি, তাহলে আমাদের টিকে থাকা মুশকিল হবে। শুধু বড় বড় হাসপাতাল দিয়ে হৃদরোগ, কিডনি রোগ, ডায়াবেটিসের সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। প্রতিরোধই এসব রোগের উপযুক্ত চিকিৎসা। প্রতিরোধ করতে না পারলে মানুষ মারা যাবে। আর যে বাঁচবে, সে ধুঁকে ধুঁকে মারা যাবে। জীবনযাপনের অভ্যাসে পরিবর্তন করতে হবে। ওজন ঠিক রাখতে হবে, ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে, খাবারে লবণ কম করে খেতে হবে। সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন খাতে ডাক্তার-নার্স সবাইকে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করতে হবে। যার যে দায়িত্ব, সেটা মেনে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে।
মোজাম্মেল হোসেন
অসংক্রামক রোগের মধ্যে যেসব রোগ দেশের মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণ করে, তার মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ অন্যতম।  এ ছাড়া এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে যকৃতের রোগ, হৃদরোগ, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, মস্তিস্কের রক্তক্ষরণ ও স্নায়ুরোগ। চিকিৎসা বিজ্ঞান এখনও এসব রোগের কারণ নির্ণয় করতে পারেনি। জীবনযাপনে কিছু অভ্যাস গড়ে তুলে এবং বদঅভ্যাস ত্যাগ করে এসব রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। এসব রোগ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। ব্যক্তি স্বাস্থ্য সুস্থ রাখতে সচেতন থাকতে হবে। সমকাল প্রতিষ্ঠার পর দেহঘড়ি, পরে ডাক্তারবাড়ি পাতার মাধ্যমে স্বাস্থ্য সচেতনতায় কাজ করে যাচ্ছে।

ডা. আহমেদুল কবীর
আগামী দশকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রয়োজন সুস্থ সক্ষম জনগোষ্ঠী। আর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ জনশক্তি। আমরা নীরবেই একটা বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে যাচ্ছি। উচ্চরক্তচাপ একটি নীরব ঘাতক। এটি ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। সামনে পরিস্থিতি কী দাঁড়ায়? রোগী বাড়লে, ব্যয় বাড়বে। দেশে যত নগরায়ণ হবে, এ ধরনের রোগ তত বাড়বে। এক উচ্চচাপের রোগীর (৩২ মিলিয়ন) জন্য ওষুধ দিতে ২৪ হাজার কোটি টাকা লাগবে। এটা যদি আরও বাড়ে, সঙ্গে যদি ডায়াবেটিস যুক্ত করেন, তাহলে স্বাস্থ্যের বাজেট শুধু এ খাতেই ব্যয় হয়ে যাবে। এটা ঠিক, স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বাড়াতে হবে। হাসপাতাল তৈরি ও চিকিৎসার আওতা বাড়াতে হবে। কিন্তু যদি প্রাথমিক পর্যায়ে এই রোগ প্রতিরোধ করা যায়, তাহলে চিকিৎসা আর ওষুধের জন্য ব্যয় করতে হচ্ছে না। এ জন্য জনগণকে সচেতন করতে হবে। আর এতে বড় ভূমিকা রাখতে হবে গণমাধ্যমকে।
ডা. এম এ ফয়েজ
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে মানুষের আচরণগত পরিবর্তন, চিকিৎসা নিতে উদ্বুদ্ধকরণ কিংবা চিকিৎসা চলমান রাখা এটি একটা বিশাল কঠিন কাজ। কিন্তু এর বিকল্প কোনো কিছুই নেই। এ ক্ষেত্রে আশার কথা, এখন কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা পর্যায়ের মাধ্যমে প্রচারণার বিষয়টি শুরু হয়েছে। অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর ওষুধ গ্রহণ করা জরুরি। এটি তাদের অধিকার। মানুষ যাতে সহজে ওষুধ পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে এনসিডিসি অনেক পরিকল্পনা নিয়েছে, এখন তা বাস্তবায়ন করতে হবে। নিয়ন্ত্রণের জন্য সবাইকে ভূমিকা পালন করতে হবে।

