আজ ছ' বছর হতে চলল আমাদের বাংলার কবি ও সব্যসাচী সৈয়দ শামসুল হক এ পৃথিবী ত্যাগ করে গেছেন। 'দেখতে দেখতে দিন চলে যায়'- গুরুজনদের এই বাক্য এখন নিজের জীবনে বেশ ভালোভাবে প্রতিফলিত দেখতে পাই। সত্যি তো, মানুষের কোনো শোক, কোনো আনন্দ, কোনো বেদনা বা হাহাকার দিন বা সময় বা জীবন আটকে রাখতে পারে না, অথচ মনে হয় যেন পারাটা উচিত ছিল!
তো সৈয়দ হকও জীবনের আইন পালন করে এবং মৃত্যুর আইন মাথা নিচু করে মেনে নিয়ে এ পৃথিবী ত্যাগ করে গেলেন সেই ছ'টি বছর আগে, যখন মনে হয়েছিল তাঁর তিরোধানের সঙ্গে সঙ্গে বুঝি সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। তিনি কবরে শায়িত হয়ে গেলে আমি যে এ পৃথিবীতে একাকী রয়ে গেলাম, এটা যেন ঠিক হলো না। আমি বেভুল, বেতাল হয়ে, যেন হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াতে লাগলাম শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে।
দয়ালু ফরিদুর রেজা সাগর সৈয়দ হক বেঁচে থাকাকালে একটি সাদা মোটর গাড়ি দিয়েছিলেন তাঁর চাচাকে চড়তে, সেই গাড়ি তিনি আর ফেরত নেননি, সৈয়দ হক চলে গেলে সেই গাড়িটি হলো আমার বাহন। ঢাকার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে আমি ভবঘুরের মতো চরে বেড়াতে লাগলাম। রাস্তার ধুলোর ভেতরে, পথের চা-খানার ভেতরে, বনরুটির ভেতরে, কাগজের ঠোঙার ঝালমুড়ির ভেতরে আমার মনের বিকট শূন্যতা, মুখ ব্যাদান করা শূন্যতার ফাঁক ভরাট করতে যেন চরকির মতো ঘুরে বেড়াতে লাগলাম। চলমান রাস্তাই হলো আমার জীবনসাথি।
সাভারের জঙ্গল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশাল সেই পরিধি, জলার ভেতরে ভিন দেশের সব নাম না জানা পাখি, মাঠের ভেতরে বসে যাওয়া রঙবেরঙের কাপড়চোপড়ের বাজার, গ্রামের মেয়েদের চুড়ি, কানের দুল, নকশিকাঁথার মনোরম সেইসব হাটুরে দোকান, গলি ঘুঁজির ভেতরে খুঁজে পাওয়া নোংরা মানবশিশু, আর মাইলকে মাইল হাঁটা, সবকিছু হয়ে গেল যেন আমার জীবনের সঙ্গী।
তারপরও মনে মনে ভাবলাম, এখন আমি কী করব? কী নিয়ে বাঁচব? আমার তো আর কোনো কাজ নেই। আমার তো আর কোনো দৌড়াদৌড়ি নেই!
