ইলেকট্রনিকস হোম অ্যাপ্লায়েন্স এখন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনুষঙ্গ। অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দেশব্যাপী বিদ্যুৎ সংযোগ ও জীবনযাপনে পরিবর্তন আসায় মানুষ প্রতিনিয়ত গৃহস্থালির কাজে নানা ধরনের হোম অ্যাপ্লায়েন্স ব্যবহার করছে। এরই ধারাবাহিকতায় এক দশকে ইলেকট্রনিকস হোম অ্যাপ্লায়েন্স শিল্প খাতে বিপুল অগ্রগতি হয়েছে। একসময় যেগুলো নিতান্তই মানুষের শখের ছিল, এখন সেগুলোই নিত্যপ্রয়োজনীয় উপকরণ। বর্তমানে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এসব পণ্যের শোরুম। কনজিউমার ইলেকট্রনিকস জগতে যমুনার পথচলা ২০১৪ সালে। যদিও রেফ্রিজারেটর ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স ব্যবসায় আমাদের কোম্পানিগুলো এদেশে দুই দশকের বেশি সময় ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। কিন্তু মানসম্মত পণ্য সবরাহের ঘাটতি থেকেই আমাদের গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাবুল মনে করলেন, ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে মানুষের দোরগোড়ায় সেরা পণ্য পৌঁছে দিতে হবে। এই লক্ষ্য নিয়েই দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী যমুনা গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান যমুনা ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড অটোমোবাইলস লিমিটেড ২০১৪ সালে বড় পরিসরে ইলেকট্রনিকস হোম অ্যাপ্লায়েন্স উৎপাদনে যায়। আধুনিক যন্ত্রপাতি, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, দক্ষ জনবল, উন্নত কাঁচামাল, প্রতিনিয়ত উদ্ভাবনী ও উৎকর্ষ সাধনের ফলে যমুনা আজ দেশের এক নম্বর কোয়ালিটি ইলেকট্রনিকস ব্র্যান্ড।

জীবনের সব ধরনের প্রয়োজনে মানুষের পাশে রয়েছে যমুনা ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড অটোমোবাইলস। আমাদের উৎপাদিত রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, এলইডি টিভি, এসি, ওয়াশিং মেশিন, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ব্লেন্ডার, জুসার, ইলেকট্রিক কেটলি, আয়রন, গ্যাসস্টোভসহ অন্যান্য স্মল অ্যাপ্লায়েন্স দেশের এক নম্বর কোয়ালিটি সম্পন্ন। ক্রমবর্ধমান চাহিদা ও ক্রেতা সন্তুষ্টির দিকে নজর রেখে নিজস্ব কারখানায় নিত্যনতুন প্রযুক্তি, উন্নত কাঁচামাল ও নিবেদিত প্রাণ দক্ষ জনবল দিয়ে এসব হোম অ্যাপ্লায়েন্স তৈরি করা হচ্ছে।

বাংলাদেশে একমাত্র যমুনা রেফ্রিজারেটরই তার উৎপাদন প্রক্রিয়ার কোথাও সিলিকন জেল ব্যবহার করে না। আমাদের ফ্রিজে 'এ৬০০আর' গ্যাস ব্যবহূত হয়, যা পরিবেশবান্ধব ও মানবদেহের ক্ষতি করে না। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে খাবারের মান ঠিক থাকে, সঙ্গে বিদ্যুৎ খরচ ৭০ শতাংশ পর্যন্ত কম হয়। এত সুবিধার পরও বাজারের যে কোনো প্রতিষ্ঠানের চেয়ে আমাদের রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার ক্রেতারা কম মূল্যে পাচ্ছেন।