ডা. হারুন-অর-রশিদ
কিডনি রোগ ওতপ্রোতভাবে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের সঙ্গে জড়িত। ২০২১ সালে দেশে কিডনি রোগী ১৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ২১ শতাংশ হয়েছে।  বছরে প্রায় দুই লাখ থেকে সাত লাখ মানুষ কিডনি রোগে মারা গেছে। পৃথিবীতে প্রায় ২৫ কোটি মানুষের কিডনি রোগ আছে। যেহেতু প্রতিরোধের ওপর বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে, তাই কমিউনিটি ক্লিনিকের এনসিডি কর্নারে ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপ পরীক্ষার পাশাপাশি কিডনি রোগ শনাক্তের জন্য ইউরিন টেস্টের ব্যবস্থা রাখা দরকার। এতে খুব বেশি খরচ হবে না, রোগীপ্রতি মাত্র ১০ টাকা খরচ হবে। সময় লাগবে দুই মিনিট। কারণ, কিডনি রোগের ৪০ শতাংশ ডায়াবেটিস থেকে এবং ২৫ শতাংশ হয় উচ্চরক্তচাপ থেকে। ফলে ওই দুটি পরীক্ষার পাশাপাশি ইউরিন টেস্ট করলেই কিডনি রোগ সম্পর্কে জানা যাবে। এতে সময় ও খরচ সবই বাঁচবে। ৮০ শতাংশ লোক কিডনি রোগ হয়েছে কিনা, জানেই না। এ জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচিত এনসিডি কর্নারে কিডনি রোগ শনাক্তের ব্যবস্থা রাখা। তাহলে লাখ লাখ কিডনি রোগীর উপকার হবে। প্রাণ বাঁচবে।

