- বিশেষ আয়োজন
- যেসব ব্যবসায়ী অন্যায় করবেন আমরা তাঁদের পাশে নেই
সাক্ষাৎকার
যেসব ব্যবসায়ী অন্যায় করবেন আমরা তাঁদের পাশে নেই

মাহবুবুল আলম, প্রেসিডেন্ট, চিটাগং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি
সমকাল: পর্যাপ্ত আমদানির পরও বাড়ছে মসলার দাম। ব্যবসায়ী নেতা হিসেবে বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন?
মাহবুবুল আলম: আমদানি ও সরবরাহ ব্যবস্থা যদি ঠিক থাকে, তাহলে দাম বাড়ার যৌক্তিক কারণ কম। অবশ্য বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম ও দেশে আসার খরচসহ আনুষঙ্গিক সব বিষয় আনতে হবে। অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়ানোর সুযোগ দেওয়া কোনোভাবেই উচিত হবে না। মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা হলে বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে।
সমকাল: চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান হয়েছে। ঢাকার মৌলভীবাজারে এমন অভিযান দেখা যায় না কেন?
মাহবুবুল আলম: এ প্রশ্নের উত্তর ভালো দিতে পারবেন প্রশাসনের লোকজন। খাতুনগঞ্জের মতো ঢাকার মৌলভীবাজারও অনেক বড় বাজার। এখানে যদি অভিযান চলতে পারে, সেখানে
কেন নয়! আমদানিকারকদের তথ্য বিশ্লেষণ করলে আপনি দেখবেন বেশিরভাগ বড় আমদানিকারক ঢাকার। তারপরও সব নজর খাতুনগঞ্জের দিকে থাকে।
সমকাল: মসলার বাজার দীর্ঘদিন ধরে আমদানিনির্ভর। আমরা কেন উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারছি না?
মাহবুবুল আলম: প্রতি বছর দেশে মসলার চাহিদা থাকে ৩৫ লাখ টনেরও বেশি। এর মধ্যে ১৪ লাখ টন মসলার চাহিদা পূরণ করা হয় আমদানির মাধ্যমে। ৪০ থেকে ৪২ শতাংশ মসলার চাহিদা পূরণ করা হয় আমদানির মাধ্যমে। বাংলাদেশে মসলার বাজার প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার। উৎপাদন ঘাটতি মেটাতে নজর আছে সরকারের। চাষের আওতায় আসা জমির পরিমাণ আগের তুলনায় বেড়েছে। কৃষক যদি ন্যায্য দাম পান এবং তাঁর উৎপাদিত পণ্য সংরক্ষণ করতে পারেন, তাহলে মসলা চাষেও বাংলাদেশের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। মসলা উৎপাদন বাড়াতে কাজ করছে সরকার। সরকারের সহায়তা পেলে আরও সম্প্রসারিত হবে মসলা চাষের জমি।
সমকাল: ঈদের সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে আপনিও ছিলেন ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে। আপনার অভিজ্ঞতা জানতে চাই।
মাহবুবুল আলম: চট্টগ্রামের বড় কয়েকটি অভিযানে ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে চেম্বার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ছিলাম আমিও। এর মাধ্যমে আমি অসাধু ব্যবসায়ীদের একটি বার্তা দিতে চেয়েছি। যাঁরা ভালো ব্যবসায়ী, নীতিনৈতিকতার সঙ্গে থাকবেন, আমরা তাঁদের পাশে আছি। কিন্তু যাঁরা ব্যবসার নামে অতি মুনাফার হাট বসাবেন, অন্যায় করবেন– তাঁদের পাশে আমরা নেই। এই সত্যটুকু ব্যবসায়ীদের মাঝে পৌঁছে দিতেই অভিযানে ছিলাম আমিও। সরকার নানাভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। ব্যবসায়ীদের নানা রকম সুবিধাও দিচ্ছে। তারপরও কেন অতি মুনাফার প্রবণতা দূর করতে পারবেন না তাঁরা। সব ব্যবসায়ী খারাপ নন। কিন্তু অসাধু কিছু ব্যবসায়ীর কারণে সব ব্যবসায়ীর বদনাম হয়।
সমকাল: ভোগ্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে আপনার পরামর্শ কী?
মাহবুবুল আলম: বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে পণ্য আমদানির সুযোগ উন্মুক্ত রাখতে হবে। ডলারের অভাবে যাতে এলসি সংকট তৈরি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বাজার অস্থির করতে কেউ মনোপলি করছে কিনা, সেদিকে নজর রাখতে হবে। সরবরাহ ও চাহিদার মধ্যে যাতে দূরত্ব তৈরি না হয়, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে। কেউ যদি ইচ্ছা করে বাজার অস্থির করে, তাঁকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ারও পক্ষে আমি।
মন্তব্য করুন