- বিশেষ আয়োজন
- ইউনিয়ন পরিষদে আলাদা খাতে ‘শিশুপুষ্টি বাজেট’ বরাদ্দ প্রয়োজন
ইউনিয়ন পরিষদে আলাদা খাতে ‘শিশুপুষ্টি বাজেট’ বরাদ্দ প্রয়োজন

বাংলাদেশে ৫ বছরের কম বয়সী ৪৫ শতাংশ শিশুর মৃত্যু হয় অপুষ্টিজনিত রোগে। অপুষ্টির কারণে দেশে খর্বকায় শিশুর সংখ্যার পাশাপাশি বাড়ছে স্থূলকায় শিশুর সংখ্যাও। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট এসডিজি-২ পূরণ করতে হলে উপকূলীয় জনগোষ্ঠীকে মূলধারায় একীভূত করাসহ পুষ্টির চাহিদা মেটানো জরুরি। এ জন্য সব ইউনিয়ন পরিষদে আলাদা পুষ্টি বাজেট বরাদ্দ রাখা প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশিষ্টজন।
গত ১০ মে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সমকাল প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘শিশুর অপুষ্টি দূরীকরণে স্থানীয় সরকারের (ইউ.পি.) বাজেট যেমন চাই’ শীর্ষক এ বৈঠক আয়োজন করে সমকাল ও রাইটটুগ্রো প্রকল্প কনসোর্টিয়াম বাংলাদেশ। রাইটটুগ্রো প্রকল্প কনসোর্টিয়াম বাংলাদেশ-এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে অ্যাকশন অ্যাগেইনস্ট হাঙ্গার, দ্য সেন্টার ফর ইকোনমিক গভর্ন্যান্স অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিবিলিটি ইন আফ্রিকা (সিগা), ম্যাক্স ফাউন্ডেশন, সেভ দ্য চিলড্রেন, দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট, ওয়ার্ল্ড ভিশন, জাগো নারী, এসডিএ এবং এইচএলপি ফাউন্ডেশন।
মো. তাজুল ইসলামবঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখতেন সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। সেই স্বপ্ন পূরণে বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন, স্বাধীনতা এনেছেন। তবে স্বাধীনতা অর্জনের পর, মাত্র সাড়ে ৩ বছরের ব্যবধানে তাঁকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু যখন ক্ষমতায় এলেন, তখন মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল ৯৪ ডলার। মাত্র সাড়ে তিন বছর পর সেটি ২৭৭ ডলারে উন্নীত হয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ২১ বছর পরে বাঙালির মাথাপিছু আয় হয় ৩২৯ ডলার। অর্থাৎ ২০ বছরে আমাদের অর্জন হয়েছিল ৫২ ডলার। এখন আমাদের মাথাপিছু আয় হয়েছে ২ হাজার ৫৯১ ডলার। বর্তমানে আমরা শিশুর অপুষ্টি নিয়ে কথা বলছি। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই অপুষ্টি দূর করার ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এই লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আমরা কাজ করছি। একই সময়ে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আমরা কাজ করছি। এসডিজির সঙ্গে এর সমন্বয়ও করা হয়েছে। ইতোপূর্বে আমরা তিনটি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছি। আমাদের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে হয়তো আরও পাঁচটি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার প্রয়োজন হবে। আমাদের হাজারো সমস্যা রয়েছে। অপুষ্টি, স্যানিটেশন, নিরাপদ পানি, সামাজিক সম্প্রীতি, নিরাপত্তাসহ নানা ধরনের ইস্যু আমাদের রয়েছে। অপুষ্টিজনিত যে সমস্যার কথা বলা হচ্ছে, তার জন্য অবশ্যই টাকা লাগবে। শিশুর অপুষ্টিজনিত সমস্যা দূরীকরণে আলাদাভাবে কোনো বাজেট বরাদ্দ দেওয়া যায় কিনা, পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদকে কোনো নির্দেশনা দেওয়া যায় কিনা– এসব বিষয়ে আমার অবস্থান থেকে কাজ করব।
ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেসব ক্ষেত্রে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, সেগুলোর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য প্রাধান্য পেয়েছে। এখন সেই প্রতিজ্ঞাগুলো বাস্তবায়ন করাই আমাদের কাজ। পুষ্টি বলতে আমরা যা বুঝি, তা হলো আসলে একটি সামগ্রিক জীবনযাপনের ব্যবস্থাপনা। এ বিষয়টি প্রথমত বুঝতে হবে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে, বুঝতে হবে কিশোর-কিশোরীদের, যারা বেড়ে উঠছে তাদের। সামাজিক নিরাপত্তা খাতে অনেক শক্তিশালী হাত আছে, এদের সক্ষমতার উন্নয়নও বিশেষভাবে বিবেচ্য। তবে সবকিছু একদিনে সম্ভব না। এ ক্ষেত্রে পরিকল্পনা প্রয়োজন। এ পরিকল্পনার সঙ্গে যদি ইউনিয়ন পরিষদ যুক্ত থাকে, তবে বিষয়টি স্থানীয় চাহিদার ভিত্তিতে হবে এবং কার্যক্রমটি জোরালো হবে।
আবু সাঈদ খান
মায়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, শিশুর পুষ্টি নিশ্চিত করাসহ পরিবার ও এলাকার বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে বহুমাত্রিক উদ্যোগ দরকার। উদ্যোগটা নিশ্চয়ই সরকার বিবেচনা করবে। আমরা এগিয়েছি, আরও এগোতে চাই। এ জন্য প্রয়োজন দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন। বাজেটের ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যেত, ওপর থেকেই বাজেট দেওয়া হয়। কিন্তু ইদানীং ইতিবাচক দিকও দেখা যাচ্ছে। সেগুলো হলো প্রয়োজন ও সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সরকারের কাছে দেওয়া হচ্ছে, নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে তা তুলে ধরা হচ্ছে। এখন অবরোহী নয়, আরোহী পদ্ধতিতেও স্থানীয় চাহিদাগুলো বিবেচনা করা দরকার।
ড. বদিউল আলম মজুমদার
শিশুর সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করা জাতির ভবিষ্যতের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একটি সমৃদ্ধ জাতি গঠনে পুষ্টি খাতে বিনিয়োগের কোনো বিকল্প নেই। বর্তমানে আমাদের দেশে ‘ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড’ চলছে। অর্থাৎ আমাদের জনসংখ্যার সিংহভাগ তরুণ। তরুণরা হলেন উৎপাদনকারী এবং বৃদ্ধরা ভোক্তা। সুতরাং এই ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সুবিধা নিতে হলে তরুণদের জন্য বিনিয়োগ করতে হবে। তারা যেন শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ থাকে, এটি নিশ্চিত করতে হবে। জনসংখ্যাজনিত এই সুবিধা নিতে হলে বিনিয়োগের বিকল্প নেই। আমাদের দেশে ডায়াবেটিস ও হৃদরোগসংক্রান্ত রোগী বাড়ছে। এর অন্যতম কারণ অপুষ্টি। মায়ের গর্ভে থাকাকালে সঠিক পুষ্টি না পেলে শিশুর ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এই রোগসহ অন্যান্য রোগ প্রতিরোধ করতে হলে পুষ্টির ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে একদিকে পুষ্টি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো, অন্যদিকে পুষ্টি বিষয়ে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে সচেতন করা– উভয়ই গুরুত্বসহকারে বিবেচনার অপেক্ষা রাখে।
ইঞ্জিনিয়ার ইমাম মাহমুদ রিয়াদপাঁচ বছরের নিচে শিশুর পুষ্টি উন্নয়নে যদি স্থানীয় সরকারের বাজেট বাড়ানো হয়, তাহলে এর পজেটিভ ইমপ্যাক্ট হবে দীর্ঘমেয়াদি। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ২০৪১ সালে আমরা ধনী, উন্নত ও স্মার্ট রাষ্ট্র হব। সেখানে যে উন্নত জনবল, মানুষ বা আধুনিক ও স্মার্ট মানুষ প্রয়োজন, পুষ্টির মান সেরূপ নিশ্চিত করতে না পারলে, সে প্রত্যাশা হবে সুদূরপরাহত। এখনই প্রস্তুতি নিলে ফলাফল ভালো পাব তখন। তাই পাঁচ বছরের নিচে শিশুই আমাদের প্রধান ‘অবজেকটিভ’। এ ছাড়া ‘রাইটটুগ্রো’ কর্মএলাকার ৪০টি ইউনিয়ন পরিষদে সরকার যদি শিশুর পুষ্টি বাজেট বরাদ্দ রেখে একটি পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করে, তবে পরে সে প্রকল্পের ইতিবাচক সফলতাগুলো সরকার অন্যান্য ইউনিয়ন পরিষদেও বাস্তবায়ন করতে পারবে।