ডা. রোবেদ আমিন
বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য- 'সঠিকভাবে রক্তচাপ মাপুন, নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং দীর্ঘজীবী হোন'। খেয়াল করলে দেখা যাবে, প্রতিপাদ্যের প্রতিটি শব্দই গুরুত্বপূর্ণ।  কেন রক্তচাপকে সঠিকভাবে পরিমাপ করতে বলা হয়েছে, কেন এটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বলা হয়েছে তা ভাবতে হবে। আসলে জানতে হবে উচ্চরক্তচাপ সবচেয়ে বড় ঝুঁকি স্বাস্থ্যের জন্য। এ কারণেই সাধারণত স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক ঘটে। অসংক্রামক রোগ আর সংক্রামক রোগের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে, অসংক্রামক রোগের কোনো ভ্যাকসিন নেই। তবে পাঁচটি রিস্ক ফ্যাক্টর রয়েছে। যেগুলো চিহ্নিত করে অসংক্রামক রোগ চিহ্নিত করে প্রতিরোধ করা যাবে। লবণ কম খেতে হবে। নিয়মিত হাঁটতে হবে। ধূমপান করা যাবে না। উচ্চরক্তচাপের রোগীদের নিয়মিত ওষুধ খেতে হবে। স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন করতে হবে। হৃদয়কে ভালোবাসতে হবে। সুযোগ পেলেই রক্তচাপ মাপতে হবে। জনগণকে সচেতন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকে বড় ভূমিকা রাখতে হবে। সঠিকভাবে রক্তচাপ পরিমাপ করতে প্রান্তিক পর্যায়ে ডিজিটাল মেশিন দিতে হবে। স্বাস্থ্যকর্মীদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। উচ্চরক্তচাপ নীরব ঘাতক। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোনো উপসর্গ দেখা যায় না। যখন বোঝা যাবে, তখন হয়তো বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। যেমন- হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক ইত্যাদি। উচ্চরক্তচাপ সঠিক সময়ে নির্ণয় করা জরুরি। তাহলে বড় ঝুঁকি এড়ানো যায়। কারণ, রক্তচাপ বেশি থাকলে হার্ট অনেক বেশি পাম্প করে। এতে হার্টের ড্যামেজ হওয়ার শঙ্কা বেড়ে যায়। এ জন্য কমিউনিটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে হবে। সঠিকভাবে রক্তচাপ মাপতে হবে। সঠিকভাবে রক্তচাপ না মাপতে পারলে উচ্চরক্তচাপ শনাক্ত করা সম্ভব হয় না। এক জরিপে দেখা গেছে, ৫০ শতাংশ লোকের সাধারণ রক্তচাপকে উচ্চরক্তচাপ বলা হয়েছে। ৪৭ শতাংশ ক্ষেত্রে সাধারণ রক্তচাপ বলা হলেও তাদের উচ্চরক্তচাপ ছিল। এটা ঘটেছে শুধু সঠিকভাবে পরিমাপ না করার জন্য। উচ্চরক্তচাপের ঝুঁকিগুলো হচ্ছে- বংশে কারও উচ্চরক্তচাপ থাকা, বয়স বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি। এ ছাড়া শারীরিক পরিশ্রম না করা, লবণ বেশি খাওয়া, স্থূলতা, ধূমপান, মানসিক চাপে থাকা, গর্ভাবস্থায় উচ্চরক্তচাপ হতে পারে। ২০১৮ সালের তথ্য বলছে, বিশ্বে অসংক্রামক রোগে মৃত্যুর পরিমাণ ৭১ শতাংশ, এর সঙ্গে দুর্ঘটনার ৯ শতাংশ যোগ করলে দাঁড়ায় ৮০ শতাংশ। এর মধ্যে ৩১ শতাংশ হৃদরোগ। মানে হার্ট অ্যাটাক, স্রেদ্বাক ইত্যাদি। ১৯ শতাংশ ক্যান্সারজনিত মৃত্যু। বিশ্বে বছরে প্রায় ১৮ মিলিয়ন লোক হৃদরোগে মারা যায়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অসংক্রামক রোগে মৃত্য ৬৭ শতাংশ, এর সঙ্গে দুর্ঘটনা যুক্ত হলে তা দাঁড়ায় ৭৪ শতাংশ। এর বড় কারণ হৃদরোগ, অর্থাৎ হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক। এই দুটি রোগের বড় কারণ উচ্চরক্তচাপ। দেশে ২৫ শতাংশ উচ্চরক্তচাপের রোগী রয়েছে, যা ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত ছিল ৭ শতাংশ। ২০০১ সালের পর থেকে এটা বাড়তে থাকে। প্রাথমিক পর্যায়ে উচ্চরক্তচাপ শনাক্ত করতে পারলে উচ্চরক্তচাপ প্রতিরোধ করা সহজ হয়। অনেকে নানান উপসর্গের কথা বলেন। কারও মাথাব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখা, অবসাদগ্রস্ততার কথা কেউ কেউ বললেও মূলত উপসর্গহীন রোগীর সংখ্যা বেশি। উপসর্গ না থাকলেও জটিলতা দেখা দিতে পারে। স্ট্রোক করা, হৃদরোগ হওয়া, কিডনি বিকল হওয়া, চোখের সমস্যা প্রভৃতি। বর্তমানে দেশে ৩২ মিলিয়ন লোক উচ্চরক্তচাপে ভুগছে, যা স্বাস্থ্য খাতের বড় ধরনের সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। ২০৩০ সালের উচ্চরক্তচাপের পাশাপাশি ডায়াবেটিসও বাংলাদেশের জন্য বড় ঝামেলা হয়ে দেখা দেবে। পাঁচটি ফল আর সবজি খান না ৯১ শতাংশ শহুরে মানুষ। গ্রামের ৮৮ শতাংশ মানুষ পাঁচটি সবজি ও পাঁচটি ফল খান না। শহরের ৩৬.৭ শতাংশ ব্যক্তি কায়িক পরিশ্রম করেন না। গ্রামের ২৬.৯ শতাংশ মানুষও কায়িক শ্রম দেন না। ৩৮.৮ শতাংশ শহুরে মানুষ ধূমপান করেন। গ্রামে ৪৫.২ শতাংশ মানুষ ধূমপান করেন। শহরে ৩৪.৩ শতাংশ লোক স্থূলতায় ভুগছেন। গ্রামে এই হার ২৩.৭ শতাংশ। শহরে ৪৯.২ শতাংশ জনগণ উচ্চরক্তচাপে ভুগছেন। গ্রামে এই সংখ্যা ২৪ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে করণীয় হলো সঠিকভাবে রোগ শনাক্ত করে ঝুঁকি কমিয়ে আনা। প্রচুর পরিমাণে তথ্য প্রয়োজন। যদি আগাম প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যায় তবে ১০টির মধ্যে ৯টি স্ট্রোক, ৮০ শতাংশ হার্ট অ্যাটাক, ৭৩ শতাংশ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ সম্ভব। এজন্য দেশজুড়ে কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে এনসিডি কর্নার করা হচ্ছে। এখানে উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস মেপে শারীরিক অবস্থার তথ্য জানা যাবে। বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়া হয়। তবে প্রতিরোধের জন্য জানতে হবে, জানাতে হবে। এজন্য জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। মাঠপর্যায়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা উঠান বৈঠক করে, মসজিদের ইমাম, রাজনৈতিক নেতাসহ সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সম্পৃক্ত করে সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। শুধু বয়স্ক লোকজনই নয়, ১৫ থেকে ৩৫ বছরের ব্যক্তিদের ১৩.৭ শতাংশের উচ্চরক্তচাপ রয়েছে। বয়স যত বাড়ছে উচ্চরক্তচাপের ঝুঁকি তত বাড়ছে। তাঁদের মধ্যে ৬৮ শতাংশের কোনো উপসর্গই নেই। কত রোগী শনাক্ত করা যাবে, এখনই ৩২ মিলিয়ন উচ্চরক্তচাপের রোগী রয়েছে। আরও বাড়লে খরচ কই গিয়ে দাঁড়াবে বলা যায় না। তাই উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ জরুরি।
ডা. মোস্তফা জামান
দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী আমাদের ঘরে ঘরে উচ্চ রক্তচাপ রোগী আছে। প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন করে উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন।  কিন্তু সচেতনতা একদম কম। উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদের তিনটি চ্যালেঞ্জের কথা বলতে হবে। আমাদের বেশিরভাগ লোক জানে না যে, তারা উচ্চরক্তচাপে ভুগছে। হাসপাতাল পর্যায়েও এ চ্যালেঞ্জ এখনও রয়ে গেছে। উচ্চরক্তচাপের চিকিৎসায় প্রথমে ৬২ উপজেলার মাধ্যমে শুরু করে এখন ২০০টি উপজেলায় এনসিডিসির আওতায় সচেতনতা ও চিকিৎসার কাজ চলছে। উচ্চরক্তচাপের ক্ষেত্রে সারাদেশে একই চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে মাত্র অল্প কয়েকটি ওষুধও দেওয়া হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এনসিডি কর্নারে ভিড় থাকে। অনেক ক্ষেত্রে একজন ডাক্তার যখন যেসব রোগী দেখেন তারা ধূমপান গ্রহণ করেন কিনা, কোলেস্টরেল আছে কিনা, রোগী ওষুধ খাচ্ছে কিনা এটা দেখার সুযোগ হয় না। কিন্তু এসব তথ্য নেওয়া জরুরি। অনেক সময় রোগীরা একটু সুস্থ হলে ওষুধ নেওয়া বন্ধ করে দেন। এটি আরেকটা বড় চ্যালেঞ্জ। সরকারের পক্ষ থেকে জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উচ্চরক্তচাপের ওষুধ যাচ্ছে। এটি সব সময় স্টোরে ঠিকমতো যাচ্ছে কিনা। স্টোর থেকে ডাক্তারের কাছে যাচ্ছে কিনা, তা দেখতে হবে। নিরবচ্ছিন্নভাবে দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ওষুধ সরবরাহ করতে হবে। আমাদের পলিসি ম্যাকিংয়ে সচেতন থাকতে হবে। যেসব কর্মকৌশল নেওয়া হয় তাতে রাজনৈতিক কমিটমেন্ট থাকতে হবে। না হলে টেকসই কর্মকৌশল গড়ে উঠবে না। সর্বোপরি, আমাদের সবাই মিলে কাজ করতে হবে। সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে প্রচার করতে হবে। উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে শুধু ওষুধ নয়, সচেতনতার মাধ্যমে প্রচার করতে হবে।