সেই ১৯৬৩ সাল থেকে সারাটি জীবন আমি একজন প্রেমিক, একজন স্বামী, একজন বন্ধু, একজন সুহৃদকে বাঁচিয়ে রাখবার জন্য সংগ্রাম করেছি, সেই বিবাহের আগে থেকে তাঁর সেই ভয়াবহ মরণব্যাধি, যা নীরবে তাঁর দুটি তরুণ ফুসফুসকেই প্রায় গিলে ফেলেছিল, মাত্র সামান্য কিছু অংশ ছিল সজীব, প্রচুর মিথ্যে বলে নিজের কাজিন পরিচয় দিয়ে বক্ষব্যাধি হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট ডাক্তার লুৎফর রহমানের কাছে নিয়ে গিয়ে তাঁকে ঢাকার মহাখালী বক্ষব্যাধি হাসপাতালে ভর্তি করে তাঁর চিকিৎসা করানো; তারপর আশির দিকে তার সেই বুকচেরা হৃদয়ের সার্জারি, ট্রিপল বাইপাস, যখন অপারেশন করতে গেলে মর্টালিটি রেট ছিল বেশ হাই, সেই সময় উঠতি বয়সী ছেলেমেয়েকে বিপথে ফেলে রেখে শুধু তাঁকে নিয়ে বিদেশ পাড়ি, সরকারি চাকরি করা সত্ত্বেও মিথ্যে বলে বিদেশে চাকরি নেওয়া, পাউন্ড জোগাড় করে তাঁকে চিকিৎসা করানো, দিন ও রাত, রাত ও দিন লন্ডনের রাস্তায় বন্ধুহীন একাকী বিড়বিড় করতে করতে পথ চলা, হে আল্লাহ, হে আল্লাহ বলে। তারপর?
তারপর একেবারে শেষ কামড়, ক্যানসার।
এবারেও সেই মিথ্যে বলা। মিথ্যে বলে বলে বিদেশের মাটিতে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি, যেন আমরা লন্ডনেরই মানুষ, সেই সময় দেখেছি লন্ডনের মানুষের বাড়িয়ে দেওয়া সাহায্যের হাত, দেশের প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা, দেশবাসীর কাতর প্রার্থনা তাঁর রোগ নিরাময়ের জন্য। এত দুঃখেও মন ভরে যায়। কর্মজীবন সার্থক মনে হয়।
তারপরও তাঁকে আমি বাঁচাতে পারিনি। এ আমার অক্ষমতা। এ আমার অপারগতা। বয়স কোনো ফ্যাক্টর নয়। তাঁর জীবনীশক্তি হচ্ছে ফ্যাক্টর। ১৫০ বছরের জীবনীশক্তি ছিল তাঁর। কিন্তু আমি প্রথমেই রোগ ধরতে পারিনি। একজন ডাক্তার বারডেম হাসপাতালে তাঁর রোগ ধরার পর আমাকে ধমক দিয়ে বলেছিলেন-
এ রকম একজন মানুষের জন্য একটি মেডিকেল টিম আপনার অনেক আগে থেকেই রাখা দরকার ছিল। মাঝে মাঝেই চেকআপের দরকার ছিল। আপনি সেটা করেননি কেন, ম্যাডাম?
না, আমি সেটা করিনি। এতে আমার অপরাধ হয়েছে। আমার করবার কথাও মনের ভেতরে ওঠেনি। কারণ, বাইরে থেকে মানুষটি ছিলেন এত জীবন্ত, এতই প্রাণবন্ত, এতখানি সংগোপন যে আমার পক্ষে ঠিক সময়ে চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি। আর মেডিকেল চেকআপ করানোর ব্যাপারে এতটাই ছিল তাঁর অনীহা যে হাসপাতালে যেতে বললেই নানা রকমের অজুহাত খাড়া করে ফেলতেন।
দেশে এবং বিদেশে তাঁর এমন সব বন্ধু এখনও জীবিত ও সজীব, যাঁরা তাঁরই বয়সী। তাঁরই সমসাময়িক। এবং তাঁর মতো এখনও সক্রিয়।
ঘাতক ব্যাধির কোনো রকমের চিকিৎসা শেষে তাঁকে নিয়ে দেশে ফিরলাম। তিনিই বললেন-
দেশে চলো। ভালো-মন্দ যা হয়, আমার দেশেই হবে।
তো চলে এলাম দেশে। ভর্তি হলেন ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে।
তাঁর বয়সী বন্ধুবান্ধব তাঁকে এসে দেখে যেতে লাগলেন। প্রায় রোজই। আর প্রায় প্রত্যেকেই তাঁদের হাতে করে নিয়ে এলেন তাঁর জন্য কিছু উপহার। যার নাম টাকা। টাকা সামান্যই, তবু তাঁদের দেওয়া টাকায় লেখা হয়ে থাকল বন্ধুত্ব ও ভালোবাসার নাম। দেশের প্রধানমন্ত্রীও কিছু না বলতেই তুলে নিলেন চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্বভার।
কিন্তু তিনি আর এ পৃথিবীতে থাকলেন না।
মৃত্যুর মাত্র দশ দিন আগে কবিতায় লিখলেন- একদিকে তাঁর প্রতি মানুষের ভালোবাসার টান, আরেক দিকে অমোঘ এক শক্তির মোহন হাতছানি। তাঁর যেন সেই মোহন হাতছানির দিকেই এখন যেতে ইচ্ছে করছে!