এ. কে. ওসমান হারুনি‘রাইটটুগ্রো কনসোর্টিয়াম প্রকল্প’টি বাংলাদেশসহ পৃথিবীর ছয়টি দেশে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, ভালো অভিজ্ঞতাগুলো মূলধারায় নিয়ে আসা, দক্ষতা বাড়ানো এবং নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে অ্যাডভোকেসির মাধ্যমে তা পলিসিতে যুক্ত করা এবং বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নেওয়া। ভালো উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নের জন্য তৃণমূল পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করাও অত্যন্ত জরুরি। রাইটটুগ্রো কনসোর্টিয়াম প্রকল্প সেরূপ চেষ্টাই অব্যাহত রেখেছে।
ইঞ্জিনিয়ার তানিয়া শারমিনইউনিয়ন পরিষদের বাজেট বরাদ্দ হয় মূলত স্বাস্থ্য খাতে। যে খাতের বাজেট শুধু পুষ্টি খাতেই নয়, পয়ঃনিষ্কাশন, বাল্যবিয়ে বন্ধে প্রচারণা, পরিবার পরিকল্পনা উন্নয়নে ব্যয় করা হয়। অন্তঃসত্ত্বা নারীর পুষ্টি ও মনোসামাজিক বিকাশের দিকে নজর দিতে হবে। কেননা এর মাধ্যমে শিশুর মস্তিষ্কের সার্বিক গঠন নিশ্চিত করা যাবে। তাই পুষ্টির উন্নয়ন অতীব জরুরি। এজন্য আলাদাভাবে বরাদ্দ প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদকে শক্তিশালী করতে হবে। সেটি নিশ্চিত করতে ইউনিয়ন পরিষদ যদি আলাদাভাবে শিশুর পুষ্টি খাতে বাজেট বরাদ্দ রাখে, তাহলে সেটি উপজেলা বা জেলা পর্যায়ে সঠিক সমন্বয়ের মাধ্যমে বার্ষিক বাজেট প্রণয়নে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে যদি শিশুপুষ্টি খাতে ন্যূনতম ১০-২০% বাজেট বরাদ্দ রাখার জন্য ইউনিয়ন পরিষদকে নির্দেশনা দেওয়া হয়, তাহলে আমার মনে হয় সেটিই হবে শিশুর পুষ্টি উন্নয়নের জন্য সরকারের দিক থেকে আরও একটি যুগান্তকারী ঘটনা। আমি এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সবিনয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
অধ্যাপক ড. নাজমা শাহিনরাইটটুগ্রো প্রকল্পটি যেসব এলাকায় পরিচালিত হচ্ছে, সেসব এলাকার ৮০ শতাংশ কিশোরী বাল্যবিয়ের শিকার। অর্থাৎ সেখানকার প্রধান সমস্যা বাল্যবিয়ে। যেখানে মায়েরই শারীরিক বিকাশ সঠিকভাবে হয়নি, সে মায়ের গর্ভে কী করে জন্ম নেবে একটি সুস্থ শিশু? মূলত সেখান থেকেই অপুষ্টির সূত্রপাত। যদি আমাদের পুষ্টিগত উন্নতি করতে হয়, তাহলে মাল্টিসেক্টরাল অর্থাৎ পুষ্টিসংশ্লিষ্ট সব সেক্টরের (২২টি মন্ত্রণালয়) সমন্বয়ে অর্থনৈতিক কার্যক্রম বাড়াতে হবে। খাদ্য নিরাপত্তা দিতে হবে। ‘বিডিএইচএস-২০২২’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্টান্টিং আমাদের কমেছে। স্টান্টিং হলো শৈশবকালীন অপুষ্টি নির্ণয়ের জন্য ব্যবহৃত অন্যতম প্রধান পদক্ষেপ। এটি ইঙ্গিত দেয় যে শিশুর রোগ, দুর্বল স্বাস্থ্য এবং অপুষ্টির ফলে তাদের বৃদ্ধির সম্ভাবনায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়া, যেটি ক্রমান্বয়েই কমছে। কারণ হলো আমাদের ইকোনমিক গ্রোথ, ফুড প্রোডাকশন, অ্যাভেইলঅ্যাবেলিটি, অ্যাকসেসেবিলিটি, হেলথ কেয়ার ফ্যাসিলিটিস বৃদ্ধি পেয়েছে। স্টান্টিংটা হচ্ছে লং টার্ম এফেক্ট। সেক্ষেত্রে আমাদের এই হ্রাস পাওয়ার ট্রেন্ডটাই আসার কথা, যা আমরা ইতোমধ্যে দেখেছি। আর কম ওজন হচ্ছে ‘ইমিডিয়েট স্ট্যাটাস’। ইমিডিয়েট যে খাবারটা খাচ্ছি, তার ফলে বাচ্চার