ডা. জাহিদ হোসেন
এনসিডিসি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে সারাদেশে অসংক্রামক রোগের চিকিৎসায় যে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে তা প্রশংসনীয়। অসংক্রামক রোগের চিকিৎসায় সবচেয়ে বড় বিষয় সচেতনতা বৃদ্ধি করা। এ ক্ষেত্রে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় রোগের কারণ ও প্রতিরোধের উপায় বেশি করে প্রচার করতে হবে। সারাদেশের মানুষকে জানাতে হবে। এখন উপজেলা হেলথ কেয়ারে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে গ্রাম পর্যায়ে ও ইউনিয়ন পর্যায়েও চিকিৎসা হচ্ছে। এখন সব পর্যায়ে সমন্বয় করতে হবে। রিসার্চ সেন্টারের মাধ্যমে অসংক্রামক রোগের ডাটা সংগ্রহ করতে হবে। যার মাধ্যমে আমরা প্রতিরোধ করতে পারব। সরকারের বিভিন্ন সংস্থা যে উদ্যোগ নিয়েছে তা বাস্তবায়ন করতে সরকারি ও বেসরকারিভাবে সব মাধ্যমে প্রচার করতে হবে। রাজনৈতিকভাবেও সবাইকে সচেতন হতে হবে। প্রত্যেককে নিজের এবং যার যে কাজ তা করতে হবে।