আমি তখনই বুঝে গেলাম তিনি আর এ পৃথিবীতে থাকবেন না। পৃথিবীতে তাঁর অস্তিত্বকে তিনি আর ঝুলিয়ে রাখতে ইচ্ছুক নন।
এরপরও আমার যেন মনে হলো, তিনি যেন হঠাৎ চলে গেলেন।
আমাকে এক গহিন অরণ্যে একা ফেলে রেখে চলে গেলেন।
রুক্ষ মরুভূমির এক ঝড়ের ভেতরে যেন আমাকে একা রেখে চলে গেলেন।
অথচ এ রকম কোনো কথা ছিল না।
আমার আর কোনো কাজ থাকল না। আমার আর কোনো ব্যস্ততা থাকল না।
সারাটা জীবন তাঁর অসুখ, নানা প্রকার এবং ধরনের অসুখ নিয়ে আমি অস্থির থাকলাম, এক অসুখ থেকে আরেক অসুখ। সেই যে একবার জীবনের প্রথম কক্সবাজারে গিয়ে হোটেলে ওঠার পরদিনই তাঁর পায়ের বুড়ো আঙুলে গাউট মাথা চাড়া দিয়ে উঠল, এই রোগ আগে কখনও ছিল না, সমুদ্রতীরে গিয়ে রোগের প্রথম আক্রমণ হলো এবং তারপর থেকে সারাটা জীবন তাঁকে গাউটের ওষুধ খেতে হলো এবং তারপর থেকে আমারও সমুদ্রসৈকতে বেড়াবার সাধ শেষ হলো এবং বহু বছর পর্যন্ত।
তাঁকে সবচেয়ে কষ্ট দিয়েছিল তাঁর দাঁত। এই দাঁতের কথা যেন না বললেই নয়। আমার তো মনে হয় আমি আমার জীবনে যত উপার্জন করেছি তার অধিকাংশ ব্যয় ঘটেছে তাঁর জন্য দাঁতের ডাক্তারের চেম্বারে গিয়ে। দাঁত এমন একটি জিনিস, যার চিকিৎসা দেশে এবং বিদেশে সমান। কোথাও কোনো মাফ নেই। সবখানেই প্রচুর পয়সা লাগে।
এবং আমিও যেন তাঁর এই অসুখের চক্করের ভেতরেই নিজের জীবনটা কাটালাম। কিন্তু তার পরেও আমার কোনো ক্ষোভ ছিল না, দুঃখ ছিল না, আফসোস ছিল না। কারণ, আমার তিনি জীবনটাকে ভরিয়ে রেখেছিলেন হাসি, গল্প, কথকতায়, জ্ঞানে এবং বৈচিত্র্যে।
আমার বয়সের কথা মনে ছিল না, আমার ভবিষ্যতের কথা মনে ছিল না, আমার অতীতের কথাও যেন মনে ছিল না। আমার ছিল শুধু বর্তমান। ছিল আমার হাসিখুশির সংসার, ছিল আমার গান, আমার কবিতা, আমার নাটক, আমার খেলারাম।
তারপর একদিন দেখি কিছু নেই।
সব শূন্য, সব ফক্কিকার।
ঘর শূন্য, বিছানা শূন্য, লাইব্রেরি শূন্য, লেখার টেবিল শূন্য।
কিন্তু আমার মন যেন সেটা মেনে নিতে চাইল না। আমি তাঁকে যেন খুঁজতে বেরোলাম। পথে পথে, অলিতে গলিতে, ঝোপে জঙ্গলে, টিলায়, শালবনে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে, এলেবেলে রাস্তায় রাস্তায়, চায়ের দোকানে, অন্তরের দুপুর বেলায়। দিন গিয়ে সন্ধ্যে এল, সন্ধ্যে পেরিয়ে রাত। আমার খোঁজার যেন বিরতি নেই। সেগুনবাগিচার 'ভোজে' গিয়ে চুপচাপ বসে থাকি। অপেক্ষা করি। বুঝি সে আসবে। চিন্তা করি। গ্লোরিয়া জিনসে গিয়ে বসে থাকি, বুঝি সে আসবে, 'স্বপ্নে' ঢুকে অপেক্ষা করি, আজিজ সুপার মার্কেটের 'অন্তরে' ঢুকে অপেক্ষা করি।