ওজনটা ততটুকুই হচ্ছে। এটি ২০২২ সালের ডাটা। ওই সময়টিতে করোনা এবং ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছিল। এটির একটা প্রভাব এখানে আছে। আমরা বিএনএনসি (বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদ কার্যালয়) থেকে কভিডের একটা প্রভাব বিষয়ে প্রোজেকশন করেছিলাম। আমরা তখন বলেছিলাম যে ‘ওয়াস্টিং’ বাড়বে। ঠিক তাই হয়েছে। কারণ হলো কভিডের কারণে ‘পুষ্টিসেবা’ সেভাবে কাজ করতে পারেনি। আমরা যদি আসলেই পাঁচ বছরের নিচে শিশুর অপুষ্টি দূর করতে চাই, তাহলে তার মা থেকেই শুরু করতে হবে। সমাজের প্রতিটি স্তরে সচেতনতা বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে কিশোরী থেকে অন্তঃসত্ত্বা মায়ের যে পুষ্টি দরকার, তা নিশ্চিত করতে হবে। সামাজিক নিরাপত্তা খাতেও অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের ভাতার পরিমাণ বাড়াতে হবে।
ইকবাল আজাদরাইটটুগ্রো প্রজেক্ট কনসোর্টিয়াম পাঁচ বছরের নিচের প্রতিটি শিশু যেন পূর্ণ সম্ভাবনা নিয়ে বেড়ে ওঠার সক্ষমতা লাভ করে, সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এটি একটি রাইটবেজ অ্যাডভোকেসি প্রজেক্ট, যার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো– ক) কমিউনিটির জনগণ মৌলিক সেবাসমূহের চাহিদা তুলে ধরছে, প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ করছে, পুষ্টি-মাতৃস্বাস্থ্য ও ওয়াশ কার্যক্রম-সংক্রান্ত ভালো চর্চাগুলো চলমান রাখছে এবং বেসরকারি খাতের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে যৌথভাবে বাধাগুলোর সমাধান করছে; খ) অপুষ্টি দূরীকরণের জন্য সিএসও প্রতিনিধিরা ও শক্তিশালী সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশন (সিএসও) অ্যাডভোকেসির মাধ্যমে তাদের নেতৃত্ব ও স্থানীয় পর্যায়ে সুশাসন নিশ্চিত করছে; গ) সিএসওদের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে অপুষ্টি প্রতিরোধে সরকারের বিভিন্ন স্তরে বহুপক্ষীয় অংশীজনদের সহায়তায় সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়ন, নীতিনির্ধারণ ও বাজেট বরাদ্দ করছে; ঘ) দাতা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা মানবিক উন্নয়নের নেক্সাসের সঙ্গে সমন্বয় ও সহযোগিতার মাধ্যমে অপুষ্টির অন্তর্নিহিত কারণগুলো নির্ধারণে কাজ করছে।
প্রকল্পটি স্থানীয় অধিবাসী ও সুশীল সমাজ সংগঠনের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও সব স্তরের প্রতিনিধির জবাবদিহি বাড়াতে সহায়তা করছে। এটি নেদারল্যান্ডস সরকারের অর্থায়নে বাস্তবায়িত ছয়টি আন্তর্জাতিক সংস্থার (অ্যাকশন অ্যাগেইনস্ট হাঙ্গার, সিগা, ম্যাক্স ফাউন্ডেশন, সেভ দ্য চিলড্রেন, দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট ও ওয়ার্ল্ড ভিশন) মধ্যে একটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব। এই প্রকল্প শুরু হয়েছে ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে এবং শেষ হবে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর মাসে।