ডা. আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী
আমাদের দেশে রক্তচাপ মাপার যে মেশিনগুলো আছে, যার অধিকাংশই ঠিকভাবে মেজারমেন্ট করে না। ভ্যালিট্যাডি সিস্টেম নেই। এখন সময় এসেছে এনসিডি কর্নারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের রক্তচাপ মাপার সে মেশিন সরবরাহ করার।  সুস্থ থাকতে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আমাদের ওষুধের সঙ্গে নিয়মগুলো মানতে হবে। এ রোগে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ রোগীর কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। তাই আমাদের ওষুধ খেতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে কিছুদিন ওষুধ গ্রহণ করার পর আর ওষুধ গ্রহণ করা হয় না। তাই জনগণের মনের মধ্যে সচেতনতার বিষয়টি গেঁথে দিতে হবে।


ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী
উপজেলা পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। সেমিনার করতে হয়েছে, সচেতনতা বাড়াতে সভা করতে হয়েছে। ফলে সচেতনতা বেড়েছে। অনেক সমস্যাও চিহ্নিত হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে লোকজন তেমন ওষুধ নিতে আসে না। পরে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ওষুধ বিতরণ শুরু হলে ভালো সাড়া মিলেছে। এদিকে করোনাকালে অনেক চিকিৎসাসেবা টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে। যেহেতু জনবল সংকট রয়েছে, তাই কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে যদি প্রান্তিক পর্যায়ে সেবা দেওয়া যায় তাহলে আরও বেশি লোক চিকিৎসার আওতায় আসবে। এতে অনেক ওষুধ লাগবে। প্রচুর ওষুধ সরবরাহ নিমিতে হবে।

ডা. মীর জামাল উদ্দিন
উচ্চ রক্তচাপ দিবস ২০০৫ সাল থেকে পালন করা হচ্ছে। এর মূল কারণ হচ্ছে সচেতনতা বৃদ্ধি। বিশেষ করে রক্তচাপ সঠিকভাবে মাপতে হবে।  এ বিষয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দিতে হবে। কীভাবে রোগীকে সামলাতে হবে। রোগী আসার পর তাকে ৩০ মিনিট বিশ্রাম দিতে হবে। চুপচাপ থাকবে, ধূমপান করবে না। রুমের ওয়েদার ঠান্ডা থাকতে হবে। হাত টেবিলে রাখা ও সঠিক স্থানে মেশিন স্থাপন করতে হবে। তাহলে সঠিক রক্তচাপ সম্পর্কে জানা যাবে। দেশে ৩২ মিলিয়ন লোক উচ্চরক্তচাপে ভুগছে। তাদের হৃদরোগ থেকে বাঁচানোর জন্য রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। অর্ধেক রোগী উচ্চরক্তচাপ হয়েছে কিনা, তা জানে না। যারা জানে তাদের ৫০ শতাংশ ওষুধ খায় না, যারা খায় তাদের ৫০ শতাংশ নিয়মিত নয়। অর্থাৎ মাত্র ১২.৫ শতাংশের উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।