খেয়াল নেই একই কাপড় পরে আছি দিনের পর দিন, গোসল সারি না দিনের পর দিন, চুল আঁচড়াই না দিনের পর দিন। কারণ, আমার দিন কাটে না। আমার দিনগুলো সব স্থির হয়ে পাথরের মতো ঝুলে আছে শূন্যে, যেন সালভেদর ডালির মেলটিং ওয়াচের মতো সময় আমার গলে গলে লাভা হয়ে প্রস্তরে পরিণত হচ্ছে।
হায়, জীবন এত শূন্য কেন?
এ জীবন কীভাবে ভরাট হবে?

এমনি সময় এক দিন আমি এক দৈনিকের সাহিত্য সম্পাদকের দপ্তরে গিয়ে হাজির হলাম। এর আগেও কয়েকবার হঠাৎ হঠাৎ গিয়েছি, এ রকম হঠাৎ হঠাৎ দৈনিক কাগজের সাহিত্য সম্পাদকদের অফিসে যাওয়া আমার আগে থেকেই অভ্যাস ছিল। এই অভ্যাস আমার লেখক জীবনের শুরু থেকেই। লেখকরা সাধারণত তাদের জীবনের কিছু অংশ এইসব সাহিত্য সম্পাদকের দপ্তরে ফেলে রেখে আসেন সর্বদাই এবং তারই খোঁজে তারা মাঝে মাঝেই সেসব জায়গায় ঢু মারেন। সব সময় যে অ্যাপায়িত হন তা নয়, তবু লেখক এবং কবিদের এসব জায়গার সঙ্গে নাড়ি বাঁধা।
তখন ঘোর সন্ধ্যে। এই সম্পাদকের সঙ্গে সৈয়দ শামসুল হকের একটি অবিচ্ছেদ্য বন্ধন কীভাবে যেন রচনা হয়ে গিয়েছিল বহুদিন আগে থেকেই, আমাদের অনুজ এই কবি এবং লেখকের সঙ্গে আমরা দু'জনেই কীভাবে যেন আমাদের অজান্তেই ওতপ্রোতভাবে জড়িত হয়ে গেছি, তাঁর ওখানে হঠাৎ যেতে আমার কোনো দ্বিধা নেই, আমি তাই এক ঘোর সন্ধ্যায় তাঁর অফিসে গিয়ে হাজির হলাম।
আর তিনি আমাকে ক্যান্টিনে নিয়ে গিয়ে চা এবং সমুচা খাওয়ালেন। কিছু কথা বললেন। তারপর ওঠার আগে আগে গলার সুর পাল্টে যেন অনেকটা অভিভাবকের গলায় বললেন-
আপা, আজ কতদিন ধরে আপনাকে আমি ঠিক এই একই কাপড়ে দেখছি! একই পোশাক, একই জামা, একই চুল আঁচড়ানো : আমরা জানি হক ভাই আর নেই, আর কোনোদিন ফিরে আসবেন না, হাজার মাথা কুটলেও না, কিন্তু আপনি তো বেঁচে আছেন! আপনি এখনও জীবন্ত। আপনি কেন এভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন? আপনি বাড়ি ফিরে যান। আপনি গোসল সারেন। আপনি পোশাক পাল্টান। আপনি নিজের যত্ন নেন আপা। আপনাকে তো কিছু কাজ সারার জন্য বেঁচে থাকতে হবে!