রাইটটুগ্রো বাংলাদেশ কনসোর্টিয়াম প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকারের এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা ২, ৫, ৬, ১৩ এবং অষ্টম জাতীয় পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়তা করছে। রাইটটুগ্রো কর্মএলাকায় ইউনিয়ন পরিষদ ও সিভিল সোসাইটি প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সংশ্লিষ্ট পাবলিক-প্রাইভেট স্টেকহোল্ডারদের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে পুষ্টি, মাতৃস্বাস্থ্য ও ওয়াশ-সংক্রান্ত স্থানীয় সার্ভিস সিস্টেমের অধিকতর সক্রিয় করছে। এরই ধারাবাহিকতায় ইউনিয়ন পরিষদগুলো স্থানীয় চাহিদার ভিত্তিতে নিজস্ব উদ্যোগে শিশুর পুষ্টি ও ওয়াশ-সংক্রান্ত বিষয়ে বাজেট বরাদ্দ করছে ও নির্দিষ্ট খাতে বাস্তবায়ন করছে। এই প্রকল্পের আওতাধীন ইউনিয়ন পরিষদগুলো ডিজিটাল পদ্ধতিতে তাদের বাজেট প্রণয়ন, বাজেট মনিটরিং, এক্সপেন্ডিচার ট্র্যাক করছে। এ ছাড়া স্থানীয় সুশীল সমাজের সংগঠনগুলো এলাকায় পাঁচ বছরের নিচে শিশু আছে– এমন অসহায়-দরিদ্র পরিবারের তথ্য ইউনিয়ন পরিষদকে দিচ্ছে, যার ফলে ইউনিয়ন পরিষদগুলো সঠিক উপকারভোগী নির্বাচন ও সরকারি সেবা প্রদানে উদ্যোগ নিতে পারছে। কিন্তু এ সহায়তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এজন্য আজকের শিশু আগামী দিনের সম্পদ মনে করে, তাদের সঠিক পুষ্টির আওতায় আনতে পারলে তারা দেশের সম্পদ হিসেবে অবদান রাখতে পারবে; অন্যথায় নিজের পরিবার ও দেশের প্রয়োজনে অবদানের পরিবর্তে বোঝা হিসেবে পরিগণিত হবে। আজকের সভায় উত্থাপিত শিশুর পুষ্টিসংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত এ বিষয়টিই নির্দেশ করে যে এখনই সময় বহুখাতভিত্তিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও শিশুর পুষ্টির জন্য ইউনিয়ন পরিষদে বাজেট রাখা।
সাইকা সিরাজপুষ্টি নিশ্চিতকরণে ইউনিয়ন পরিষদকে যা করতে হবে, সে বিষয়গুলো জানতে হবে এবং শিশুর পুষ্টি নিশ্চিতকরণে সাপোর্ট দিতে হবে। এটি আমাদের তরফ থেকে প্রথম পরামর্শ। দ্বিতীয় পরামর্শ হচ্ছে– একটি আলোচনা বারবার আসছে, ‘ওয়েস্টিং’ আর ‘আন্ডার ওয়েট’ কিন্তু বেড়ে যাচ্ছে। কারণ এটি তাৎক্ষণিকভাবে হয়। এটি ম্যালনিউট্রেশনের লং টার্ম ইমপ্যাক্ট না। কখন হয়, কেন হয়? যখন র্যাপিটেডলি ডায়রিয়া হয়, যখন বন্যা হয়, খাদ্যের কোনো অভাব দেখা দেয়; তখন কিন্তু এগুলো হয়। যখন কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয় এবং সম্পূর্ণ বন্যাপীড়িত দুর্গত এলাকায় পরিণত হয়; তখন ত্রাণ হিসেবে খাবার দেওয়া হয়। সেখানে কিন্তু ন্যাশনাল নিউট্রেশন কাউন্সিলের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্টভাবে তিনটি প্যাকেজের কথা বলা আছে। যেমন: শিশুর জন্য কী হবে, বড়দের জন্য কী হবে এবং বিভিন্ন আপৎকালীন ও শেল্টারে কী হবে ইত্যাদি। কিন্তু এটি যতটা কাগজে আছে, ততটা স্বচ্ছভাবে আসলে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের কাছে গেল কিনা, তাঁরা জানেন কিনা– এটি দেখতে হবে। কারণ এটিও পুষ্টি খাতে প্রভাব ফেলে। এ বাজেট কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদেই থাকে। এটি পুষ্টি খাতের বাজেট। ওয়াশের ক্ষেত্রে ২% বরাদ্দের কথাও বলা আছে। এখানে প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সামাজিক নিরাপত্তা খাতে একটি ভালো প্রোগ্রাম হচ্ছে– ‘ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট প্রোগ্রাম’। নিউট্রেশন ইন্টারন্যাশনালের সাপোর্টে এ প্রোগ্রামের আওতায় অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের যে চাল দেওয়া হচ্ছে, এটিকে ফরটিফাই করা হয়। ৬টি ভিটামিন ও খনিজ উপাদান যুক্ত করে দেওয়া হয়। সারাদেশের ৬০ ভাগ উপজেলাতে এ প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আশা রাখি, অদূর ভবিষ্যতে সব উপজেলাতেই এ প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করা হবে।
ইঞ্জিনিয়ার মীর আব্দুস সাহিদ