ডা. ফজলে এলাহী খান
কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর এনসিডি কর্নারে রক্তচাপ মাপার যন্ত্র, ডায়াবেটিস শনাক্তের জন্য গ্লুকোমিটার ও স্ট্রিপ সরবরাহ করা হবে।  কিডনি শনাক্তের বিষয়ে টেস্টের ব্যবস্থা রাখা হবে। স্বাস্থ্যকর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সিভিল সার্জনের মাধ্যমে প্রতিটি জেলার ৫টি বিদ্যালয়ের ২৫০ শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে যাতে তারা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অসংক্রামক রোগ সম্পর্কে সচেতন করতে পারে। নাটক, বিজ্ঞাপনসহ নানাভাবে জনগণকে সচেতন করে যাচ্ছে এনসিডিসি। রোগীদের বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। সামনে ইনসুলিন দেওয়া হবে।

ডা. মাসুদ রেজা কবির
সারাদেশে ১৪ হাজার ৮৫১টি কমিউনিটি হাসপাতাল আছে। কমিউনিটি ক্লিনিকে তিনজন করে সার্ভিস প্রোভাইডার আছেন। কমিউনিটি ক্লিনিকে সার্ভিস প্রোভাইডারদের তিন মাসের প্রশিক্ষণের সময়ে কীভাবে ডায়াবেটিক ও রক্তচাপ পরীক্ষা করতে হবে তা হাতেকলমে শেখানো হয়। এসব কমিউনিটি ক্লিনিকে সরকারের পক্ষ থেকে ব্লাডপ্রেশার মেশিনও সরবরাহ করা হচ্ছে। আমাদের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ডায়াবেটিক ও উচ্চরক্তচাপেরও হার অনেক বেশি। তাই সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ওষুধও সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে সিলেটের চারটি হাসপাতালে বিশ্বনাথ, বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় দুটি করে কমিউনিটি ক্লিনিকে এ কার্যক্রম চালু করেছি। পরে সব উপজেলায় কার্যক্রম চালু হবে।

ড. সাধনা ভগবত
প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম। দৈনন্দিন জীবনযাপনের কিছু অভ্যাস বদলালেই উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। আর এসব রোগ শনাক্ত করা সহজ। যেহেতু খুব ভালো ওষুধ রয়েছে তাই প্রতিরোধও সহজ হয়। আর বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। তাই এসব অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ খুব বেশি কষ্টসাধ্য নয়।


ডা. তাজুল ইসলাম
জাইকা থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য। দেশজুড়ে এনসিডি কর্নার স্থাপনে সহযোগিতা করেছে জাইকা। এ ছাড়া স্বাস্থ্য খাতে নীতিমালা তৈরি, প্রশিক্ষণ উপকরণ সরবরাহ, দক্ষতা বৃদ্ধি কার্যক্রম, পরীক্ষণ উপকরণ সরবরাহে জাইকা সরকারকে সহযোগিতা করছে। এ ছাড়া বিদ্যালয় পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম শুরু করেছে। স্কুলশিক্ষকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে তারা যাতে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সচেতন করে গড়ে তুলতে পারে। সমাজে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারে। অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন জরুরি। এ জন্য কমিউনিটি ক্লিনিকে আগত রোগীদের যথাযথ কাউন্সেলিং করতে হবে। একই সঙ্গে ওষুধের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। না হলে সব পরিকল্পনা ব্যর্থ হবে।

ডা. আফরিন ইসলাম
অসংক্রামক রোগের মধ্যে ওষুধ বড় ভূমিকা রাখে। দীর্ঘমেয়াদি নিয়ন্ত্রণের জন্য এ ক্ষেত্রে আমাদের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে দ্রুত শনাক্তকরণ জরুরি।  শনাক্তের পরে প্রাইমারি লেভেলে উপজেলা পর্যায়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে এনসিডিসি উপজেলা পর্যায়ে চিকিৎসা ব্যবস্থা ও ওষুধ সরবরাহ করে যাচ্ছে। শুধু উচ্চরক্তচাপের হার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে জনসাধারণের মধ্যে হৃদরোগের হার কমিয়ে আনা সম্ভব। আইসিডিডিআর,বি এনসিডিসিকে কারিগরি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। ডিজিটালাইজেও কাজ করে যাচ্ছে এনসিডিসি। বর্তমানে ২০টি উপজেলায় কমিউনিটি ক্লিনিকে একজনের উচ্চরক্তচাপ মাপার পর তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