মনে হয়, এই ধরনের কথাই সেদিন আমাকে বলেছিলেন সম্পাদক।
তাঁর কথা শুনে আমি যেন চমকে গেলাম। হতভম্ব হয়ে গেলাম।
আমার ভেতরের ভাঙচুর হঠাৎ করে যেন স্তব্ধ হয়ে গেল।
নিজের দিকে তাকিয়ে আমার কেমন যেন লজ্জা হলো।
আমি মাথা নিচু করে সেদিন বাড়ি ফিরলাম।
পথে ফিরে আসতে আসতে আমার সুবেশ, সুশ্রী, স্মার্ট, সপ্রতিভ স্বামীটির কথা মনে হলো। জীবনে হাজারো অসুখের ভেতরেই যিনি মানুষকে তাঁর শরীরের কষ্টের কথা, মনের কষ্টের কথা, আশাভঙ্গের কথা, তাঁর জীবনের অযুত ঝড়ঝাপটার কথা জানাননি, বন্ধুদের তাঁর প্রতি বিশ্বাসঘাতকতার কথা জানাননি, আর আমি তাঁর পঞ্চাশ বছরের জীবনসঙ্গী হয়েও এতখানি ভঙ্গুর হয়ে গেলাম কী করে?
সমাজের মানুষের সামনে তিনি সর্বদাই ছিলেন সচকিত, সর্বদাই সপ্রতিভ, সর্বদাই রেডি টু গো, আত্মবিশ্বাসী, কিছুটা বা বাইরের অচেনা মানুষের কাছে আত্ম-অহংকারীও, কিন্তু ভেতরে ভেতরে তিনি মানুষ, বন্ধু এবং শিল্পসাহিত্যের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ, দয়া, করুণা এবং ভালেবাসায় টইটম্বুর!
এটা তো হতে দেওয়া যায় না!
আমিও যেন সেদিন আমার এই অনুজের অভিযোগে ধীরে ধীরে নিজকে গুছিয়ে তুললাম। রাতেই বাড়ি ফিরে গরম জলে স্নান করলাম। সুন্দর পোশাক পরে, চুল আঁচড়ে, সৈয়দ হকের উপহার দেওয়া পারফিউম কাপড়ে মাখলাম, তারপর তাঁর লাইব্রেরি খুলে তাঁর চেয়ারের পাশে আরেকটি চেয়ার টেনে নিয়ে বসলাম।
ধীরে ধীরে আমার ছোট্ট ল্যাপটপের ডালা খুলে ওপরে তুলে ধরলাম।
ল্যাপটপের পর্দা ঝকঝকে চোখে আমার দিকে তাকিয়ে থাকল।
যেন আমাকে সে কতদিন চোখে দেখেনি!
শুধু এই ঘটনাটির জন্যই আমি বুঝি আমার প্রিয় সেই সাহিত্য সম্পাদকের কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকব।
পরবর্তী সময়ে মনে হয়েছিল আমরা বুঝি এভাবেই আমাদের শুভার্থীদের সাহায্যে জীবনের পথে ধীরে ধীরে ফিরে আসি। শুভার্থী ছাড়া আর কে আছে আমাদের মতো মানুষের জীবনে?