আমাদের সন্তানরা আগামীর ভবিষ্যৎ। জন্মের পর থেকে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত বাচ্চাদের পুষ্টি নিশ্চিতকরণে আমাদের কাজ করে যেতে হবে। কেননা, এই সময়ের মধ্যে শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ হয়। শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকে নয়; বরং শিশু মাতৃগর্ভে থাকাবস্থাতেই শিশুর পরিচর্যা করা দরকার। তবে শিশুর অপুষ্টিজনিত সমস্যায় ভোগার অন্যতম কারণ বাল্যবিয়ে। এ বিষয়ে বর্তমান সরকার অনেক আন্তরিকতার সঙ্গে প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। এ বিষয়ে অনেক পরিকল্পনাও রয়েছে। তথাপিও আমরা বাল্যবিয়ে সমূলে বন্ধ করতে পারিনি। সে কারণে এখনও ১৮ বছরের নিচের একটি মেয়ে সন্তান প্রসব করে এবং প্রসবের পর থেকেই ওই শিশু অপুষ্টিতে ভোগে; যা পরে পরিচর্যা করে কমানো সম্ভব নয়। সুতরাং শিশুর আগে আমাদের মায়ের পরিচর্যা করতে হবে। এ ছাড়া অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানের ক্ষেত্রে অনেকের অনীহা থাকে। অথচ মাতৃদুগ্ধ শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এই বিষয়ে নজর দিতে না পারলে শিশুপুষ্টির বিষয়ে আমরা এগোতে পারব না। জন্মের প্রথম ছয় মাস বুকের দুধ ছাড়া অন্য কিছুর প্রয়োজন হয় না। ছয় মাস পর থেকে শিশুকে পুষ্টিকর শক্ত খাবার ও পানি খাওয়াতে হবে। একটি শিশু জন্মানোর পরে যেহেতু সম্পূর্ণভাবে মায়ের ওপর নির্ভরশীল থাকে, সেহেতু বাড়ির সবার বিশেষ করে মা ও শিশুর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং নিরাপদ পানির বিষয়ে অধিকতর যত্নবান হতে হবে। এজন্য সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন আয়োজনে আমাদের মনোনিবেশ করতে হবে।
মোহাম্মদ হাফিজুল ইসলাম
সংবিধানে নাগরিকদের পুষ্টির উন্নয়নকে রাষ্ট্রের প্রাথমিক কর্তব্য হিসেবে নির্ধারণ করা আছে। জাতীয় শিশুনীতি ২০১১ হলো বাংলাদেশে শিশু অধিকার বাস্তবায়নের একটি অন্যতম আইনি উপকরণ। শিশুর সুরক্ষা ও তাদের জীবন বিকাশে সরকার এই নীতিমালাটি প্রণয়ন করেছে। এই নীতিমালার বেশ কয়েকটি স্থানে শিশুর পুষ্টি উন্নয়নের কথা বলা আছে। এমনকি শিশুর প্রয়োজনীয় খাদ্য নিশ্চয়তার কথাও বলা আছে। অথচ ঠাকুরগাঁও ও কুড়িগ্রামে আমার দুটি ফুটবল টিমের কিশোরীদের দেখি, তারা কতটা অপুষ্টিকর পরিবেশের মধ্য দিয়ে এতদূর এগিয়ে এসেছে। ফুটবল শক্তির খেলা, প্রয়োজনীয় শক্তি দরকার। তাই এই মেয়েশিশুদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য নিশ্চয়তা ও পুষ্টি দরকার। সে কারণে সব স্তরের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহ থেকে পুষ্টি নিশ্চিতকরণে বাজেট বরাদ্দ করার বিশেষ প্রয়োজন আছে। এজন্য মনিটরিং/পরিবীক্ষণ কার্যক্রম বাড়াতে হবে।
ড. জুবাইদা নাসরীন
মা, শিশু ও কিশোরীদের বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ‘জাতীয় পুষ্টিনীতি ২০১৫’ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই নীতিমালাটিকে যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। জাতীয় পুষ্টিনীতি মোট ২২টি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে তাদের নিজ নিজ বাজেট নিয়ে একটি ‘বার্ষিক পুষ্টি পরিকল্পনা’ করতে হয়। জাতীয় পুষ্টি পরিষদ ২৫টি ইনডিকেটর নিয়ে কাজ করছে। এগুলোর সাব অ্যাক্টিভিটি রয়েছে। আমরা এসব পরিকল্পনা গ্রহণে ইতোমধ্যে ৩০ থেকে ৩৫টি জেলায় প্রশিক্ষণ প্রদান করেছি। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ‘ডিসট্রিক্ট নিউট্রেশন কো-অর্ডিনেশন কমিটি (ডিএনসিসি) ও উপজেলা নিউট্রেশন কো-অর্ডিনেশন কমিটি (ইউএনসিসি) কাজ করছে। মূলত তারাই বাস্তবায়ন করবে। এই দুই কমিটির মাধ্যমে ২২টি মন্ত্রণালয়ের ‘ওয়ার্ক প্ল্যান’ উঠে আসবে। এই যে বলা হচ্ছে– ইউনিয়ন পরিষদে বাজেট কেমন হবে? যেহেতু পরিকল্পনা ডিএনসিসি ও ইউএনসিসি করবে, সেহেতু তাদের পরিকল্পনা ও সাব অ্যাক্টিভিটি অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদ বাজেট বরাদ্দ রাখতে পারে। এদিকে নজর দিলে পুষ্টি খাতে বাজেট বাড়ানো সম্ভব।