বৈশ্বিক করোনা মহামারির কারণে ২০১৯, ২০২০ ও ২০২১ সালে আমাদের কঠিন সময় পার করতে হয়েছে। তবে আশার কথা, পরিবর্তিত পরিস্থিতি মোকাবিলা করে যমুনা তার ক্রেতাসাধারণের কাছে সুলভ মূল্যেই সেরা পণ্যটি তুলে দিয়েছে। বিশেষ করে করোনাকালে গৃহস্থালির কাজকর্ম নিজেদেরই করতে হয়েছে। ফলে এই সময়ে কাপড় ধোয়ার জন্য যমুনা ওয়াশিং মেশিনের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে আমরা বিভিন্ন আকার, রং, ধরন ও ধারণক্ষমতার ওয়াশিং মেশিন উৎপাদন এবং বিপণন করি। শুধু তাই নয়, করোনাকালে হোম ডেলিভারির মাধ্যমে ভোক্তার নাগালে পণ্য পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

রেফ্রিজারেটর, টিভি, ওয়াশিং মেশিন, ব্লেন্ডারের মতো হোম অ্যাপ্লায়েন্স এখন মানুষের নিত্যসঙ্গী। সময়ের পরিক্রমায় মানুষের চাহিদা ও জীবনযাপনের ধরনে পরিবর্তন আসায় বেড়েছে এসব পণ্যের চাহিদাও। ফলে নিত্যনতুন ও আধুনিক প্রযুক্তি পণ্যের সমাহার নিয়ে তৎপর দেশসেরা ইলেকট্রনিকস ব্র্যান্ড যমুনা। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রাহকদের হাতে মানসম্মত পণ্য তুলে দিতে আমরা বদ্ধপরিকর।

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে যমুনা রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজারে মিলিয়নিয়ার অফার চলছে। অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করে একজন ক্রেতা জিতে নিতে পারেন ফ্রিজ, টিভি, এসিসহ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত নিশ্চিত ক্যাশব্যাক। সর্বনিম্ন ডাউন পেমেন্টে ১ হাজার ৩৬ টাকা মাসিক কিস্তি, ৪০ শতাংশ পর্যন্ত এক্সচেঞ্জ অফারে ফ্রিজ, ৩৬টি ব্যাংকে শূন্য শতাংশ ইন্টারেস্টে ইএমআই সুবিধায় একটি ফ্রিজ কিনলে সঙ্গে তিনটি পণ্য ফ্রি পাওয়ার সুযোগ থাকছে। ১০ বছরের ওয়ারেন্টি এবং দেশজুড়ে বিস্তৃত যমুনার সার্ভিস সেন্টারে রয়েছে সহজ বিক্রয়োত্তর সেবা। গ্রাহকের কাছে সেরা মানের পণ্য পৌঁছে দিতে শিগগিরই দেশের প্রতিটি থানায় যমুনা প্লাজা করা হবে।

করোনা মহামারি ও সাম্প্রতিক ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে রেফ্রিজারেটর তৈরির কাঁচামাল বিশেষ করে চিপ যন্ত্রাংশ সরবরাহে কিছুটা বিঘ্ন ঘটে। তবে দেশের চাহিদা বিবেচনায় উৎপাদন প্রক্রিয়া সচল রেখেছে যমুনা। শুধু তাই নয়, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও দাম না বাড়িয়ে সাশ্রয়ী মূল্যে ক্রেতার কাছে সরবরাহ করা হচ্ছে। বিশাল এই কর্মযজ্ঞে দেশের হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে, যা দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।

একসময়ের আমদানিনির্ভর এই শিল্প বর্তমানে লাখ লাখ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য আনতে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। যমুনা ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড অটোমোবাইলস দেশেই তৈরি করছে আন্তর্জাতিক মানের হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য। সরকারের গৃহীত নীতিসহায়তা, অবকাঠামো উন্নয়ন, উদ্যোক্তাদের দেওয়া নানা সুবিধা, সঠিক বিক্রয় ও বিপণনের মাধ্যমে শিল্পটি আরও এগিয়ে যাবে।

লেখক: ডিরেক্টর (মার্কেটিং), যমুনা ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড অটোমোবাইলস লিমিটেড