ডা. বিশ্বজিৎ ভৌমিক
পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৯০ শতাংশ মানুষ সবজি খাচ্ছে না। আমাদের দেশে ৬০ শতাংশ লোক দিনে একটি করে সবজি খায় আর ৩০ শতাংশ লোক একটি করে ফল খায়।এ লোকগুলো যখন ডাক্তারের কাছে যাচ্ছে তখন উচ্চমাত্রার ক্যালরি দেওয়া হচ্ছে। যাতে করে আরও ডায়াবেটিসের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। তাই ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে প্রচুর পরিমাণে সবজি আর ফল খেতে হবে।



ডা. খন্দকার আব্দুল আওয়াল রিজভী
দেশের ৩ কোটি ২০ লাখ মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে এ পরিসংখ্যান ভয়াবহ। ১৯৯৮ সালে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন যাত্রা শুরুর পর থেকে কাজ করে যাচ্ছে।  এ বিশালসংখ্যক রোগীর চিকিৎসায় সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে এবং চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধের দিকে বেশি নজর দিতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা পর্যায়ে কাজ শুরু করেছে। ৫৪টি হাসপাতালে সফলতা আসছে। সারাদেশের সব উপজেলায় কাজ শুরু করলে যুগান্তকারী একটা কাজ হবে। তবে আমাদের সচেতনতা অনেক কম। এমনকি চিকিৎসকদের মধ্যেও নেই। মানুষ ইচ্ছে করেই উচ্চরক্তচাপ মাপে না। চিকিৎসকদের কাছে গেলেও উচ্চরক্তচাপ মাপা হয় না। মেডিসিন ডাক্তাররা উচ্চরক্তচাপ মাপেন না। সার্জারির ডাক্তাররা উচ্চরক্তচাপের দিকে বেশি গুরুত্ব দেন না। দেশের সব ডাক্তার ও নার্সরা যেন উচ্চরক্তচাপ মাপেন। অ্যালার্জি আছে রক্তচাপ মাপতে হবে। উচ্চরক্তচাপ বড় বড় রোগের প্রধান কারণ। তাই উচ্চরক্তচাপ দিবসটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিল্পপ্রতিষ্ঠানে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে দিবসটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা যায় কিনা ভেবে দেখতে হবে।

প্রধান অতিথি
ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক
জাতীয় অধ্যাপক এবং প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন
অব বাংলাদেশ

বিশেষ অতিথি
মোজাম্মেল হোসেন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
সমকাল

সভাপতি
অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর
অতিরিক্ত মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন
অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন
লাইন ডিরেক্টর, এনসিডিসি

অধ্যাপক ডা. মোস্তফা জামান
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

আলোচক

অধ্যাপক ডা. এম এ ফয়েজ
সাবেক মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

অধ্যাপক ডা. হারুন-অর-রশিদ
সভাপতি, কিডনি ফাউন্ডেশন

অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন
উপ-উপাচার্য
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

অধ্যাপক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী
বিভাগীয় প্রধান, হৃদরোগ বিভাগ
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

ডা. মাসুদ রেজা কবির

লাইন ডিরেক্টর, সিবিএইচসি
ড. সাধনা ভগবত
প্রতিনিধি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী
বিভাগীয় প্রধান, রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগ, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন
অব বাংলাদেশ

অধ্যাপক ডা. মীর জামাল উদ্দিন
পরিচালক, এনআইসিভিডি

ডা. ফজলে এলাহী খান
প্রোগ্রাম ম্যানেজার-১
এনসিডিসি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

ডা. তাজুল ইসলাম
জাইকা প্রতিনিধি

অধ্যাপক ডা. খন্দকার আব্দুল
আওয়াল রিজভী
মহাসচিব, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ

ডা. আফরিন ইসলাম
প্রতিনিধি, আইসিডিডিআর,বি

ডা. বিশ্বজিৎ ভৌমিক
প্রকল্প পরিচালক
সেন্টার ফর গ্লোবাল হেলথ রিসার্চ, বাডাস

সঞ্চালনা
শেখ রোকন
সম্পাদকীয় বিভাগ প্রধান
সমকাল

অনুলিখন
হাসনাইন ইমতিয়াজ
স্টাফ রিপোর্টার, সমকাল

লতিফুল ইসলাম
রিপোর্টার, সমকাল