মো. তাওফীকুল ইসলাম
পুষ্টির উন্নয়ন নিয়ে সরকারের যে প্রায়োরিটি বা চিন্তা সেটি প্রতিফলিত হয়েছে ‘সেকেন্ড ন্যাশনাল প্ল্যান অব অ্যাকশন ফর নিউট্রিশন (২০১৬-২৫)’তে। পুষ্টি উন্নয়নে এই দ্বিতীয় জাতীয় পরিকল্পনাকে গতিশীল করতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তথা এ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ইউনিয়ন পরিষদের বড় ভূমিকা রয়েছে। সার্বিকভাবে জনগণের পুষ্টির স্তর উন্নয়নের জন্য সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এই পরিষদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রতিষ্ঠানটি জনগণের দোরগোড়ায় থেকে কাজ করে, যার জনপ্রিয়তা অনেক বেশি এবং এটি একটি প্রাচীনতম টেকসই প্রতিষ্ঠান। ইউনিয়ন পরিষদকে আরও কীভাবে সম্পৃক্ত করলে জনগণের তথা শিশুর পুষ্টি উন্নয়নের মতো কমপ্লেক্স কাজটা সহজ হবে সেটি খুঁজে বের করতে হবে। সেজন্যই আজকে আমরা সব সেক্টরের (মাল্টিসেক্টরাল) প্রতিনিধিকে একত্র করেছি। সবার মতামতের ওপর ভিত্তি করে যেন সমগ্র বাংলাদেশের, বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলের শিশুদের অপুষ্টি দূরীকরণে কেমন নীতি প্রণয়ন করা দরকার, বিশেষ করে ইউনিয়ন পরিষদকে কীভাবে সম্পৃক্ত করা যাবে– সেসব বিষয়ে আলোচনা করা হবে।
ইউনিয়ন পরিষদ যেহেতু প্রতি বছরই উন্নয়ন খাতে বাজেট রাখে, বাস্তবায়ন করে, বাজেট পরিবীক্ষণ করে এবং প্রয়োজনে রিভিউ করে– সেজন্যই ইউনিয়ন পরিষদের এই সুযোগকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে। প্রয়োজনে শিশুর পুষ্টিসংশ্লিষ্ট বিষয়ে বাজেট রাখা, বাস্তবায়ন করা, মনিটরিংয়ের ওপর তাদের দক্ষতার উন্নয়ন করতে এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে সহযোগিতামূলক নির্দেশনা দিতে হবে।
মোহাম্মদ জোবায়ের হাসান
আমাদের বাজেট কীভাবে বরাদ্দ হওয়া উচিত? একটি ‘ইকুইটেবল বাজেট অ্যালোকেশন’ করা সম্ভব কিনা? নাকি স্থানভেদে বাজেট একেক রকম হবে?– এটি আমাদের নির্ধারণ করতে হবে যে, কোথায় কাদের কতটা দিতে হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন করতে সবার জন্য পুষ্টি, সবার জন্য স্যানিটেশন নিশ্চিত করতে হবে। এটি একটি কঠিন সত্য। সবার জন্য করতে হলে জনপ্রতি বাজেট নিশ্চিত করতে হবে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আমরা জনপ্রতি বাজেট নির্ধারণ করতে না পারলে, সামাজিক যেসব সমস্যা শিশুর অপুষ্টির জন্য দায়ী, সেই সমস্যার সমাধান হবে না। একইসঙ্গে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের রাজস্ব আয় বাড়ানো উচিত। কারণ শুধু উন্নয়ন বাজেট দিয়ে টেকসই উন্নয়ন করা কঠিন হবে।
শেখ হেলাল উদ্দিন
নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে জনচাহিদার ভিত্তিতে বাজেট প্রণয়ন করে যাচ্ছি। আটলিয়া ইউনিয়নে ৪টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। সেখানে ওজন মাপার মেশিনও ছিল না। পরবর্তী সময়ে রাইটটুগ্রো প্রকল্পের মাধ্যমে ১৮টি দলে ৪৫টি উঠান বৈঠক হলে মায়েরাই আমাদের কাছে ওজন মাপার মেশিনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। এ ক্ষেত্রে গ্রাম উন্নয়ন দলের ৪৪৭ কর্মীর অবদান রয়েছে। পুষ্টির উন্নয়নের জন্য তিনি ইউনিয়ন পরিষদে আলাদা বাজেট বরাদ্দের দাবি জানান।
মো. মাসুম মৃধা
রাইটটুগ্রো প্রকল্পের সঙ্গে দুই বছর ধরে সম্পৃক্ত। আমার ইউনিয়নে পুষ্টি বিষয়ে তেমন বাজেট নেই। অথচ আজ যারা শিশু, তারাই ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তাই শিশুর পুষ্টি নিশ্চিত করতে কেন্দ্র থেকে বাড়তি বাজেট বরাদ্দ প্রয়োজন।
মো. শফিকুল ইসলাম
রাইটটুগ্রো প্রজেক্টে একটি ডিজিটাল বাজেট অ্যাপস করা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদই আলাদাভাবে ডিজিটালি বাজেট প্রণয়ন করেছে এবং ইউনিয়ন পরিষদের বাজেট কিন্তু ন্যাশনালি কমপাইল করা হয় না। তাই জাতীয় পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদের বাজেট কমপাইল করার জন্য ডিজিটাল বাজেট খুবই জরুরি এবং এটা আইবাসেও (iBAS++) আসে না। এ জন্য যদি এ দুটি কাজ করা যায় যে, সারাদেশে ডিজিটাল বাজেট হবে এবং আইবাসেও অন্তর্ভুক্ত হবে; তাহলেই আমরা দেখতে পাব ইউনিয়ন পরিষদে কত টাকা বরাদ্দ হচ্ছে এবং কোন খাতে ব্যবহার করা হবে।
প্রধান অতিথি
মো. তাজুল ইসলাম
মন্ত্রী, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও
সমবায় মন্ত্রণালয়
সভাপতি ও সঞ্চালনা
আবু সাঈদ খান
উপদেষ্টা সম্পাদক, সমকাল
বিশেষ অতিথি
ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর
মহাপরিচালক
বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদ কার্যালয়
ড. বদিউল আলম মজুমদার
কান্ট্রি ডিরেক্টর, দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট
ইঞ্জিনিয়ার ইমাম মাহমুদ রিয়াদ
চেয়ারপারসন, কান্ট্রি স্টিয়ারিং কমিটি, রাইটটুগ্রো প্রজেক্ট কনসোর্টিয়াম বাংলাদেশ
কান্ট্রি ডিরেক্টর, ম্যাক্স ফাউন্ডেশন
এ. কে. ওসমান হারুনি
সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজার, ফুড সিকিউরিটি অ্যান্ড এগ্রিকালচার, এমবাসি অব কিংডম অব দ্য নেদারল্যান্ডস-ঢাকা
ইঞ্জিনিয়ার তানিয়া শারমিন
ডিরেক্টর-ফুড সিকিউরিটি অ্যান্ড লাইভলিহুড
সেভ দ্য চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনাল
অধ্যাপক ড. নাজমা শাহিন
ইনস্টিটিউট অব ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন সিকিউরিটি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ইকবাল আজাদ
টিম লিড
রাইটটুগ্রো প্রজেক্ট কনসোর্টিয়াম বাংলাদেশ
সাইকা সিরাজ
কান্ট্রি ডিরেক্টর, নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনাল
ইঞ্জিনিয়ার মীর আব্দুস সাহিদ
অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী
পানিসম্পদ বিভাগ, ডিপিএইচই
মোহাম্মদ হাফিজুল ইসলাম
সিনিয়র টেকনিক্যাল কো-অর্ডিনেটর-ভ্যাকসিনেশন, কেয়ার বাংলাদেশ
ড. জুবাইদা নাসরীন
পরিচালক
বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদ কার্যালয়
মো. তাওফীকুল ইসলাম
ম্যানেজার-রাইটটুগ্রো
সেভ দ্য চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনাল
মোহাম্মদ জোবায়ের হাসান
ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর, ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দ্য রুরাল প্যুর (ডরপ)
শেখ হেলাল উদ্দিন
চেয়ারম্যান
আটলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ, ডুমুরিয়া, খুলনা
মো. মাসুম মৃধা
চেয়ারম্যান, মরিচবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ, পটুয়াখালী সদর
মো. শফিকুল ইসলাম
প্রেসিডেন্ট, এইচএলপিএফ ফাউন্ডেশন
অনুলিখন
সাজিদা ইসলাম পারুল
নিজস্ব প্রতিবেদক, সমকাল
সমন্বয়
হাসান জাকির
হেড অব ইভেন্টস, সমকাল
মন্তব্য করুন